Thank you for trying Sticky AMP!!

দক্ষিণ এশিয়ায় লকডাউন শিথিলে বাড়ছে সংক্রমণ

ভারতে অতিসংক্রমিত এলাকায় লকডাউনের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। মানুষের চলাচল নিয়ন্ত্রণ করতে সড়কে পুলিশি ব্যারিকেড বসানো হয়েছে। লকডাউন হওয়া একটি এলাকার বাসিন্দারা বের হলে তাঁদের বাড়িতে ফেরত পাঠান পুলিশ সদস্যরা। গতকাল পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের শিলিগুড়ি এলাকায়। ছবি: এএফপি

দক্ষিণ এশিয়ায় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরুর দিকে বিভিন্ন দেশই কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছিল। বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তানসহ সব কটি দেশের সরকারের কঠোর পদক্ষেপের কারণে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণেও ছিল। কিন্তু সম্প্রতি সব দেশ থেকেই এই লকডাউন তুলে দেওয়া হয়েছে। ফলে বাড়ছে সংক্রমণ। এক মাসের ব্যবধানে এই অঞ্চলে রোগী বেড়েছে সাত লাখ।

ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারস, দেশগুলোর গণমাধ্যমের খবর অনুসারে, ৫ জুন এই অঞ্চলে করোনা রোগী ছিল চার লাখ। গত ১১ জুন এই সংখ্যা পাঁচ লাখ ছাড়িয়ে যায়। আর গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা পর্যন্ত এই অঞ্চলে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১২ লাখ ৭৫ হাজারের বেশি।

এই অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি রোগী রয়েছে ভারতে। গতকাল পর্যন্ত দেশটিতে করোনা রোগীর সংখ্যা ছিল প্রায় ৮ লাখ। যদিও এক মাস আগে ১১ জুন দেশটিতে করোনা রোগী ছিল ২ লাখ ৮৮। কিছুদিন ধরেই দেশটিতে সংক্রমণের নতুন রেকর্ড হচ্ছে প্রায় প্রতিদিনই। সরকারি হিসাব অনুসারে, এই এক মাসের ব্যবধানে ভারতে মারা গেছেন প্রায় ১৩ হাজার মানুষ।

ভারতে করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে গত মার্চে গোটা দেশ লকডাউন করেছিল সরকার। এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, ৩১ মে লকডাউন তুলে নেওয়া হয়। সংক্রমিত রোগীর সংখ্যার ভিত্তিতে বিভিন্ন এলাকা চিহ্নিত করে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা চিহ্নিত করে সেগুলো লকডাউন করা হয়। এতে কোনো সুফল এখনো পাওয়া যায়নি। এ ছাড়া অভ্যন্তরীণ উড়োজাহাজ, ট্রেন ও বাস চলাচলও শুরু হয়েছে।

ডয়চে ভেলের খবরে বলা হয়েছে, চলতি সপ্তাহে রাশিয়াকে পেছনে ফেলে করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় তৃতীয় অবস্থানে উঠে এসেছে ভারত। দেশটিতে প্রতি তিন সপ্তাহের ব্যবধানে সংক্রমণের সংখ্যা দ্বিগুণ হচ্ছে। করোনার পরবর্তী হটস্পট বিবেচনা করা হচ্ছে ভারতকে।

>

এই অঞ্চলে এক মাসের ব্যবধানে রোগী বেড়েছে ৭ লাখ
এই এক মাসের ব্যবধানে ভারতে মারা গেছেন প্রায় ১৩ হাজার মানুষ

ভারত ছাড়াও পাকিস্তানে লাগামহীন বাড়ছে করোনার সংক্রমণ। দেশটিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ২ লাখ ৪৩ হাজার ছাড়িয়েছে। এ পর্যন্ত মারা গেছেন পাঁচ হাজারের বেশি মানুষ। যদিও এক মাস আগে রোগী ছিল প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার। ১১ জুন এ পর্যন্ত মারা গেছেন প্রায় আড়াই হাজার মানুষ। দেশটির সংক্রমণ বাড়তে থাকলেও বিভিন্ন প্রদেশে লকডাউন শিথিল করা হয়েছে। অভ্যন্তরীণ বিমান চলাচলও শুরু হয়েছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, এই লকডাউন শিথিল করার সময় সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, সংক্রমণ বাড়লে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এমন কোনো পদক্ষেপ এখনো দেশটিতে দেখা যায়নি। এ ছাড়া অধিক সংক্রমিত ৩০ শহর লকডাউন করা হয়েছে।

রোগীর সংখ্যার দিক থেকে পাকিস্তানের পরেই রয়েছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত করোনা শনাক্ত হয়েছে ১ লাখ ৭৮ হাজার ৪৪৩ জনের। আর মারা গেছেন ২ হাজার ২৭৫ জন। এরপর রয়েছে আফগানিস্তান, নেপাল, মালদ্বীপ, শ্রীলঙ্কা ও ভুটান। আফগানিস্তানে এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ৩৪ হাজারের বেশি মানুষ। মারা গেছেন প্রায় এক হাজার।

হিন্দুস্তান টাইমস বলছে, করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়া রোধে ২৪ মার্চ দেশজুড়ে লকডাউন কার্যকর করে নেপাল সরকার। সম্প্রতি সংক্রমণ বাড়তে শুরু করেছে। এরপরও কাঠমান্ডু উপত্যকাসহ অপেক্ষাকৃত কম ঝুঁকিপূর্ণ কয়েকটি এলাকায় লকডাউন শিথিল করার সিদ্ধান্ত নেয় দেশটির সরকার। দেশটিতে কোভিড-১৯ রোগে এ পর্যন্ত ১৬ হাজারের বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। মারা গেছেন ৩৫ জন। এক মাসের ব্যবধানে রোগী বেড়েছে প্রায় ১২ হাজার।

করোনা নিয়ন্ত্রণে রাখতে দক্ষিণ এশিয়ায় সাফল্যের পরিচয় দিয়েছে মালদ্বীপ, শ্রীলঙ্কা ও ভুটান। ভুটানে এখন পর্যন্ত কেউ মারা যাননি। আক্রান্ত হয়েছেন ৮০ জন। সুস্থ হয়েছেন ৫৫ জন। মালদ্বীপে এ পর্যন্ত আড়াই হাজারের বেশি মানুষ আক্রান্ত হলেও ২ হাজার ২০০ জনের বেশি সুস্থ হয়েছেন। মারা গেছেন মাত্র ১৩ জন। শ্রীলঙ্কার প্রায় আড়াই হাজার মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। অধিকাংশই সুস্থ হয়েছেন।