Thank you for trying Sticky AMP!!

করোনার কারণে জাপানের শতাধিক কোম্পানি দেউলিয়া

করোনার বিস্তার রোধে অন্য দেশের মতো জাপানও লকডাউনের আশ্রয় নেয়। ছবি: রয়টার্স

করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে জাপান জরুরি অবস্থা জারি করেছে গত মাসের শুরুতে। এতে মানুষ ঘরে থেকে বের হচ্ছে না। ফলে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সংকুচিত হয়ে আসায় শতাধিক কোম্পানি নিজেদের দেউলিয়া ঘোষণা করেছে।

বাণিজ্য ও অর্থনীতিবিষয়ক গবেষণা প্রতিষ্ঠান টোকিও শোকো রিসার্চ লিমিটেড গতকাল প্রচারিত এক বিবৃতিতে জানায়, ফেব্রুয়ারি মাসে করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত ১০৯টি কোম্পানি নিজেদের দেউলিয়া ঘোষণা করে সুরক্ষা সহায়তার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানিয়েছে।
জাপানে জরুরি অবস্থা চলতে থাকা অবস্থায় নগদ অর্থের প্রবাহ বিঘ্নিত হতে থাকায় ক্ষুদ্র ও মাঝারি আকারের ব্যবসাকে কঠিন সমস্যার মুখে পড়তে হচ্ছে। ফলে ভবিষ্যতে দেউলিয়া হওয়া কোম্পানির সংখ্যা আরও বাড়বে বলে সতর্ক করে দিয়েছে শোকো রিসার্চ। জাপান সরকার অবশ্য সংকটাপন্ন এসব কোম্পানির জন্য আর্থিক প্রণোদনা ঘোষণা করেছে। কিন্তু পার্লামেন্টে সদ্য অনুমোদিত সম্পূরক বাজেটে অন্তর্ভুক্ত থাকা সেই প্রণোদনা পেতে আরও কিছুদিন লেগে যাবে।
৭ এপ্রিল থেকে কার্যকর হওয়া জরুরি অবস্থা ৬ মে শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু সরকার এখন জরুরি অবস্থার মেয়াদ আরও এক মাস বাড়ানোর চিন্তা করছে। ফলে দেউলিয়া কোম্পানির সংখ্যা আরও বাড়বে।
করোনাভাইরাস ক্ষুদ্র ও মাঝারি আকারের কোম্পানির ওপর বড় ধরনের আঘাত হেনে চললেও জাপানের করপোরেট জগৎও এর প্রভাব থেকে মুক্ত নয়। টোকিওর শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত অনেক কোম্পানি ইতিমধ্যে এদের ব্যবসায়িক পারদর্শিতার হিসাব নিম্নমুখী করে নিয়েছে। ফলে ভবিষ্যতে শেয়ারবাজারের ওপর এর প্রভাব লক্ষ করা যাবে। অর্থনীতিবিদেরা ধারণা করছেন, করোনাভাইরাস সংকটের ফলে জাপানের বিক্রয় খাতের লোকসানের মোট পরিমাণ তিন লাখ কোটি ইয়েন বা ২ হাজার ৮০০ কোটি মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে যাবে এবং বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের নিট মুনাফা হ্রাস পাবে ২ লাখ কোটি ইয়েনের বেশি।
৩০ এপ্রিল পর্যন্ত দেউলিয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি হচ্ছে হোটেল ব্যবসা (২৪)। বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাসের তাণ্ডব চলতে থাকায় জাপানে বিদেশি পর্যটকের সংখ্যা এখন প্রায় শূন্যের কাছাকাছি নেমে এসেছে। অন্যদিকে জরুরি অবস্থায় লোকজন ঘরে বন্ধ থাকায় অভ্যন্তরীণ পর্যটন বেহাল অবস্থায়। ফলে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে মূলত ছোট আকারের অনেক হোটেল ও জাপানি ধাঁচের পান্থশালা।
একই অবস্থার মুখে পড়েছে রেস্টুরেন্ট ব্যবসাকেও। টিকে থাকতে তারা হোম ডেলিভারি সার্ভিসসহ নানা সেবা চালু করেছে। কিন্তু প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে অধিকাংশের জন্য সমস্যা হচ্ছে।
করোনা সংকট শুরু হওয়ার প্রাথমিক পর্যায়ে, ফেব্রুয়ারি মাসে করোনাভাইরাসের ফলে দেউলিয়া ঘোষণা করা কোম্পানির সংখ্যা ছিল মাত্র দুটি। মার্চ মাসে সেই সংখ্যা বেড়ে ২৩টিতে দাঁড়ায় এবং শোকো রিসার্চের সর্বশেষ হিসাবে এপ্রিল মাসের সংখ্যা দেখানো হয়েছে ৮৪টি। এই ১০৯টি কোম্পানির মধ্যে ২৬টি হচ্ছে টোকিও-ভিত্তিক এবং এর পরে আছে হোক্কাইডো, পর্যটকের আগমন শূন্যে ঠেকে যাওয়ায় ১১টি পর্যটকনির্ভর কোম্পানি, যেখানে ইতিমধ্যে নিজেদের ব্যবসা গুটিয়ে নিয়েছে।