Thank you for trying Sticky AMP!!

মিয়ানমারে করোনায় মৃত্যু নিয়ে খবর প্রকাশে সম্পাদকের ২ বছরের জেল

মিয়ানমারে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ কম বলে দাবি করা হচ্ছে। ছবি: এএফপি

মিয়ানমারে করোনাভাইরাসে মৃত্যু নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করায় এক সম্পাদককে দুই বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, তাঁর বার্তা সংস্থার করা করোনাভাইরাসে মৃত্যুর তথ্য মিথ্যা বলে প্রমাণিত হওয়ায় তিনি সাজা পেয়েছেন। আজ শুক্রবার ওই সম্পাদকের আইনজীবী এ কথা জানান।

মিয়ানমারে করোনাভাইরাসে ১৯৯ জন সংক্রমিত হয়েছেন। মারা গেছেন ছয়জন। যদিও অনেক কম পরীক্ষা করায় বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন যে প্রকৃত পরিসংখ্যান এর চেয়ে অনেক বেশি হবে।

প্রধান সম্পাদক জ ইয়ে হতেতকে ১৩ মে গ্রেপ্তার করা হয়। একই দিন তাঁর অনলাইন সংবাদ সংস্থা দায়ে পিয়াও একটি সংবাদ প্রকাশ করে, যাতে অভিযোগ করা হয়, পূর্ব কারেন রাজ্যে কোভিড -১৯ এর কারণে একটি মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। মিয়ানমারের কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে খবরটিকে ভুয়া বলে দাবি করা হচ্ছে।

ওই খবর প্রকাশের মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যে তাঁকে বিচারের মুখোমুখি করা হয়। মিয়ানমারে যেখানে বিচারের জন্য দীর্ঘ অপেক্ষা করতে হয়, সেখানে এত দ্রুত বিচারের ফয়সালা সবাইকে চমকে দিয়েছে। শুক্রবার জ ইয়ের আইনজীবী মাইন্ত থুজার মাও বলেন, তাকে ৫০৫ (বি) এর অধীনে দুই বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

কুখ্যাত ধারা ৫০৫ (বি) একটি অস্পষ্ট কথিত আইন, যা সাংবাদিকদের এবং আন্দোলনকর্মীদের বক্তব্য দেওয়ার জন্য প্রায়ই প্রয়োগ করা হয়। সম্পাদকের বিচার এত দ্রুত কেন করা হয়েছে, তা জানা যায়নি।

করোনাভাইরাসের কারণে গত এপ্রিলে থাইল্যান্ডের চাকরি হারানেোর পর কারেন সীমান্তে ১৬ হাজার অভিবাসী শ্রমিক ফিরতে শুরু করলে সীমান্ত বন্ধ করে দেয় মিয়ানমার। এ রাজ্যে মাত্র দুজন করোনা সংক্রমিত বলে দেখানো হয়েছে।

দেশটির সরকার সতর্ক করে বলেছে, করোনা নিয়ে কেউ ভুল তথ্য ছড়ালে শাস্তি পেতে হবে।

এএফপি জানিয়েছে, দেশটি সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণে নতুন আইন প্রণয়ন করছে, যা জনগণের আতঙ্কের কারণ বলে মনে করা হচ্ছে। এটি সাংবাদিকদের অপরাধী হিসেবে দেখানো আরও সহজ করে তুলবে।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচের ডেপুটি এশিয়ার পরিচালক ফিল রবার্টসন এই পদক্ষেপটিকে একটি দুর্যোগের রেসিপি বলে চিহ্নিত করেছেন এবং মানুষকে প্রয়োজনীয় তথ্য দিতে অস্বীকার করার বিরুদ্ধে সতর্ক করেছেন।

অবশ্য মিয়ানমারে এ ধরনের ঘটনা একেবারে নতুন নয়। মিয়ানমারে রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করায় দণ্ড দেওয়া হয়েছিল রয়টার্সের দুই সাংবাদিককে। এই দুই সাংবাদিক হলেন ওয়া লোন (৩৩) ও কিয়াও সো ওও (২৯)। ১০ রোহিঙ্গা পুরুষ ও যুবককে হত্যার ঘটনা তদন্ত করার সময় ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। সরকারি গোপনীয়তা আইন ভঙ্গের অভিযোগে দুজনকে সাত বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। ১৭ মাসের বেশি সময় ধরে বন্দী থাকার পর তাঁদের বিচার করা হয়।

২০১৫ সালে মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট থেইন সেইনকে অবমাননার অভিযোগে সাপ্তাহিক মিয়ানমার হেরাল্ড পত্রিকার দুই সাংবাদিকের জরিমানা করা হয়। পত্রিকাটি মিয়ানমারের প্রেসিডেন্টকে নিয়ে সমালোচনামূলক একটি সাক্ষাৎকার প্রকাশ করেছিল। এতে দেশটির গণমাধ্যম আইন লঙ্ঘন এবং প্রেসিডেন্টের অবমাননা হয়েছে—অভিযোগ করে তথ্য মন্ত্রণালয়।