Thank you for trying Sticky AMP!!

করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে স্পেনে জরুরি অবস্থার পাশাপাশি রাতে কারফিউ জারি করা হয়েছে। স্পেন, ২৪ অক্টোবর

দ্বিতীয় ধাক্কা সামাল দিতে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে বিধিনিষেধ

ইউরোপের বিভিন্ন দেশে করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ধাক্কায় সংক্রমণ বাড়ছে অনেকটা লাগামহীনভাবে। সংক্রমণ ঠেকাতে কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে ইউরোপের দেশগুলো।

বিবিসি অনলাইনের প্রতিবেদনে জানানো হয়, করোনা মোকাবিলায় স্পেনে আবার জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। গতকাল রোববার দেশটির প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ এ ঘোষণা দেন।

পরিস্থিতি সামাল দিতে জরুরি অবস্থার পাশাপাশি স্পেনে রাতে জারি করা হয়েছে কারফিউ।

স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ জানিয়েছেন, জরুরি অবস্থার আওতায় স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন অঞ্চলের মধ্যে ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পারবে। এ ছাড়া গতকাল রাত থেকেই বলবৎ হওয়ার কথা কারফিউ।

করোনার প্রথম ধাক্কার সময়ও স্পেনে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছিল।

করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে ইতালির কর্তৃপক্ষও আবার বিভিন্ন বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। দেশটিতে সিনেমা হল, থিয়েটার, জিম ও সুইমিংপুল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে সন্ধ্যা ছয়টার মধ্যে পানশালা ও রেস্তোরাঁ বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

ইতালির কর্তৃপক্ষ গতকাল এ-সংক্রান্ত ঘোষণা দেয়। বিধিনিষেধের এই সিদ্ধান্তগুলো আজ সোমবার থেকে কার্যকর হচ্ছে।

ফ্রান্সেও করোনার সংক্রমণ ও মৃত্যু বাড়ছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে নতুন করে সতর্কবাণী দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ। করোনা মোকাবিলায় আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

ফ্রান্সে করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে রাতে কারফিউ জারি করা হয়েছে। এই কারফিউর আওতায় রয়েছে ৪ কোটি ৬০ লাখ মানুষ।

রাশিয়ায় করোনার টিকার প্রয়োগ শুরু হলেও দেশটিতে নতুন করে সংক্রমণ বাড়ছে। সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় মস্কোর ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে কর্মীদের বাসা থেকে কাজ করার সুযোগ দিতে বলা হয়েছে।

বিবিসি অনলাইনের প্রতিবেদনে বলা হয়, ইউরোপজুড়েই সংক্রমণ, হাসপাতালে ভর্তি ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিনস ইউনিভার্সিটি ও সিএনএনের বিশ্লেষণ অনুসারে, এখন সংক্রমণের হারে যেসব দেশ শীর্ষে, সেগুলোর মধ্যে ইউরোপেরই পাঁচ দেশ রয়েছে। দেশগুলো হলো চেক প্রজাতন্ত্র, বেলজিয়াম, নেদারল্যান্ডস, সুইজারল্যান্ড ও ফ্রান্স।

ইউরোপের দেশ যুক্তরাজ্য ও জার্মানিতেও সংক্রমণ বাড়ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিনস ইউনিভার্সিটির তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বে আজ সোমবার বাংলাদেশ সময় সকাল নয়টা নাগাদ করোনাভাইরাসে সংক্রমিত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৪ কোটি ২৯ লাখ ২৩ হাজার ৩১১। একই সময় পর্যন্ত বিশ্বে করোনায় মোট মারা গেছেন ১১ লাখ ৫২ হাজার ৯৭৮ জন। বিশ্বে করোনা থেকে সেরে ওঠা মানুষের সংখ্যা প্রায় ২ কোটি ৮৮ লাখ ৯৮ হাজার।

বিশ্বে করোনায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ যুক্তরাষ্ট্র। ক্ষতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় ভারতের অবস্থান দ্বিতীয়। ব্রাজিল আছে তৃতীয় অবস্থানে। তালিকায় রাশিয়ার অবস্থান চতুর্থ। ফ্রান্স পঞ্চম। আর্জেন্টিনা ষষ্ঠ। স্পেন সপ্তম। কলম্বিয়া অষ্টম। মেক্সিকো নবম। পেরু দশম। তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ১৮তম।

গত বছরের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। চীনে করোনায় প্রথম কোনো রোগীর মৃত্যু হয় ৯ জানুয়ারি। তবে তার ঘোষণা আসে ১১ জানুয়ারি। ১৩ জানুয়ারি চীনের বাইরে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয় থাইল্যান্ডে। পরে বিভিন্ন দেশে করোনা ছড়িয়ে পড়ে।

করোনার প্রাদুর্ভাবের পরিপ্রেক্ষিতে ৩০ জানুয়ারি বৈশ্বিক স্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। ২ ফেব্রুয়ারি চীনের বাইরে করোনায় প্রথম কোনো রোগীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটে ফিলিপাইনে। ১১ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা করোনাভাইরাস থেকে সৃষ্ট রোগের নামকরণ করে ‘কোভিড-১৯’। ১১ মার্চ করোনাকে বৈশ্বিক মহামারি ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।