Thank you for trying Sticky AMP!!

আমিরাতের 'মঙ্গলময়' নারী আমিরি

সারাহ আল–আমিরি

মধ্যপ্রাচ্যের নাম শুনলেই চোখের কোণে ভেসে ওঠে যুদ্ধ আর হানাহানি। ধর্মীয় গোঁড়ামিও সেখানে প্রবল। নারীর চলাফেরার স্বাধীনতাও যেন মেপে মেপে। এমন এক ‘বৈরী পরিবেশে’ দেখা গেল ভিন্ন সারাহ আল–আমিরিকে। প্রথম আরব দেশ হিসেবে সংযুক্ত আরব আমিরাত লাল গ্রহ মঙ্গলে যে সফলভাবে মহাকাশযান পাঠিয়েছে, তার নেতৃত্বে ছিলেন এই নারী।

উন্নতির শিখরে ওঠা এই নারীর এত দূর আসার পেছনে রয়েছে নানা গল্প। আমিরির বয়স যখন ১২ বছর, তখন পৃথিবী থেকে ২৫ লাখ আলোকবর্ষ দূরে থাকা ঘূর্ণমান অ্যান্ড্রোমেডা গ্যালাক্সির ছবি চোখে পড়ে তাঁর। তখন থেকেই স্বপ্ন জন্ম নেয়, বড় হয়ে তিনি মহাজাগতিক বিষয়ে কাজ করবেন। কিন্তু অস্থিতিশীলতা আর সংঘাত তাঁর সেই স্বপ্ন পূরণ হতে দেবে কি না, তা নিয়ে বেশ শঙ্কায়ও ছিলেন তিনি। মহাবিশ্ব নিয়ে কাজ করার কথা ভাবলেও মঙ্গল অভিযানে নিজের দেশকে নেতৃত্বে দেবেন, তা হয়তো তিনি কখনো স্বপ্নও দেখেননি।

কিন্তু সেই স্বপ্ন বায়স্তবায়ন হয়ে ধরা দিল বাংলাদেশ সময় গত রোববার মধ্যরাতে। জাপানের দক্ষিণাঞ্চলীয় তানেগাশিমা মহাকাশ কেন্দ্র থেকে ‘হোপ প্রুব’ নামে আমিরাতের একটি মহাকাশযান সফলভাবে উৎক্ষেপণ করা হয়। সেই সঙ্গে ইতিহাসের পাতায় নাম উঠে গেল সারাহ আল–আমিরির। সঙ্গে নানা দেশের সংবাদমাধ্যমে শিরোনাম হতে থাকলেন। মহাকাশযানটির সফল উৎক্ষেপণের পর উচ্ছ্বসিত সারাহ বলেছিলেন, ১৯৬৯ সালের জুলাইয়ে অ্যাপোলো-১১ অভিযানে চন্দ্রজয়ের যে প্রভাব আমেরিকার ওপর পড়েছিল, হোপ অভিযান সফল হলে সংযুক্ত আরব আমিরাতের ওপরও অনেকটা একই রকম প্রভাব পড়বে।

পাঁচ বছর ধরে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ক্ষেত্রে সফলতা অর্জনে উঠেপড়ে লাগে মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম সমৃদ্ধিশালী দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাত। ২০১৭ সালে বিশ্বের প্রথম কোনো দেশ হিসেবে আমিরাত সরকার কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাবিষয়ক মন্ত্রীর নাম ঘোষণা করে। মহাকাশ প্রযুক্তি ও অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতির বিষয়ে জানাবোঝা ও তৈরির পথ প্রশস্ত করতেই এ পদক্ষেপ। ওই বছরই তরুণ আমিরাতি প্রকৌশলী সারাহ আল–আমিরির কাঁধে এসে পড়ে মহাকাশ অভিযানের নেতৃত্ব। 

চলতি মাসের প্রথম দিকে ব্রিটিশ বিজ্ঞানবিষয়ক সাময়িকী নেচারকে দেওয়া সাক্ষাৎকার আমিরি বলেন, ‘আমরা একটি নতুন দেশ হিসেবে বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে যাচ্ছি। তবে এই কাজে আমরা অনেক দেরি করে ফেলেছি।’

আশাবাদী ও উদ্যমী এই নারীর জন্ম ১৯৮৭ সালে। এখন তাঁর বয়স মাত্র ৩৩ বছরের কোটায়। তিনি সংযুক্ত আরব আমিরাতের কাউন্সিল অব সায়েনস্টিটের সভাপতির পাশপাশি অ্যাডভান্স সায়েন্সবিষয়ক প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন ২০১৭ সাল থেকে। তিনি শারজাহর আমেরিকান ইউনিভার্সিটি অব শারজাহ থেকে কম্পিউটার সায়েন্সে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পাস করেন। এরপর ঝুঁকে পড়েন মহাকাশ প্রকৌশলের দিকে। তথ্যসূত্র: উইকিপিডিয়া ও ডয়চেভেলে।