Thank you for trying Sticky AMP!!

ফেসবুক-গুগল থেকে বিজ্ঞাপন প্রত্যাহার নিউজিল্যান্ডের ব্র্যান্ডগুলোর

মসজিদে হামলা ও সেই হামলা সরাসরি সম্প্রচারের প্রতিবাদে ফেসবুক ও গুগল থেকে বিজ্ঞাপন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে নিউজিল্যান্ডের বড় কয়েকটি ব্র্যান্ড। এএসবি ব্যাংক, লোটো এনজেড, বার্গার কিং, স্পার্কসহ আরও কয়েকটি কোম্পানি এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

নিউজিল্যান্ড হেরাল্ডের বরাত দিয়ে আইএএনএস ও এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, গত শুক্রবার হামলার পর ওই দিন বিকেল থেকেই ফেসবুক ও গুগল থেকে ডিজিটাল বিজ্ঞাপন স্থগিত করেছে এএসবি, লোটো, বার্গার কিং, স্পার্কসহ কয়েকটি কোম্পানি। হামলা সরাসরি সম্প্রচার হওয়ার কারণে যে মানসিক ক্ষতি হয়েছে, তার বিরুদ্ধে একত্র হয়ে অবস্থান নিয়েছে কোম্পানিগুলো। এসব কোম্পানির বিপণন ব্যবস্থাপকেরা এ জন্য কথা বলেছেন। তাঁরা আলোচনা করেছেন কীভাবে তাঁদের ব্যবসায়/শিল্পে পরিবর্তন আনা যায়। বিজ্ঞাপনের বিষয়ে কী সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়, তা নিয়ে কথা বলেছেন তাঁরা।

ফেসবুক ও গুগল থেকে এসব কোম্পানি তাদের ডিজিটাল বিজ্ঞাপনগুলো কত দিনের জন্য প্রত্যাহার করে নেবে, নাকি একেবারেই বাতিল করে দেবে, ব্যাপারটি এখনই পরিষ্কার নয়।

ফেসবুক ও গুগল থেকে ডিজিটাল বিজ্ঞাপন প্রত্যাহার বা স্থগিতের ঘটনা এটাই প্রথম নয় নিউজিল্যান্ডে। শিশুদের ওপর যৌন নির্যাতনসংক্রান্ত একটি ভিডিও ইউটিউবে প্রচার করা নিয়ে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছিল। এ জন্য কয়েক সপ্তাহ আগে ইউটিউব থেকে নিজেদের সব বিজ্ঞাপন প্রত্যাহার করে নেয় স্পার্ক কোম্পানি।

কয়েক বছর আগে দেখা যায়, নিউজিল্যান্ডের অনেক ব্র্যান্ড তাদের বিজ্ঞাপন বন্ধ করে দেয়। এর কারণ, তারা দেখতে পায়, তাদের বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে উগ্রপন্থী কনটেন্টের সঙ্গে।

এ অবস্থায় সোমবার নিউজিল্যান্ডের শিল্পসংক্রান্ত সংস্থা অ্যাসোসিয়েশন অব নিউজিল্যান্ড এডভারটাইজারস (এএনজেডএ) এবং কমার্শিয়াল কমিউনিকেশনস কাউন্সিল যৌথভাবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোর প্রতি আহ্বান জানায়, তারা যেন নিশ্চিত করে কোনো ভয়াবহ ঘটনা যেন আর সরাসরি সম্প্রচার করা না হয়।

এনএনজেডএর প্রধান নির্বাহী লিন্ডসে মোউয়াত বলেছেন, নিউজিল্যান্ডের কোম্পানিগুলোর বিবেচনা করা দরকার, তারা কোথায় তাদের বিজ্ঞাপনের অর্থ ব্যয় করবে।

গতকাল রোববার নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আরডান ফেসবুকের কাছে জানতে চান যে, কীভাবে লাইভ করে বন্দুকধারী সন্ত্রাসী মসজিদে রক্তক্ষয়ী হামলা চালাল?

এদিকে নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে মসজিদে সন্ত্রাসী হামলার ছড়িয়ে পড়া ভিডিও সরিয়ে ফেলতে কাজ করছে ফেসবুক। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ১৫ লাখ ভিডিও সরিয়ে ফেলা হয়েছে বলে জানিয়েছে ফেসবুক। এ ছাড়া ফেসবুক তাদের প্ল্যাটফর্ম থেকে ওই ঘটনার ভিডিও পুরোপুরি সরিয়ে ফেলতে কাজ করে চলছে। গতকাল রোববার টুইটারে প্রকাশিত বিবৃতিতে ফেসবুকের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, শুক্রবার ক্রাইস্টচার্চে মসজিদে হামলার ঘটনার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বিশ্বব্যাপী ১৫ লাখ ভিডিও তারা সরিয়ে ফেলেছে।

ফেসবুক নিউজিল্যান্ডের কর্মকর্তা মিয়া গারলিক বলেছেন, ‘আমরা প্রযুক্তি ও মানুষের সাহায্য নিয়ে ওই ভিডিও সরিয়ে ফেলতে প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছি।’ ফেসবুক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ভিডিও মুছে দেওয়া ছাড়াও তারা আপলোডে বাধা দিচ্ছে। ২৪ ঘণ্টায় প্রায় ১২ লাখ ভিডিও আপলোড বাধা দেওয়া হয়েছে।

ফেসবুক, ইউটিউব ও টুইটার কর্তৃপক্ষকে সহিংস ভিডিও ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

ফেসবুকে ক্রাইস্টচার্চে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার ভিডিও সরাসরি সম্প্রচারের পর থেকে অনলাইনে তা ব্যাপকভাবে শেয়ার হয়।

হামলার ভিডিও নিয়ে নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভিডিও সরিয়ে ফেলার বিষয়টি অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলোর দায়িত্ব। তিনি বলেন, ‘বিষয়টি নিউজিল্যান্ডের আওতার বাইরে হলেও এই সমস্যা সমাধানে আমরা সক্রিয় ভূমিকা রাখতে পারব না, তা নয়।’ বিষয়টি নিয়ে ফেসবুকের প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা শেরিল স্যান্ডবার্গের সঙ্গে সরাসরি কথা বলেছেন বলেও জানান নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী।

স্থানীয় সময় গত শুক্রবার বেলা দেড়টার দিকে ক্রাইস্টচার্চে আল নুর মসজিদে জুমার নামাজ আদায়রত মুসল্লিদের ওপর প্রথমে সন্ত্রাসী হামলা হয়। কিছু পরে লিনউড মসজিদে দ্বিতীয় হামলা হয়। দুটি মসজিদে হামলায় ৫০ জন নিহত হন। আহত হন প্রায় ৫০ জন।

আল নুর মসজিদে স্বয়ংক্রিয় রাইফেল নিয়ে হামলার ঘটনাটি ফেসবুকে লাইভস্ট্রিম করেন হামলাকারী ব্রেনটন হ্যারিসন টারান্ট। আল নুর মসজিদে আনুমানিক ৩০০ এবং লিনউড মসজিদে শ খানেক মুসল্লি নামাজ আদায় করছিলেন বলে জানা গেছে।