Thank you for trying Sticky AMP!!

শিশু কোলে সুবেশ রাজবধূকে নিয়ে বিস্ময়

গত সোমবার যুক্তরাজ্যের লন্ডনের প্যাডিংটনে সেন্ট মেরি হাসপাতালে জন্ম নেয় উইলিয়াম ও কেট দম্পতির তৃতীয় সন্তান। ছবি: এএফপি

ব্রিটিশ রাজসিংহাসনের উত্তরাধিকারী প্রিন্স উইলিয়ামের সঙ্গে সন্তান কোলে হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে আসছেন তাঁরই স্ত্রী ডাচেস অব কেমব্রিজ কেট মিডলটন। পরনে লাল পোশাক, মুখে মেকআপ, পরিপাটি চুল। হাসিমুখে সমবেত জনতার উদ্দেশে হাত নাড়ছেন রাজবধূ ডাচেস অব কেমব্রিজ কেট মিডলটন। এ দৃশ্য ক্যামেরাবন্দী করতে ভিড় করেছে স্থানীয় থেকে শুরু করে আন্তর্জাতিক খ্যাতনামা গণমাধ্যম।

একই সঙ্গে কৌতূহলেরও জন্ম দিয়েছে এ ঘটনা। সন্তান জন্ম দেওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর এমন সতেজ চেহারা কীভাবে সম্ভব?

গত সোমবার প্যাডিংটনের সেন্ট মেরি’স হাসপাতালে তৃতীয় সন্তানের জন্ম দেন কেট। ফুটফুটে ছেলেশিশু। এই সন্তান ছাড়াও এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে এই দম্পতির।

একজন মা মাত্রই জানেন, সন্তান জন্ম দেওয়ার কষ্ট কতখানি! মায়েদের কাছে সে কষ্টের কথা শুনে ছেলেরাও হয়তো এ কষ্টের কিছুটা উপলব্ধি করতে পারেন। তাহলে রাজবধূ বলে কি সন্তান জন্ম দিতে গিয়ে কষ্ট কম হয়েছে কেটের?

সন্তান কোলে হাস্যোজ্জ্বল রাজবধূ কেট মিডলটন। ছবি: রয়টার্স

এ নিয়ে একরাশ বিস্ময় আর কৌতূহল তাঁদেরই বেশি, যাঁরা মা হয়েছেন। রাজবধূ বলে নতুন এই মায়ের ওপর গণমাধ্যমকে দেখানোর জন্য বাড়তি চাপ ফেলা হতে পারে বলে মনে করছেন তাঁরা। তাঁদের মতে, রাজবধূকে সব সময় যেকোনো অবস্থায় সুন্দর, গোছানো এবং হাসিখুশি দেখাতে হবে—এমনটাই বোধ হয় ভাবা হয়। আর এমন সব মন্তব্য করতে গিয়ে এসব মা সন্তান জন্ম দেওয়ার পর তোলা নিজ নিজ ছবিও পোস্ট করেছেন।

গতকাল মঙ্গলবার বিবিসি অনলাইনের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে তাঁদের এমন সব প্রতিক্রিয়া।

গণমাধ্যমে সন্তান কোলে রাজবধূর ছবি আসার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেক নারী তাঁদের সন্তান জন্ম দেওয়ার পর তোলা ছবি পোস্ট করেন। মায়েদের জন্য জনপ্রিয় ওয়েবসাইট মামসনেটের একটি থ্রেডে এ নিয়ে হয় ব্যাপক আলোচনা।

অনেকে রাজবধূর এমন সতেজ চেহারার প্রশংসা করেছেন। আবার অনেকে বলেছেন, হাসপাতালের বাইরে এমন সব বাঘা বাঘা সাংবাদিক তাঁদের জন্য অপেক্ষা করে থাকলে তাঁরা কী করতেন!

