Thank you for trying Sticky AMP!!

জাতিসংঘে ভারত-পাকিস্তানের তীব্র বিতণ্ডা

ছবি: রয়টার্স

জাতিসংঘে ভারত ও পাকিস্তান তীব্র বিতণ্ডায় জড়িয়েছে। গত শুক্রবার পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ভারতকে তীব্র তিরস্কার করে মুসলমানদের ওপর ‘সন্ত্রাসের রাজত্ব’ সৃষ্টির অভিযোগ তোলেন। এদিকে ভারত অভিযোগ করেছে, পাকিস্তান সন্ত্রাসীদের লালনপালন করে প্রতিবেশীদের ক্ষতি করানোর জন্য।

জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে দেওয়া বক্তব্যে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে ভারতকে মুসলমানশূন্য করার পরিকল্পনা করার অভিযোগও তোলেন।

ইমরান ভিডিও বার্তায় বলেন, ‘ভারতে এখন সবচেয়ে বাজে ও বিস্তৃত রূপে ইসলামফোবিয়া (ইসলামভীতি) কাজ করছে। ফ্যাসিস্ট আরএসএস-বিজেপি শাসন দ্বারা প্রচারিত ঘৃণায় ভরা হিন্দুত্ববাদী আদর্শ ভারতের ২০ কোটির বেশি মুসলমান সম্প্রদায়ের ওপর ভয় ও সহিংসতার রাজত্ব সৃষ্টি করেছে।’

ভারতের একমাত্র মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চল কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করেছে মোদি সরকার। সেখানে নাগরিকত্ব আইন চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এ আইনকে সমালোচকেরা বৈষম্যমূলক বলে অভিযোগ করছেন। দেশটিতে এ নিয়ে একাধিক ধর্মভিত্তিক সহিংসতা ঘটেছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বৈঠকের দিন ইমরান খান তাঁর বক্তব্য দেন। ইমরান খান অভিযোগ করেন, ভারতের সঙ্গে বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্যিক স্বার্থের কারণেই সেখানে মানবাধিকার লঙ্ঘনের সম্পূর্ণ দায়মুক্তি পেয়ে যাচ্ছে।

এদিকে জাতিসংঘে নিযুক্ত ভারতের ফার্স্ট সেক্রেটারি স্নেহা দুবে ইমরান খানের খোঁচার জবাব দেন। তিনি আল-কায়েদাকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দেওয়ার জন্য পাকিস্তানকে অভিযুক্ত করেন।

পাকিস্তানকে নিশানা করে স্নেহা বলেছেন, দেশটি নিজেকে অগ্নিনির্বাপক হিসেবে গোটা বিশ্বের কাছে তুলে ধরে। কিন্তু আসলে পাকিস্তান ছদ্মবেশী অগ্নিসংযোগকারী।
স্নেহা অভিযোগ করেন, পাকিস্তান সন্ত্রাসীদের তাদের বাড়ির উঠানে লালনপালন করে এই আশায় যে তারা শুধু প্রতিবেশীদের ক্ষতি করবে।

স্নেহা ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় পাকিস্তান কর্তৃক সংখ্যালঘুদের ওপর সহিংসতার পাশাপাশি এর ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক গণহত্যার বিষয়টিও তুলে ধরেন।
স্নেহা দুবে বলেন, ‘ভারতে বহুত্ববাদী গণতন্ত্র রয়েছে। সংখ্যালঘুদের একটি উল্লেখযোগ্য জনগোষ্ঠী, যারা দেশের সর্বোচ্চ পদে অধিষ্ঠিত হয়েছে।’

আফগানিস্তান নিয়ে ভারতের সুর চড়া

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান গত শুক্রবার জাতিসংঘে আফগানিস্তানের তালেবান সরকারের সঙ্গে কাজ করার জন্য বিশ্বের কাছে আহ্বান জানান। একই দিনে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আফগানিস্তান নিয়ে সুর চড়া করেছে ভারত। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে আলোচনার সময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি পাকিস্তান নিয়ে তাঁর উদ্বেগের কথা জানান। এ ছাড়াও হোয়াইট হাউসে শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, জাপান ও ভারতকে নিয়ে গঠিত কোয়াডের বৈঠকে অংশ নেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সেখানে তিনি তালেবাননিয়ন্ত্রিত আফগানিস্তান নিয়ে ভারতের উদ্বেগের বিষয়টি তুলে ধরেন।

বৈঠক শেষে ভারতের পররাষ্ট্রসচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা বলেছেন, আফগানিস্তান পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের ভূমিকা এবং সন্ত্রাসবাদ ইস্যুতে দেশটির অবস্থানের ওপর সতর্ক নজরদারি রাখতে হবে। তিনি অভিযোগ করে বলেন, আফগানিস্তানে নানা সংকটে ভূমিকা রেখেছে পাকিস্তান। এ বিষয়গুলোর ওপর নজর রাখবে কোয়াড।

জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে ইমরান খান বলেছেন, তালেবানের তত্ত্বাবধায়ক মন্ত্রিসভা নিয়ে বিশ্বব্যাপী হতাশা সত্ত্বেও গত মাসে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে তারা অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকার গঠন ও মানবাধিকার রক্ষায় প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

ইমরান খান বলেন, যদি বিশ্ব সম্প্রদায় তাদের উৎসাহিত করে, এবং আলোচনায় উৎসাহিত করে, তাহলে প্রত্যেকের জন্য জয়ী হওয়ার সুযোগ থাকবে।

আফগানিস্তানের জনগণের স্বার্থে বর্তমান সরকারকে শক্তিশালী ও স্থিতিশীল করার আহ্বান জানান ইমরান খান।