Thank you for trying Sticky AMP!!

ধর্ষণ থেকে আত্মরক্ষার পাঠ

দক্ষিণ আফ্রিকার একটি স্কুলে ধর্ষণ থেকে আত্মরক্ষার কৌশল শেখানো হয় শিক্ষার্থীদের। ছবি: এএফপি

ক্লাস চলছে। ছাত্রীরা মন দিয়েছে পাঠে। তবে তা গতানুগতিক বিদ্যার্জন নয়; আত্মরক্ষার কৌশল রপ্ত করা। চারদিকে অহরহ ঘটছে ধর্ষণের ঘটনা। এই সর্বনেশে পরিণতিতে নিজেকে রক্ষা করার কৌশল জানতেই এ ক্লাস।

দক্ষিণ আফ্রিকার সোয়েটো শহরে এখন নিয়মিত এই পাঠ দেওয়া হচ্ছে মেয়েদের।

প্রশিক্ষক দিমাকাস্তো মনোকলি শিক্ষার্থীদের এই শিক্ষা দেন। একটি লক্ষ্যবস্তু দেখিয়ে তিনি শিক্ষার্থীদের বলেন, মনে করো এটি ধর্ষকের বিশেষ অঙ্গ। ১১ বছরের একটি মেয়েকে হাঁটু দিয়ে সেখানে আঘাত করার কৌশল শেখালেন তিনি।

থাবিসাং স্কুলে আত্মরক্ষার এমন কৌশল শেখানো হয় শিক্ষার্থীদের। প্রাতিষ্ঠানিক জরিপ বলছে, দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রতিদিন ১১০টিরও বেশি ধর্ষণের ঘটনা পুলিশের তালিকায় যুক্ত হয়।

প্রকৃতপক্ষে এই সংখ্যা আরও বেশি বলেই ধারণা। কিছু জরিপে দেখা যায়, ১৩টির মধ্যে কেবল একটি ধর্ষণের ঘটনা পুলিশের নজরে আসে।

গত সেপ্টেম্বরে হাসপাতালে সন্তানের জন্ম দেওয়ার এক দিন পর এক ব্যক্তি ধর্ষণ করে একজন মাকে। একই সময়ে দক্ষিণ আফ্রিকার রাজধানী প্রিটোরিয়ায় জনাকীর্ণ রেস্তোরাঁর শৌচাগারে সাত বছরের একটি মেয়েকে ধর্ষণ করা হয়।

আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেস উইমেন্স লিগের মহাসচিব মিওকগো মাতুবা বলেন, শাস্তি হিসেবে অপরাধীর প্রজননক্ষমতা রাসায়নিকভাবে নষ্ট করে ফেলা দরকার।

শ্রেণিকক্ষগুলোয় এ ধরনের ভয়ংকর অপরাধ থেকে শিক্ষার্থীদের আত্মরক্ষার কৌশল শেখানো হয়। শিক্ষক মনোকলি বলেন, যার সান্নিধ্যে অস্বস্তি লাগে, তার সঙ্গে একই ঘরে না থাকা উচিত। বিপজ্জনক ব্যক্তির সঙ্গে এক ঘরে না থাকতে পরামর্শ দেন তিনি।

দক্ষিণ আফ্রিকার স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা মনোকলি ওয়ার্কস ফর অ্যাকশন ব্রেকস সাইলেন্স (এবিএস) বিভিন্ন স্কুলে শিক্ষার্থীদের আত্মরক্ষার কৌশল শেখায়।

এবিএসের প্রতিষ্ঠাতা দেবি স্টিভেন শৈশবে ধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন। বিভিন্ন স্কুল ও প্রতিষ্ঠানে তিনি ধর্ষণ থেকে রক্ষার কৌশল শেখান শিক্ষার্থীদের। শারীরিক বিভিন্ন কৌশলের পাশাপাশি আত্মরক্ষার কৌশল হিসেবে শিক্ষার্থীদের মানসিকভাবেও সচেতন করা হয়। শারীরিক শক্তি কম থাকলেও প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার কৌশল শেখানো হয় শিক্ষার্থীদের।

এবিএস ১৩ হাজার শিশুকে শিক্ষা দিয়েছে। মালি মাসোন্দো নামের একজন জানান, পরিবার ও সন্তানদের দৈনন্দিন জীবনে ধর্ষণের ভয় ঢুকে গিয়েছিল। এই শিক্ষা শিশুদের মাঝে সচেতনতা জাগিয়ে তুলেছে।