Thank you for trying Sticky AMP!!

মস্কোতে এক টেবিলে ইরান ও রুশ কূটনীতিকেরা

যৌথ সংবাদ সম্মেলনে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ (ডানে) ও ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভেদ জারিফ। মস্কো, ২৬ জানুয়ারি

পরমাণু চুক্তি রক্ষার আহ্বান জানিয়েছে ইরান ও রাশিয়া। যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্ট জো  বাইডেন প্রশাসন ক্ষমতা গ্রহণের পর মঙ্গলবার প্রথমবারের মতো এ বিষয়ে বৈঠক করতে মস্কোতে একত্র হন ইরান ও রাশিয়ার শীর্ষ কূটনীতিকেরা। খবর এএফপির।

রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ বলেন, মস্কোতে তাঁদের দুই দেশের বৈঠকের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর একটি ছিল জয়েন্ট কমপ্রেহেনসিভ অ্যাকশন প্ল্যানকে (জেসিপিওএ) রক্ষা করা।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের বেরিয়ে যাওয়ার পরও জেসিপিওএকে রক্ষায় প্রচেষ্টা চালানোর জন্য মস্কোকে ধন্যবাদ জানান ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভেদ জারিফ। তিনি তেহরানের সঙ্গে মস্কোর ঐক্যের আহ্বান জানান। মস্কোর সঙ্গে তেহরানের এ আলোচনা হলো এমন সময়, যার মাত্র কয়েক দিন আগে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিঃশর্তভাবে তাদের ওপর থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছিলেন।

পরমাণু কর্মসূচি সীমিতকরণের লক্ষ্যে ২০১৫ সালে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, চীন, ফ্রান্স ও জার্মানির সঙ্গে ইরানের এই চুক্তি হয়েছিল। চুক্তি অনুযায়ী ১৫ বছর ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি নির্ধারিত মাত্রায় সীমিত রাখার কথা ইরানের। কিন্তু প্রেসিডেন্ট থাকাকালে ২০১৮ সালে ডোনাল্ড ট্রাম্প এই চুক্তিকে ত্রুটিপূর্ণ অভিহিত করে চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নেন এবং ইরানের ওপর একের পর এক নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করেন। তবে ইরান বলে আসছে, তাদের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ আণবিক বোমা তৈরির লক্ষ্যে নয়, তারা কেবল বেসামরিক খাতে পারমাণবিক জ্বালানি কর্মসূচির লক্ষ্যে এ কার্যক্রম চালাচ্ছে।

ট্রাম্প প্রশাসনের ওই নিষেধাজ্ঞা ইরানের তেল খাতে ভয়াবহ আঘাতের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এ ছাড়া এই নিষেধাজ্ঞা আন্তর্জাতিক ব্যাংকিংয়ের ক্ষেত্রে ইরানকে সংকটের মুখোমুখি করে—যা দেশটিকে অর্থনৈতিক মন্দার দিকে ঠেলে দিচ্ছে।

এদিকে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ক্ষমতায় আসার পর জেসিপিওএতে যুক্তরাষ্ট্রের ফেরার আশা দেখা দিয়েছে। এ ছাড়া তেহরান নিজ থেকেও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের চেষ্টা করছে। বাইডেন প্রশাসনের মনোনীত পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন ইতিমধ্যে সিনেট শুনানিতে বলেছেন, ট্রাম্প প্রশাসনের নীতিগুলো ইরানকে ‘আরও ভয়ংকর’ করে তুলেছে। বাইডেনের পরমাণু চুক্তিতে ফিরে আসার আকাঙ্ক্ষা রয়েছে। এ জন্য উভয় পক্ষকে (ইরান-যুক্তরাষ্ট্র) চুক্তির আগের শর্তে ফিরে আসতে হবে।

এই চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বেরিয়ে যাওয়া অন্যদের জন্যও উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ জন্য জেসিপিওএ স্বাক্ষরকারী রাশিয়া ও ইউরোপীয় দেশগুলো এই চুক্তি রক্ষার্থে প্রয়াস চালাচ্ছে। তারা ইরানকেও তার পারমাণবিক সমৃদ্ধি বাড়ানোর ক্ষেত্রে সতর্ক করে দিয়েছে। কয়েক দিন আগে ইউরোপের তিন দেশ ফ্রান্স, জার্মানি ও যুক্তরাজ্য ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছিল। যদিও ইরান জানিয়েছে, তারা চুক্তির বরখেলাপ করে কোনো কাজ করছে না।