Thank you for trying Sticky AMP!!

পাল্টাপাল্টি বিক্ষোভ, উত্তাল ইরান

গত কয়েক দিনে সরকারবিরোধী ও সরকারপক্ষের পাল্টাপাল্টি বিক্ষোভে অস্থিতিশীল হয়ে পড়েছে ইরান। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি এবং দুর্নীতির অভিযোগে বিভিন্ন শহরে সরকারের বিরুদ্ধে দুই দিনের বিরল বিক্ষোভের পর গতকাল শনিবার সরকারের সমর্থকেরাও রাজপথে নেমে এসেছে।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে জনগণকে যেকোনো ধরনের ‘বেআইনি সমাবেশ’ এড়িয়ে চলার আহ্বান জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। আর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অজ্ঞাত অ্যাকাউন্ট থেকে বিক্ষোভ আরও ছড়িয়ে দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।

এদিকে সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীদের ধরপাকড়ের ঘটনায় ইরানি কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হুঁশিয়ারি, ‘বিশ্ব কিন্তু পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে।’

বিক্ষোভ শুরু বৃহস্পতিবার, উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় মাশহাদ শহরে। কে বা কারা বিক্ষোভের সূত্রপাত করেছে, তা স্পষ্ট নয়। তবে দেশটির ভাইস প্রেসিডেন্ট ইশাক জাহাঙ্গিরির ধারণা, দেশটির কট্টরপন্থী ও অতিরক্ষণশীল বিরোধীরা সম্ভবত প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানির বিরুদ্ধে এই বিক্ষোভের উদ্যোগ নিয়েছিল, কিন্তু একপর্যায়ে তারা বিক্ষোভকারীদের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে।

মাশহাদ শহরে বহু লোক রাস্তায় নেমে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদ করে এবং হাসান রুহানির বিরুদ্ধে স্লোগান দেয়। সেখান থেকে বৃহস্পতিবার ৫২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। শুক্রবার বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে রাজধানী তেহরান এবং কেরমানশাহ, ইস্পাহান, কোম, কাজভিন, হামেদান, রাসত শহরে। কেরমানশাহে ৩০০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশ বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দিতে জলকামান ব্যবহার করে।

কোনো কোনো বিক্ষোভ থেকে ১৯৭৯ সালে ইসলামিক বিপ্লবের আগের রাজতন্ত্রের পক্ষে স্লোগান দেওয়া হয় বলে জানা গেছে।

২০০৯ সালের বিতর্কিত নির্বাচনের পর এবারের বিক্ষোভই জন–অসন্তোষের সবচেয়ে ব্যাপক প্রকাশ। প্রথম দিকে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে বিক্ষোভ শুরু হলেও পরে তা দেশটির ধর্মীয় অনুশাসন ও সরকারি নীতিবিরোধী বিক্ষোভে রূপ নেয়। ক্রমে তা দেশটির উত্তর-পূর্বাঞ্চলের অন্যান্য শহরে ছড়িয়ে পড়ে। এসব বিক্ষোভ থেকে রাজবন্দীদের মুক্তি ও পুলিশি নির্যাতন বন্ধের দাবিও জানানো হয়।

ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ড এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, নতুন করে শুরু বিক্ষোভের মাধ্যমে ২০০৯ সালে মতো অস্থির পরিস্থিতি তৈরি করার চেষ্টা ছিল। কিন্তু ইরানের জনগণ দেশকে ক্ষতিগ্রস্ত হতে দেবে না। তৎকালীন প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আহমাদিনেজাদ অনিয়মের মাধ্যমে দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন, এই অভিযোগে ২০০৯ সালে আট মাসের বিক্ষোভে অস্থিতিশীল হয়ে পড়েছিল ইরান।

সর্বশেষ দুই দিনের বিক্ষোভের পর গতকাল বড় ধরনের শক্তি প্রদর্শন করে সরকারপন্থীরা। তেহরানসহ বিভিন্ন শহরে হাজারো সমর্থক রাস্তায় নেমে আসে। জনসমাবেশ সম্প্রচার করে রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন। 

হোয়াইট হাউস বলেছে, ইরানে জনগণ শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ করে সরকারের দুর্নীতি ও দুর্বল আর্থিক ব্যবস্থার এবং সন্ত্রাসবাদকে অর্থের জোগানের প্রতিবাদ জানিয়েছে। শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের গ্রেপ্তারের নিন্দা জানাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। আর ট্রাম্প টুইটার বার্তায় বলেন, ইরানের জনগণের অধিকার, বিশেষ করে মতপ্রকাশের অধিকারের প্রতি সম্মান দেখানো উচিত সরকারের। বিশ্ব কিন্তু পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে।