Thank you for trying Sticky AMP!!

ব্রেক্সিট পরবর্তী অভিবাসন: কম দক্ষদের ভিসা দেবে না যুক্তরাজ্য

প্রতীকী ছবি

কম দক্ষ বা সাধারণ কর্মীদের ভিসা না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যুক্তরাজ্য। আজ বুধবার সরকারের প্রকাশিত ব্রেক্সিট-পরবর্তী অভিবাসন নিয়মে এমন কড়াকড়ির কথা বলা হয়েছে। এর ফলে দেশটির রেস্তোরাঁ ও কৃষিসহ উৎপাদন ও সেবা খাতে মারাত্মক কর্মী সংকট তৈরি হবে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা।

গত ৩১ জানুয়ারি ইইউ’র সঙ্গে যুক্তরাজ্যের আনুষ্ঠানিক বিচ্ছেদ ঘটে। তবে ইইউ নাগরিকদের যুক্তরাজ্যে অবাধ প্রবেশাধিকার বন্ধ হবে আগামী ৩১ ডিসেম্বর। এরপর ইইউ নাগরিকদেরও ভিসা নিয়ে যুক্তরাজ্যে প্রবেশ করতে হবে। ব্রেক্সিট-পরবর্তী পরিস্থিতির কথা বিবেচনায় নতুন এই অভিবাসন আইন করতে যাচ্ছে সরকার। ২০২১ সাল থেকে চালু হতে যাওয়া এ নিয়ম ইইউ এবং ইইউ বহির্ভূত সব দেশের নাগরিকদের জন্য সমানভাবে কার্যকর হবে।

নতুন নিয়ম ইইউ বহির্ভূত দেশের নাগরিকদের জন্য কিছুটা শিথিল। এত দিন ইইউ বহির্ভূত দেশের নাগরিকদের কর্ম ভিসায় ন্যূনতম বেতনের শর্ত ছিল বছরে ৩০ হাজার পাউন্ড। নতুন নিয়মে তা ২৫ হাজার ৬০০ করা হয়েছে। আর চরম কর্মী সংকটের তালিকায় (স্পেসিফিক শর্টেজ অকুপেশন) থাকা চাকরির ক্ষেত্রে এ বেতনের শর্ত ২০ হাজার ৪৮০ পাউন্ড। এ ছাড়া এত দিন বছরে সর্বোচ্চ ২০ হাজার ৭০০ কর্মীকে ভিসা দেওয়ার যে শর্ত ছিল, সেটিও উঠে যাচ্ছে নতুন নিয়মে।

এর বিপরীতে নতুন নিয়ম ইইউ নাগরিকদের জন্য মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ার মতো। কেননা, এত দিন তাঁরা ভিসা ছাড়াই যুক্তরাজ্যে প্রবেশ এবং স্থায়ীভাবে বসবাস করতে পারতেন। কর্মসংস্থান কিংবা পড়াশোনার জন্য কোনো অনুমতি লাগত না। যুক্তরাজ্যের নাগরিকদের মতোই তারা সব রাষ্ট্রীয় কল্যাণ সুবিধা ভোগ করতেন। ২০২১ সাল থেকে ইইউ বহির্ভূত দেশের নাগরিকদের মতো তাদেরও সমান নিয়ম মেনে যুক্তরাজ্যে প্রবেশ করতে হবে। রাষ্ট্রীয় কল্যাণ সুবিধা পেতে কমপক্ষে পাঁচ বছর অপেক্ষা করতে হবে, যা এত দিন কেবল ইইউ বহির্ভূত দেশের নাগরিকদের জন্য প্রযোজ্য ছিল। যুক্তরাজ্যের কৃষি, উৎপাদন ও সেবা খাতের অদক্ষ ও কম দক্ষ কাজের অনেকটাই ইইউ থেকে আসা কর্মীদের ওপর নির্ভরশীল।

সরকার নিয়োগকারীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে, তারা যেন ইউরোপ থেকে আসা 'সস্তা শ্রমিক' এর ওপর নির্ভর না করে কর্মী ধরে রাখা এবং অটোমেশন প্রযুক্তি উন্নয়নে জোর দেন।

বিরোধী দল লেবার পার্টি বলেছে, এমন নিয়মের ফলে তৈরি হওয়া 'প্রতিকূল পরিস্থিতি'র কারণে শ্রমিক পাওয়া কঠিন হবে। তবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী (হোম সেক্রেটারি) প্রিতি প্যাটেল বলেছেন, নতুন ব্যবস্থায় 'সবচেয়ে সম্ভাবনাময় ও শ্রেষ্ঠরাই যুক্তরাজ্যে আসার সুযোগ পাবেন।'

নতুন নিয়মে ‘পয়েন্ট ভিত্তিক’ নিরীক্ষার মাধ্যমে ভিসাপ্রার্থীদের যোগ্যতা মূল্যায়ন করা হবে। ভিসা আবেদনকারীদের 'অনুমোদিত স্পনসরের' অধীনে দক্ষতা সম্পন্ন চাকরির নিয়োগপত্র থাকতে হবে। বেতনের শর্ত পূরণ করতে হবে। ইংরেজি জানতে হবে। ন্যূনতম যুক্তরাজ্যের এ লেভেল পর্যায়ের শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকতে হবে। এসব বিবেচনায় ৭০ পয়েন্ট নিশ্চিত করতে পারলে তবে আবেদনকারীকে ভিসা দেওয়া হবে। বিশেষ খাত বিবেচনায় গবেষণা বা বিশেষ যোগ্যতার জন্যও আবেদনকারী পয়েন্ট পেতে পারেন।

ব্রেক্সিটকে কেন্দ্র করে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের প্রায় ৩২ লাখ নাগরিক যুক্তরাজ্যে স্থায়ী বসবাসের আবেদন করেছে। সরকার মনে করে নতুন কর্মী না বাড়িয়ে এদের দিয়ে শ্রম জাবারের চাহিদা মেটানো যেতে পারে। পাশাপাশি, কৃষি খাতে মৌসুমি শ্রমিক (সিজনাল ওয়ার্কার) আসার অনুমোদিত পরিমাণ চারগুণ বাড়িয়ে ১০ হাজার করতে যাচ্ছে সরকার। এ ছাড়া 'ইয়ুথ মোবিলিটি অ্যাগ্রিমেন্ট' এর অধীনে প্রতিবছর ২০ হাজার তরুণকে যুক্তরাজ্যে আসার সুযোগ করে দেবে সরকার।