Thank you for trying Sticky AMP!!

বেইজিংয়ে ফেরা বাসিন্দাদের ১৪ দিন আলাদা থাকার নির্দেশ

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে চীনে মৃত ব্যক্তির সংখ্যা বেড়ে ১ হাজার ৫২৩–এ পৌঁছেছে। ছবি: রয়টার্স

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে চীনের বেইজিং শহরে ফিরে আসা প্রত্যেককে ১৪ দিন পৃথক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে এ নির্দেশের তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।

আজ শনিবার বিবিসি অনলাইনের খবরে চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের তথ্যের বরাতে বলা হয়, ছুটি কাটিয়ে চীনের রাজধানী বেইজিংয়ে ফিরে আসা বাসিন্দাদের নিজস্ব কোয়ারেন্টাইন (যে সময় পর্যন্ত সংক্রমণের আশঙ্কায় পৃথক রাখা হয়) বা নির্ধারিত কোয়ারেন্টাইন ভেন্যুতে চলে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

চীনের উল্লেখযোগ্য উৎসব চান্দ্রবর্ষের ছুটি কাটিয়ে নানা প্রান্ত থেকে শহরে ফেরা শুরু করেছে বেইজিংয়ের বাসিন্দারা। এর পরিপ্রেক্ষিতে বেইজিংয়ের ভাইরাস সুরক্ষা ওয়ার্কিং গ্রুপ গতকাল শুক্রবার এ নির্দেশ জারি করে। প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে এবার সরকার চান্দ্রবর্ষের ছুটি বাড়িয়ে দেয়। বেইজিংয়ে দুই কোটিরও বেশি লোকের বসবাস রয়েছে।

চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহর থেকে উৎপত্তি হওয়া করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগটিকে ‘কোভিড-১৯’ নামকরণ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ইতিমধ্যে দেড় হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।

চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন আজ শনিবার জানিয়েছে, আরও ১৪৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে চারজন ছাড়া সবাই হুবেই প্রদেশের। মোট মৃত ব্যক্তির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৫২৩। নতুন করে আরও ২ হাজার ৬৪১ জন আক্রান্ত হয়েছেন। মোট আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৬ হাজার ৪৯২।

এদিকে মিসর জানিয়েছে, সেখানে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে। এর ফলে আফ্রিকায় প্রথম করোনাভাইরাস রোগী শনাক্ত করা হলো। মিসরের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আক্রান্ত ব্যক্তি একজন বিদেশি। তবে কোন দেশের নাগরিক, তা প্রকাশ করা হয়নি। মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা বিষয়টি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে অবহিত করেছে। আক্রান্ত ব্যক্তিকে পৃথক রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

এর আগে বিশেজ্ঞরা সতর্ক করেছিলেন এই বলে যে চীনের সঙ্গে মিসরের বন্ধন যেভাবে বাড়ছে, তাতে মিসরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ার বিষয়টি খুব দূরে নয়।

চীনের বাইরে ২৪টি দেশে ৫০০ জনেরও বেশি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে হংকং, ফিলিপাইন ও জাপানে একজন করে মারা গেছেন।

ডব্লিউএইচওর প্রধান টেড্রস আধানম গেব্রেইয়েসাস জানিয়েছেন, কোভিড-১৯ কীভাবে ছড়িয়ে পড়ছে ও এর ভয়াবহতার ওপর আলোকপাত করে প্রাদুর্ভাবটির বিষয়ে তদন্ত করতে এ সপ্তাহে ডব্লিউএইচও পরিচালিত একটি মিশন চীনে যাচ্ছে। এই মিশনে ডব্লিউএইচওর ১২ জন সদস্য এবং তাদের ১২ জন চীনা অংশীদারি বিশেষজ্ঞ থাকছেন। মিশনের আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা দেখবেন, কীভাবে, কখন ১ হাজার ৭০০–এর বেশি স্বাস্থ্যকর্মী ভাইরাসটিতে সংক্রমিত হয়েছিলেন।

ডব্লিউএইচওর জরুরি স্বাস্থ্য কর্মসূচির নির্বাহী পরিচালক মাইক রায়ান বলেছেন, বিশেষভাবে নজর দেওয়া হবে ভাইরাসটি কীভাবে একজন থেকে অন্যজনে ছড়ায়, রোগটির ভয়াবহতা এবং রোগটির বিরুদ্ধে নেওয়া পদক্ষেপের প্রভাবের ওপর।

চীন জানিয়েছে, সংক্রমিত লোকদের সেবা দিতে গিয়ে ছয়জন স্বাস্থ্যকর্মী করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।

৭ ফেব্রুয়ারি উহান সেন্ট্রাল হাসপাতালের চিকিৎসক লি ওয়েনলিয়াংয়ের মৃত্যুর পর স্বাস্থ্যকর্মীদের দুরবস্থার বিষয়টি সামনে আসে। লি প্রথম ব্যক্তি, যিনি ৩০ ডিসেম্বর ভাইরাসটি সম্পর্কে সতর্ক করেন। তিনি তাঁর সহকর্মীদের সতর্ক করায় পুলিশ তাঁকে ‘ভুয়া মন্তব্য’ করার অভিযোগ তুলে থামতে বলে। লির মৃত্যুর খবরে চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ওয়েবুতে রাগে–ক্ষোভে ফেটে পড়েন লোকজন।