Thank you for trying Sticky AMP!!

পাকিস্তান থেকে সরে যাচ্ছে আল-কায়েদা?

Al Qaeda 1

অনেক দিন ধরেই আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী সংগঠন আল-কায়েদার যাবতীয় কর্মকাণ্ড পাকিস্তান ও আফগানিস্তানকেন্দ্রিক, বিশেষ করে পাকিস্তানে শক্ত শিকড় গাড়ে তারা। ২০১১ সালের ২ মে পাকিস্তানের অ্যাবোটাবাদে মার্কিন বিশেষ বাহিনীর অভিযানে সংগঠনটির শীর্ষ নেতা ওসামা বিন লাদেন নিহত হওয়ার পর বিষয়টি বেশ স্পষ্ট।
হালে তাদের তত্পরতা দেখা যাচ্ছে ইয়েমেনের মতো পোড় খাওয়া দেশে। ইদানীং ঘন ঘন তাদের সন্ত্রাসী হামলা এবং নিরাপত্তাবিষয়ক হুমকির খবরে প্রেক্ষাপট থাকছে ইয়েমেন। এতে বিশ্লেষকেরা অনেকে মনে করছেন, দক্ষিণ এশিয়ার এ দেশ দুটি থেকে পাততাড়ি গুটিয়ে অন্যত্র থিতু হওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে আল-কায়েদা।
এ মাসেই আল-কায়েদার ২৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। এ সময় তারা নতুন করে সংগঠিত হওয়ার কথা ভাববে বলে মনে করছেন অভিজ্ঞজনেরা।
মার্কিন অভিযানে আল-কায়েদার শীর্ষ নেতা ওসামা বিন লাদেন নিহত হওয়ায় সংগঠনটি দুর্বল হয়ে পড়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে অনেক বিশ্লেষকের মতে, আল-কায়েদা এখন আরও ডালপালা ছড়িয়েছে। তাদের অবস্থান ও তত্পরতা আভাস দিচ্ছে, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের বদলে কেবল  ইয়েমেনে নয়, অন্যান্য দেশের জঙ্গি সংগঠনগুলোর সঙ্গেও তাদের যোগসূত্র বাড়ছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা সম্প্রতি এ কথা বলে সতর্ক করেছেন, আল-কায়েদা ইয়েমেনের বিভিন্ন এলাকা নিয়ন্ত্রণ করছে। মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকায় যুক্তরাষ্ট্রের ১৯টি কূটনৈতিক মিশন বন্ধ করে দেওয়ার পর ওবামা সবাইকে সতর্ক করেন। আল-কায়েদার সম্ভাব্য হামলার ব্যাপারে গোয়েন্দা তথ্য পাওয়ার পর এসব কূটনৈতিক মিশন সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়।

গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর দেওয়া তথ্য অনুসারে, আল-কায়েদার শীর্ষ নেতা আয়মান আল জাওয়াহিরির সঙ্গে আল-কায়েদা ইন দ্য অ্যারাবিয়ান পেনিনস্যুলার (একিউএপি) প্রধান নাসের আল উহাইশির যোগাযোগ বাড়ছে।

২০১১ সালে পাকিস্তানের অ্যাবোটাবাদে মার্কিন বাহিনী বিশেষ অভিযান চালায়। সেই অভিযানে আল-কায়েদার শীর্ষ নেতা ওসামা বিন লাদেন নিহত হন। এরপর থেকে জাওয়াহিরি আল-কায়েদার নেতৃত্ব দিচ্ছেন। জাওয়াহিরি এখন আফগানিস্তানের সীমান্তবর্তী অঞ্চলে অবস্থান করছেন বলে যুক্তরাষ্ট্রের ধারণা।

ইসলামপন্থী দলবিষয়ক বিশেষজ্ঞ রহিমউল্লাহ ইউসুফজাই বলেন, ১৯৮৮ সালে পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের পেশোয়ারে আল-কায়েদার তত্পরতা শুরু হয়। আল-কায়েদা এখনো বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রবিন্দুতে এবং তাদের তত্পরতা চলছে।

ইউসুফজাই বলেন, শক্তি, ক্ষমতা ও কার্যকারিতা দেখে মনে হচ্ছে আল-কায়েদার কর্মকাণ্ড এখন আর পাকিস্তান ও আফগানিস্তানে নেই। সন্ত্রাসী সংগঠনটির বেশির ভাগ সদস্য অন্যত্র ছড়িয়ে পড়েছেন। কেবলমাত্র জাওয়াহিরির পরিকল্পনামতো তারা চলছেন না।

পাকিস্তানের নিরাপত্তাবিষয়ক বিশ্লেষক ও লেখক ইমতিয়াজ গুল বলেন, আল-কায়েদা এখন আর শুধু কেন্দ্রীয় পর্যায়ে নয়, বরং আঞ্চলিকভাবে সুসংগঠিত হচ্ছে। বিভিন্ন অঞ্চলে আঞ্চলিক নেতারা আল-কায়েদা পরিচালনা করছেন। এ ক্ষেত্রে জাওয়াহিরি অনুপ্রেরণা জোগাচ্ছেন। আল-কায়েদার এখন ওসামা বিন লাদেনের মতো বিস্ময়কর নেতৃত্ব দরকার নেই, বরং তারা এখন বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে টিকে থাকার চেষ্টা করছে।

সম্প্রতি ইয়েমেনের দুটি শহর ও তেল রপ্তানির টারমিনালে হামলার পরিকল্পনা থেকে স্পষ্ট বোঝা যায়, আল-কায়েদার ওপর একিউএপির যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে। এমনও মনে করা হচ্ছে যে জাওয়াহিরির পরে আল-কায়েদার দ্বিতীয় শীর্ষ নেতা  হতে পারেন একিউএপির প্রধান নাসের আল উহাইশি।

ওয়াশিংটনভিত্তিক ফাউন্ডেশন ফর ডিফেন্স অফ ডেমোক্রেসিসের সদস্য ডেভিড গার্টেনস্টেইন রস বলেন, নাসের আল উহাইশিকে আল-কায়েদার মহাব্যবস্থাপক করা থেকে এটা স্পষ্ট যে তাদের কর্মকাণ্ড এখন কেবলমাত্র পাকিস্তান বা আফগানিস্তানে সীমাবদ্ধ নেই; বরং বিস্তৃত হচ্ছে। এটি এখন একিউএপির অংশ হিসেবে কাজ করছে। এটাও স্পষ্ট যে  আল-কায়েদা এখন ইয়েমেনে ঘাঁটি বসাচ্ছে। ডন অনলাইন।