Thank you for trying Sticky AMP!!

যুক্তরাজ্যের এমপিদের বিরুদ্ধে চীনের পাল্টা নিষেধাজ্ঞা

চীনের স্টেট কাউন্সিলর ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ইর সফরের প্রতিবাদে তুরস্কে অবস্থানরত উইঘুর মুসলিমদের বিক্ষোভ। ২৫ মার্চ তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারায় চীনা দূতাবাসের সামনে।

চীনের জিনজিয়াংয়ে উইঘুর মুসলিমদের ওপর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ নিয়ে বেইজিংয়ের সঙ্গে পশ্চিমা দেশগুলোর উত্তেজনা ক্রমেই বাড়ছে। সম্প্রতি এ ইস্যুতে চীনা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন। এর পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে এবার যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টের পাঁচ সদস্যসহ দেশটির ৯ ব্যক্তির বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে বেইজিং।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, শুক্রবার চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যুক্তরাজ্যের নয় ব্যক্তি ও চার প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের কথা জানায়। নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা ব্রিটিশ নাগরিক ও তাঁদের পরিবারের সদস্যরা চীন ভ্রমণ করতে পারবেন না। এসব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চীনের কোনো নাগরিক ব্যবসা–বাণিজ্য করতে পারবেন না। চীনে থাকা তাঁদের সম্পদ জব্দ করা হবে।

Also Read: পশ্চিমের ইটের জবাবে চীনের পাটকেল

চীনা নিষেধাজ্ঞার আওতায় যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির এমপিরাও রয়েছেন। তাঁরা হলেন দলটির সাবেক শীর্ষ নেতা স্যার ইয়ান ডানকান স্মিথ, নুসরাত গনি, টিম লাউটেন, টম টুগেনধাট ও নিল ও’ব্রায়েন। এ ছাড়া চীনা নিষেধাজ্ঞার আওতায় রয়েছেন ব্রিটিশ পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ হাউস অব লর্ডসের সদস্য লর্ড অ্যালটন ও ব্যারোনেস কেনেডি, আইনজীবী স্যার জিওফ্রে নাইস এবং নিউক্যাসল ইউনিভার্সিটির শিক্ষক ও গবেষক জো স্মিথ ফিনলে।
তাঁরা সবাই জিনজিয়াংয়ে চীন সরকারের মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে উচ্চকণ্ঠ ছিলেন। নিজ নিজ অবস্থান থেকে এর বিরোধিতা করেছেন।
এ ছাড়া চীনা রিসার্চ গ্রুপ, কনজারভেটিভ পার্টি হিউম্যান রাইটস কমিশন, উইঘুর ট্রাইব্যুনাল এবং অ্যাসেক্স কোর্ট চেম্বারের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে চীন।
এর প্রতিক্রিয়ায় যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডমিনিক রাব বলেছেন, এ বিষয়ে লন্ডনে চীনা রাষ্ট্রদূতকে তলব করবেন তিনি।

Also Read: তিন দশক পর ইইউর নিষেধাজ্ঞার মুখে চীন

Also Read: উইঘুর অঞ্চলের জনঘনত্ব কমানোর চীনা কৌশল

সম্প্রতি চীনের জিনজিয়াং প্রদেশে ‘সংশোধনাগার শিবির’-এ উইঘুর সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতনের বেশ কিছু নথি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রকাশ পায়।
জিনজিয়াংয়ের শিবিরে উইঘুর সম্প্রদায়ের লোকজনকে জোর করে আটকে রাখা এবং কাজ করতে বাধ্য করার প্রমাণ পাওয়ার কথা বলা হয়েছে বিবিসির অনুসন্ধানে।
জাতিসংঘের প্রতিবেদনের তথ্যমতে, জিনজিয়াংয়ের পশ্চিমাঞ্চলে বিভিন্ন শিবিরে কমপক্ষে ১০ লাখ উইঘুর মুসলিমকে আটক রাখা হয়েছে। চীন এসব শিবিরের কথা প্রথমে অস্বীকার করলেও পরে দেশটির সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, এগুলো আসলে প্রশিক্ষণকেন্দ্র। উগ্রবাদী মানসিকতা প্রশমনে এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
এসব ঘটনায় চীনের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ আনে পশ্চিমা দেশগুলো। মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে সম্পৃক্ত চীনের কয়েকজন কর্মকর্তা ও কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে তারা। জো বাইডেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পর এই প্রথম চীনের বিরুদ্ধে সমন্বিতভাবে কোনো নিষেধাজ্ঞা দেয় পশ্চিমা শক্তিগুলো। এমনকি ৩০ বছরের বেশি সময় পর চীনের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দেয় ইউরোপীয় ইউনিয়নও।
তবে চীন বরাবর এসব অভিযোগ অস্বীকার করে এসেছে। চলতি মাসের শুরুর দিকে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই বলেন, পশ্চিমা রাজনীতিবিদেরা জিনজিয়াংয়ের ঘটনায় ‘মিথ্যা তথ্যের’ ওপর আস্থা রাখছেন।

Also Read: মুসলিমদের ওপর চীনের নির্যাতন নিয়ে সমালোচনা জাতিসংঘের