Thank you for trying Sticky AMP!!

জাপানে করোনায় মৃত্যুর চেয়ে আত্মহত্যা বেশি

জাপানে করোনা প্রতিরোধে মাস্ক পরে হাঁটছেন নারীরা

জাপানের এরিকো কোবায়াশি চারবার আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন। প্রথমবার ২২ বছর বয়সে, যখন টোকিওতে সারা দিন কাজ করেও বাড়িভাড়া ও মুদি কেনাকাটার টাকা পেতেন না তিনি। ওই ঘটনার পর হাসপাতালে তিন দিন অজ্ঞান ছিলেন তিনি। এখন ৪৩ বছর বয়সে এসে মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে বই লিখছেন। বেসরকারি সংস্থায় স্থায়ী চাকরিও পেয়েছেন। কিন্তু করোনার মহামারি আবার তাঁকে সেই অনুভূতি ফিরিয়ে দিচ্ছে। বার্তা সংস্থা সিএনএন জাপানের কোভিডের সময় আত্মহত্যা বেড়ে যাওয়া নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদনে কোবায়াশির কাহিনি তুলে ধরা হয়েছে।

এরিকো কোবায়াশি বলেন, ‘আমার বেতন কাটা হয়েছে। আমি সুড়ঙ্গের শেষে আলো দেখতে পাচ্ছি না। আমি ক্রমাগত একটি সমস্যার অনুভূতি টের পাচ্ছি। আমি আমার দারিদ্র্যের মধ্যে পড়তে যাচ্ছি।’

সিএনএন বলছে, বিশেষজ্ঞরা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যে মহামারি মানসিক স্বাস্থ্য সংকটের কারণ হতে পারে। ব্যাপক বেকারত্ব, সামাজিক বিচ্ছিন্নতা এবং উদ্বেগ বিশ্বব্যাপী মানুষের ওপর প্রভাব ফেলছে।

জাপানে করোনার জরুরি অবস্থা উঠে যাওয়ার পর সুরক্ষা মাস্ক পরে বাইরে বেরিয়েছেন লোকজন। টোকিও, জাপান, ২৬ মে

জাপানের সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত বছরের অক্টোবর মাসের তুলনায় এ বছরের অক্টোবর মাসে দেশটিতে আত্মহত্যায় বেশি মানুষ মারা গেছেন। জাপানের ন্যাশনাল পুলিশ এজেন্সির তথ্য অনুযায়ী, গত অক্টোবরে জাপানে আত্মহত্যা বেড়ে ২ হাজার ১৫৩ জনে পৌঁছেছে। অথচ গত শুক্রবার পর্যন্ত দেশটিতে কোভিড-১৯–এ মারা গেছেন ২ হাজার ৮৭ জন।

বিশ্বের মধ্যে বড় অর্থনীতির দেশ হিসেবে জাপান সময়মতো আত্মহত্যাবিষয়ক তথ্য প্রকাশ করে থাকে। যুক্তরাষ্ট্র সর্বশেষ ২০১৮ সালে এমন তথ্য প্রকাশ করেছিল।

সিএনএন বলছে, জাপানের তথ্য অন্য দেশগুলোয় করোনার মহামারি মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর কী ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে, সে সম্পর্কে জানাতে পারে। এ ছাড়া ঝুঁকিপূর্ণ গ্রুপ সম্পর্কেও জানাতে পারে।

টোকিওর ওয়াসেদা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক মিশিগো উয়েদা বলেন, ‘আমাদের লকডাউন নেই। অন্য দেশের তুলনায় কোভিডের প্রভাব স্বল্প। তারপরও আমরা ব্যাপক আত্মহত্যার ঘটনা ঘটতে দেখছি। এ থেকে বোঝা যায়, অন্যান্য দেশ ভবিষ্যতে আত্মহত্যার সংখ্যায় সমান, এমনকি আরও বড় বৃদ্ধি দেখতে পাবে।’

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, দীর্ঘদিন ধরেই বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ আত্মহত্যাপ্রবণ দেশ জাপান। ২০১৬ সালের তথ্য অনুসারে দেশটিতে প্রতি এক লাখে আত্মহত্যার হার ছিল সাড়ে ১৮ শতাংশ।

জাপানে আত্মহত্যার উচ্চহারের নানা জটিল কারণ রয়েছে। এর মধ্যে দীর্ঘ কর্মঘণ্টা, স্কুলের চাপ, সামাজিক বিচ্ছিন্নতার মতো নানা বিষয় রয়েছে।