ব্রেক্সিট বিল: কেবল রানির সম্মতির অপেক্ষা
অবশেষে যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টে পাশ হয়েছে বহুল আলোচিত ব্রেক্সিট বিল। স্থানীয় সময় গতকাল বুধবার কোনো ধরনের পরিবর্তন ছাড়াই বিলটি পার্লামেন্টের উভয় কক্ষে পাশ হয়। এখন কেবল রানির সম্মতির আনুষ্ঠানিকতার অপেক্ষা। রানির সম্মতির মাধ্যমে বিলটি আইনে পরিণত হবে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে যুক্তরাজ্যের বিচ্ছেদ ব্রেক্সিট নামে পরিচিত।
ব্রেক্সিট বিল নামে পরিচিত এই বিলের আনুষ্ঠানিক নাম ‘ইইউ উইথড্রোয়াল বিল’। বিলটি পার্লামেন্টের বাধা পার হওয়ার মধ্য দিয়ে ইইউর সঙ্গে যুক্তরাজ্যের বিচ্ছেদ চূড়ান্ত ধাপে পৌঁছাল। এই বিল পাশের মাধ্যমে বিচ্ছেদ কার্যকরে ইইউর সঙ্গে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন যে চুক্তি সম্পাদন করেছেন, সেটিও পার্লামেন্টের অনুমোদন পাচ্ছে।
২০১৬ সালে অনুষ্ঠিত এক গণভোটে যুক্তরাজ্যের মানুষ ইইউ জোট ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার পক্ষে রায় দেয়। ইইউর অধীনতা থেকে বেরিয়ে আসার এই সিদ্ধান্তকে যুক্তরাজ্যের স্বাধীনতা অর্জন হিসেবে দেখছেন বিচ্ছেদপন্থীরা। কিন্তু সংসদে ব্রেক্সিট বিলের বিরোধিতার কারণে এই বিচ্ছেদ অনেকটা অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। গত ১২ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে ব্রেক্সিটপন্থী কনজারভেটিভ দল বড় ধরনের সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় ফেরার পর ব্রেক্সিট কার্যকরের অনিশ্চয়তা দূর হয়ে যায়।
প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বিল পাশের প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘একটা সময় মনে হয়েছিল কখনো হয়তো ব্রেক্সিট বিল পাশ করা সম্ভব হবে না। আমরা সেই মাহেন্দ্রক্ষণ পাড়ি দিয়েছি। তিনি ইইউর অধীনতাবিহীন যুক্তরাজ্যের সমুদয় সামর্থ্য কাজে লাগানোর বলিষ্ঠ ঘোষণা দেন।’
ব্রিটিশ পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউস অব কমন্স কোনো সংশোধনী ছাড়াই ব্রেক্সিট বিল পাশ করেছিল। কিন্তু উচ্চকক্ষ হাউস অব লর্ডস বিলটি পাঁচটি সংশোধনী যুক্ত করার প্রস্তাব করে বিলটি হাউস অব কমন্সে ফেরত পাঠায়। কিন্তু গতকাল বুধবার হাউস অব কমন্স ওই সব সংশোধনী প্রস্তাব নাকচ করে বিলটি আবারও উচ্চকক্ষে পাঠায়। হাউস অব লর্ডসের অনেক সদস্য এতে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। কিন্তু ক্ষমতাসীনদের বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায় নিম্ন কক্ষের সঙ্গে এ নিয়ে কোনো বিরোধে না যাওয়ার পথ বেছে নেয়। কোনো সংশোধনী ছাড়াই হাউস অব লর্ডস বিলটি পাশ করে।
ব্রেক্সিট বিল অনুযায়ী আগামী ৩১ জানুয়ারি স্থানীয় সময় রাত ১১ টায় ইইউর সঙ্গে যুক্তরাজ্যের বিচ্ছেদ কার্যকর হবে। ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালীন ব্যবস্থা হিসেবে ইইউর সঙ্গে যুক্তরাজ্যের বিদ্যমান বাণিজ্য ও অন্যান্য সম্পর্ক বজায় থাকবে। কিন্তু এই ১১ মাস যুক্তরাজ্য ইইউর সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারবে না। এ সময় উভয় পক্ষ ভবিষ্যৎ বাণিজ্য ও নিরাপত্তা বিষয়ে একটি চুক্তি সম্পাদনে কাজ করবে। যুক্তরাজ্যে বিলটি আইনে পরিণত হওয়ার পর ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী এবং ইইউ নেতারা এতে আনুষ্ঠানিক সাক্ষর করবেন। ইইউ পার্লামেন্টে বিলটি পাশে ২৯ জানুয়ারি বিশেষ অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে।
আরও পড়ুন
-
স্কুল, মাদ্রাসায় বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ক্লাস বন্ধ রাখার নির্দেশ হাইকোর্টের
-
প্রচণ্ড তাপপ্রবাহ, সব প্রাথমিক বিদ্যালয় ২ মে পর্যন্ত বন্ধ
-
আগামীকালও ঢাকাসহ ২৭ জেলায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করল শিক্ষা মন্ত্রণালয়
-
মিয়ানমারে তাপমাত্রা ৪৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি
-
সামান্য রদবদলে নতুন টেলিযোগাযোগ আইনের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে প্রশ্ন