জন্ম নেওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর উইলিয়াম-কেট দম্পতির তৃতীয় সন্তান। ছবি: রয়টার্স

বিবিসি উইমেনস আওয়ারের উপস্থাপক জেন গার্ভে তাঁর ভেরিফায়েড টুইটার অ্যাকাউন্টে কৌতুক করে এক ছবি পোস্ট করেছেন। ছবিতে দেখা গেছে, বাঁ পাশে সন্তান কোলে হাসিমুখে কেট মিডলটন। আর ডান পাশে হলিউড তারকা সিলভারস্টার স্ট্যালনের ঘর্মাক্ত মুখ। তিনি লিখেছেন, রাজবধূর এমন চেহারা নিয়ে তাঁর কিছুটা সন্দেহ রয়েছে। কারণ, বেশির ভাগ মাকে সন্তান জন্ম দেওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর ‘আলুর বস্তার’ মতো দেখায়। কৌতুক করে তিনি লেখেন, সন্তান জন্মদানের পর তাঁকে (জেন গার্ভে) নিশ্চয় ডান পাশের ছবিটার মতো এমন দেখাবে!

জেন গার্ভের টুইটে সাড়া দিয়ে কল্পনা ভাগন নামে একজন হাসপাতালে তাঁর নবজাতক কোলে ছবি পোস্ট করেন। পরে তিনি বিবিসিকে বলেন, ‘একজন নতুন মা হিসেবে আমাদের ওপর অপ্রয়োজনীয় চাপ ফেলা হয়। সন্তান জন্ম দেওয়ার বাস্তবতা ও মাতৃত্বের প্রকৃত চিত্রই প্রকাশিত হওয়া উচিত। যাতে কোনো মা নিজেকে একা বোধ না করেন।’

কল্পনা বলেন, ‘যদি কেউ আমাকে সেই সময় মেকআপ এবং সুন্দর পোশাক পরিয়ে দেওয়ার প্রস্তাব দিত, আমি লাফিয়ে সেই সুযোগ নিতাম। তবে বাস্তবতা হচ্ছে, আমি ওই সময় এক কাপ কড়া চা ও লম্বা ঘুম দিতে চাইতাম।’

দুই সন্তানের সঙ্গে উইলিয়াম-কেট দম্পতি। ছবি: রয়টার্স

জেন গ্রেভের টুইটের প্রতিক্রিয়ায় বিবিসির প্রতিবেদক নিনা ওয়ারহার্স্ট কৌতুক করে বলেন, তাঁর ছবি পোস্ট করেন।

ডিনাইস কুপার নামে আরেক নারী এক বছর আগে তাঁর চতুর্থ সন্তান জন্ম দেওয়ার পর সন্তানকে কোলে নিয়ে স্বামী ব্রুসের সঙ্গে হাসপাতালে তোলা ছবি পোস্ট করেন। তিনি বিবিসিকে বলেন, সবাই আলোচনা করছে কীভাবে রাজবধূকে এত সুন্দর দেখাচ্ছে। সন্তান জন্ম দেওয়ার পর মায়েদের এমন সুন্দরই লাগে। গণমাধ্যমের নজর না থাকলে কেট মিডলটনও হয়তো উঁচু করে চুল বেঁধে ট্রাকস্যুট পরে হাঁটতে ভালোবাসতেন। তিনি বলেন, ‘আমি যা করতে পেরেছি, এ জন্য গর্ব বোধ করি। আমি মনে করি, আমাকেও যথেষ্ট সুন্দর লেগেছে। একরাশ আনন্দ নিয়ে আমি নতুন এই পুঁচকেটাকে নিয়ে হেঁটে যেতে পেরেছি নিজের মতো করে। আমি আনন্দে কাঁদার সুযোগ পেয়েছি।’

বিবিসি উইমেনস আওয়ারের উপস্থাপক জেন গার্ভে তাঁর ভেরিফায়েড টুইটার অ্যাকাউন্টে কৌতুক করে এক ছবি পোস্ট করেছেন। ছবি: টুইটার থেকে নেওয়া

কেটি নামে এক টুইটার ব্যবহারকারী মা ভিন্নমত প্রকাশ করে বলেন, ‘সবাই ভুলে যাচ্ছে যে আমরা এখন ২০১৮ সালে রয়েছি। এখন আর সন্তান জন্ম দেওয়ার পর হাসপাতালে ছয় সপ্তাহ থাকতে হয় না। এখন উঠে দাঁড়াতে হয়। হাঁটতে হয়। এমন অবস্থায় হিল পরে হাঁটতে পারার জন্য আমি কেট মিডলটনকে স্যালুট জানাই।’

সন্তান জন্ম দেওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর তিনি কী করেছিলেন—জানিয়ে এই ছবিটি পোস্ট করেন বিবিসির প্রতিবেদক নিনা ওয়ারহার্স্ট। ছবি: টুইটার থেকে নেওয়া