Thank you for trying Sticky AMP!!

অস্ট্রেলিয়ার উপনির্বাচনে বিরোধী দলের বিপুল জয়

অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল দেশটির উপনির্বাচন। ‘সুপার সাটারডের’ এই উপনির্বাচনে পাঁচটি আসনের চারটিতেই জয় লাভ করে দেশটির প্রধান বিরোধী দল লেবার পার্টি। পঞ্চমটিতে জয় পায় সেন্টার অ্যালায়েন্স দল। অন্যদিকে, ২০১৭ সাল থেকে মোট ৮টি উপনির্বাচনের মধ্যে দেশটির বর্তমান সরকার লিবারেল পার্টি জয় পেয়েছে মাত্র একটি আসনে। সংসদ সদস্য পদের শূন্যস্থান পূরণ করতে জাতীয় নির্বাচনের আগে এই উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হলো। উপনির্বাচনে লেবার পার্টির এ জয়ের পর অস্ট্রেলিয়ার আগামী সরকার এ দলটিই গঠন করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে বিভিন্ন রাজনৈতিক বিশ্লেষণে।

অস্ট্রেলিয়ার ব্র্যাডডন, ফ্রিমেন্টাল, লংসম্যান, পার্থ ও মায়ো নির্বাচনী এলাকায় শনিবার উপনির্বাচন হয়। এর মধ্যে মায়ো ছাড়া বাকি চার আসনেই জয় পান লেবার পার্টির প্রার্থীরা। তবে সবচেয়ে আলোচিত ছিল লংসম্যান ও ব্র্যাডডন নির্বাচনী এলাকা। কারণ দুটি অঞ্চলেই লিবারেল প্রার্থীদের সমর্থক বেশি ছিল। লংসম্যানে লেবার পার্টির প্রার্থী সুজান ল্যাম্ব এর জয় অনেকটাই অভাবনীয় ছিল। লিবারেল পার্টির প্রার্থী ট্রেভর রুথেনবার্গের জোরালো প্রতিদ্বন্দ্বিতার পরেও ৭২ শতাংশ ভোট আসে সুজানের পক্ষে। নির্বাচনী পুলে ভোটারদের কাছে লেবার দলের প্রধান নেতা বিল শর্টেন জনপ্রিয় নন। তাই শর্টেনের নেতৃত্বে এ দুই আসন জয় পাওয়া একটি চ্যালেঞ্জ ছিল। অস্ট্রেলিয়ায় জাতীয় নির্বাচনের আগের হওয়া উপনির্বাচনের ফলাফল অনেক গুরুত্ব রাখে।

বিশ্লেষকদের মতে, উপনির্বাচনের ফলাফলে জাতীয় নির্বাচনের ফলাফলের আভাস পাওয়া যায়। সরকার দলীয় প্রার্থীদের শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতার পরেও উপনির্বাচনে লেবার দলের অসাধারণ জয় দলটিকে আগামী নির্বাচনে ক্ষমতায় এনে দেবে বলে আশাবাদী শর্টেন।

অন্যদিকে, লেবার দলের জয় নিয়ে বেশ তির্যক মন্তব্য করেছেন অস্ট্রেলিয়ার বর্তমান লিবারেল সরকারের প্রধানমন্ত্রী ম্যালকম টার্নবুল। গণমাধ্যমে তিনি বলেন, ‘আমি দেখছি বিল শর্টেন বিশ্বকাপ জয়ের মতো বাতাসে ভাসছেন। লেবার পার্টির আনন্দ উদযাপন করার মতো খুব বেশি কিছু নেই। তাই এত উল্লাস।’ টার্নবুলের এমন মন্তব্যের জবাবে শর্টেন বলেন, ‘লেবার পার্টি অনেক ভালো করেছে আর এটাই সত্য। এখানে রাগ হওয়ার মতো কিছু নেই।’ লেবার দলের জয়ের মাধ্যমে ভোটাররা একটি সুস্থ সরকার ব্যবস্থার আশা করছেন বলেও মন্তব্য করেন শর্টেন। বলেন, ‘যদি ম্যালকম টার্নবুল ভাবেন, তাঁর বিভিন্ন সিদ্ধান্তে জনগণ খুশি, তবে আমি যতটা ভাবি তার চেয়েও তিনি বেশি দূরে আছেন জনগণের।’ আর শর্টেনের সঙ্গে একমতও প্রকাশ করেছেন অস্ট্রেলিয়ার অন্যতম পত্রিকা সিডনি মর্নিং হেরাল্ড এর অন্যতম রাজনৈতিক কলামিস্ট ডেভিড ক্রু। এক প্রতিবেদনে তিনি বলেন, ‘শর্টেন এর উদযাপন করার সবকিছু আছে, আর টার্নবুলের চিন্তিত হওয়ার জন্যও সবকিছু আছে।’

এদিকে নেতৃত্ব নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার রাজনৈতিক দলগুলোর অভ্যন্তরীণ বিবাদও মিটিয়ে নিয়েছেন লেবার পার্টির অন্যতম নেতা অ্যান্থনি অ্যালবানিজ। উপনির্বাচনের আগেই অ্যালবানিজ শর্টেন এর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় না যাওয়ার কথা ঘোষণা দিয়েছিলেন। তিনি শর্টেন এর অধীনেই একজন মন্ত্রী হতে চান বলে ইচ্ছা প্রকাশ করেন। নির্বাচনের আগে দলীয় কোন্দল দলের জন্য মঙ্গলজনক নয় এমনটাই বলেছিলেন সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার বিষয়ক অধ্যাপক রড টিফেন। অস্ট্রেলিয়ার রাজনৈতিক ইতিহাস বিশ্লেষণ করে এ কথা বলেছিলেন তিনি। আর সে বিষয়টা আঁচও করতে পেরেছেন অ্যালবানিজ। তাই নির্বাচনের আগে দলীয় কোন্দল থেকে নিজেকে বের করে নিয়েছেন ‘জনগণের পছন্দ’ হিসেবে আখ্যায়িত এ নেতা। আর তার ফলও এই জয়লাভের মধ্য দিয়ে হয়তো পেতে শুরু করেছে লেবার পার্টি।