Thank you for trying Sticky AMP!!

‘এভার গিভেন’ জাহাজকে নাড়াতে যা করা হলো

গত মঙ্গলবার জাহাজটি সুয়েজ খালে আটকে যায়

মিসরের সুয়েজ খালে আটকে পড়া কনটেইনারবাহী জাহাজ ‘এভার গিভেন’ অনেক চেষ্টার পর নড়েছে। জাহাজটিকে মুক্ত করতে গত প্রায় এক সপ্তাহ ধরে চেষ্টা চালানো হয়। সেই চেষ্টার কিছুটা উঠে এসেছে বিবিসি, সিএনএন ও রয়টার্সের প্রতিবেদনে।

২০১৮ সালে তৈরি পানামার পতাকাবাহী জাহাজটির দৈর্ঘ্য ৪০০ মিটার। ওজন প্রায় ২ লাখ ২০ হাজার টন। জাহাজটি ২০ হাজার কনটেইনার ধারণ করতে সক্ষম। জাহাজটিতে ১৮ হাজার ৩০০ কনটেইনার ছিল।

জাহাজটি তাইওয়ানের এভারগ্রিন মেরিন করপোরেশন লিজ নিয়ে পরিচালনা করছে। স্থানীয় সময় গত মঙ্গলবার সকালে জাহাজটি সুয়েজ খাল অতিক্রম করছিল। এ সময় জাহাজটি প্রবল বাতাস ও ধূলিঝড়ের কবলে পড়ে। জাহাজটি নিয়ন্ত্রণ হারায়। একপর্যায়ে সংকীর্ণ সুয়েজ খালে প্রায় আড়াআড়িভাবে আটকে যায় জাহাজটি। এ কারণে সুয়েজ খালে জাহাজ চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সুয়েজ খালের দুই প্রবেশমুখে জাহাজজট সৃষ্টি হয়। জটে আটকে পড়ে সাড়ে তিন শর বেশি জাহাজ। এ অবস্থায় গত বুধবার থেকে উদ্ধারকাজ শুরু হয়।

জাহাজ আটকে যাওয়ায় সুয়েজ খালে চলাচল বন্ধ হয়ে যায়

জাহাজটিকে উদ্ধার করতে নানা কৌশল ব্যবহার করা হয়। তার মধ্যে অন্যতম টাগবোটের ব্যবহার। জাহাজটিকে নাড়াতে ১৪টি টাগবোট ব্যবহার করা হয়। টাগবোটগুলো জাহাজের উভয় পাশে অবস্থান নেয়। উচ্চ জোয়ারের সময় সামনে-পেছনে ধাক্কা দিয়ে জাহাজটিকে নাড়ানোর চেষ্টা করে টাগবোটগুলো। একপর্যায়ে জাহাজটিকে নাড়ানো সম্ভব হয়।

ড্রেজার দিয়ে জাহাজটির আশপাশ, সামনে-পেছনে ও নিচ থেকে কাদা-বালু খনন করে তা সরানোর কৌশল ব্যবহার করা হয়। জাহাজটি একদম আটকে থাকায় উদ্ধার অভিযানে ড্রেজিংয়ের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়।

সিএনএন জানায়, গতকাল রোববার থেকে জাহাজটির কাছ দিয়ে, গভীরভাবে ড্রেজিংয়ের কাজ শুরু করেন উদ্ধারকর্মীরা। সুয়েজ খাল কর্তৃপক্ষ (এসসিএ) জানিয়েছে, জাহাজটির সামনের দিক দিয়ে প্রায় ৫৯ ফুট ড্রেজিং করা হয়। জাহাজটিকে সরাতে ২৭ হাজার কিউবিক মিটারের বেশি বালু অপসারণ করা হয়েছে।

আটকে পড়া জাহাজটিকে সোমবার ভোরে নড়ানো সম্ভব হয়

সমন্বিত নানান কৌশলের মধ্যে জাহাজটিকে হালকা করার বিষয়টিও ছিল। ভার কমাতে জাহাজটিকে থেকে কার্গো, জ্বালানি, পানি ইত্যাদি সরানোর কৌশল বিবেচনায় নেন উদ্ধারকারীরা।

কর্তৃপক্ষ জানায়, আটকে পড়া জাহাজটিকে স্থানীয় সময় আজ সোমবার ভোররাত সাড়ে চারটার দিকে সফলভাবে নড়ানো সম্ভব হয়।
সুয়েজ খাল কর্তৃপক্ষকে উদ্ধৃত করে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘এভার গিভেন’ জাহাজটিকে কূল থেকে নামানো গেছে। ফলে জাহাজটির চলার মতো অবস্থা তৈরি হয়েছে।

জাহাজটিকে আংশিকভাবে ভাসিয়ে তোলা সম্ভব হয়েছে বলে জানিয়েছে সুয়েজ খাল কর্তৃপক্ষ। তারা আরও বলেছে, জাহাজটির গতিপথ প্রায় ৮০ শতাংশ ঠিক করা হয়েছে। জাহাজটির ইঞ্জিন আবার চালু করা হয়েছে। জাহাজটিকে সোজা করা হলে তার পথে চলতে শুরু করবে। জোয়ার এলে আজকের মধ্যেই জাহাজটিকে সরিয়ে নেওয়া যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। এর ফলে এক সপ্তাহ পর গুরুত্বপূর্ণ এই বাণিজ্যিক নৌপথে পুনরায় চলাচলের আশা দেখা দিয়েছে।