Thank you for trying Sticky AMP!!

নাজিবের বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের নতুন অভিযোগ

মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক। ছবি: রয়টার্স

মালয়েশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট নাজিব রাজাকের বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের নতুন অভিযোগ আনা হয়েছে। আজ বুধবার তাঁর বিরুদ্ধে মুদ্রা পাচারবিরোধী আইনের ধারায় নতুন তিনটি অভিযোগ আনা হয় বলে বিবিসি অনলাইনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়। নাজিব রাজাক ক্ষমতায় থাকা অবস্থাতেই তাঁর বিরুদ্ধে এই দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে।

সরকারি তহবিল ওয়ান মালয়েশিয়ান ডেভেলপমেন্ট বারহাডের (ওয়ানএমডিবি) অর্থ তছরুপের অভিযোগে নাজিবকে গত মাসে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তিনি জামিনে মুক্তি পান। গতকাল মঙ্গলবার এ-সংক্রান্ত কেলেঙ্কারির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট মুদ্রা পাচারবিষয়ক তথ্য জানার জন্য নাজিবকে ডেকে পাঠায় দেশটির দুর্নীতি দমন সংস্থা। তাঁকে প্রায় ৪৫ মিনিট জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরে দুর্নীতি দমন সংস্থা এক বিবৃতিতে জানায়, ওয়ানএমডিবি তহবিল থেকে ভর্তুকি পাওয়া জ্বালানি প্রতিষ্ঠান এসআরসি ইন্টারন্যাশনালের সঙ্গে সম্পর্কের কারণে নাজিবের বিরুদ্ধে মুদ্রা পাচারবিরোধী আইনে নতুন তিনটি অভিযোগ আনা হবে। সেই ধারাবাহিকতায় আজ অভিযোগ আনা হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, নাজিব মালয়েশিয়ার ওয়ানএমডিবি কেলেঙ্কারিতে যুক্ত থেকে ওই তহবিল থেকে তিনটি লেনদেনের মাধ্যমে নিজের ব্যক্তিগত হিসাবে প্রায় ৪ কোটি ২০ লাখ রিঙ্গিত বা এক কোটি ডলার স্থানান্তর করেছেন।

২০০৯ সালে ওয়ানএমডিবি প্রতিষ্ঠা করেন নাজিব। রাজধানী কুয়ালালামপুরকে একটি অর্থনৈতিক কেন্দ্র পরিণত করতে ও কৌশলগত বিনিয়োগের মাধ্যমে অর্থনৈতিক গতি ত্বরান্বিত করায় লক্ষ্য ছিল এই তহবিলের। ২০১৫ সালে এই তহবিল নিয়ে প্রথম বিতর্ক শুরু হয়। ব্যাংক ও বন্ড হোল্ডারদের কাছ থেকে নেওয়া বিপুল পরিমাণ অর্থ পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ার পরই এই তহবিল নিয়ে বিতর্ক ওঠে। ওই বছর একটি প্রতিবেদনে ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল বলে, ২০১৩ সালে নাজিব ৬৮ কোটি ১০ লাখ ডলার পেয়েছিলেন। প্রাথমিকভাবে অস্বীকার করা হলেও পরে সরকার দাবি করে, সৌদি আরবের রাজপরিবারের কাছ থেকে ‘ব্যক্তিগত অনুদান’ হিসেবে এই অর্থ পাওয়া যায়।

মালয়েশিয়ার আইন অনুযায়ী, অর্থ পাচারের মামলায় ১৫ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডের পাশাপাশি জরিমানাও করা হয়ে থাকে। আর পাচারকৃত অর্থের পাঁচ গুণ বা ৫০ লাখ রিঙ্গিতের মধ্যে যেটা বেশি হবে, সেটাই হলো জরিমানার পরিমাণ।

গত মে মাসের জাতীয় নির্বাচনে নাজিবের দল ইউনাইটেড মালয়েস ন্যাশনাল অর্গানাইজেশন (ইউএমএনও) বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ৯৩ বছর বয়সী মাহাথির মোহাম্মদের নেতৃত্বাধীন জোটের কাছে ধরাশায়ী হয়। এরপর থেকেই নতুন সরকারের দুর্নীতিবিরোধী তৎপরতা, বিশেষ করে ওয়ানএমডিবি দুর্নীতি নিয়ে জোরেশোরে তদন্ত চলছিল। তদন্তের অংশ হিসেবে নাজিব ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের বাড়িঘর তল্লাশি করে বিপুল পরিমাণ দেশি-বিদেশি মুদ্রা, অলংকার, দামি হাতব্যাগসহ নানা পণ্য জব্দ করে পুলিশ।

এ ছাড়া নাজিব, তাঁর স্ত্রী রোসমাহ মনসুর এবং নাজিবের সৎছেলে রিজা আজিজকে কয়েক দফায় জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়। ওয়ানএমডিবি দুর্নীতির তদন্তের অংশ হিসেবে ৪০৮টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করে কর্তৃপক্ষ। গত জুলাইতে ৬৪ বছর বয়সী নাজিবকে তাঁর বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।