Thank you for trying Sticky AMP!!

শিশুসাহিত্যে 'নোবেল' পেলেন ইকো কাদোনো

গল্পে ছোট্ট জাদুকরি তার সঙ্গী কালো বিড়াল নিয়ে উড়ে বেড়ায়। তার বাহন থাকে রাস্তা ঝাড়ু দেওয়ার ঝাড়ুর হাতল।

ইকো কাদোনোর লেখা ছোট্ট জাদুকরি ও তার সঙ্গী কালো বিড়ালের গল্প ‘কিকিস ডেলিভারি সার্ভিস’ যুগ যুগ ধরে জাপানের পাঠকদের তৃষ্ণা মিটিয়ে আসছে। এবার এ গল্প ইকো কাদোনোকে এনে দিয়েছে শিশুসাহিত্যের সর্বোচ্চ পদক।

গত মাসে ৮৩ বছর বয়সী এই লেখিকা ২০১৮ হান্স ক্রিশ্চিয়ান অ্যান্ডারসন সম্মানে ভূষিত হন। ইন্টারন্যাশনাল বোর্ড অন বুকস ফর ইয়ং পিপল এই পদক দেয়। এই পদককে অনেক সময় সাহিত্যের লিটল নোবেল প্রাইজ বলা হয়। বিবিসির এক খবরে এ তথ্য জানানো হয়।

জুরিমণ্ডলী ছবির এই বই ও উপন্যাসের কাহিনিকে ‘চরম আকর্ষণীয়’ বলে উল্লেখ করেছেন।

পুরস্কার নেওয়ার সময় কাদোনো বলেন, ‘আমি কোনো দিন চিন্তাও করিনি এ পুরস্কার পাব। এটা সত্যি সম্মানের...পুরো পৃথিবীর অনেক মানুষ এটি পড়েছে।’ তিনি আরও বলেন, এ গল্প তাঁর নয়, বরং পাঠকদের।

উপন্যাসটি লেখার পেছনে ইকো কাদোনোর অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করেছে তাঁর ছোট্ট মেয়ের আঁকা এক ছবি। তাঁর মেয়ে ছোট্ট এক জাদুকরির ছবি এঁকেছিল, যে সুরে সুরে ঘুরে বেড়ায়।

আসাহি শিম্বুন পত্রিকাকে কাদোনো বলেন, ‘আমি যখন গল্পটি লেখা শুরু করি, তখন আমার মেয়ের যে বয়স ছিল, তা মাথায় রেখে কিকিকেও ওই বয়সী চরিত্র তৈরি করি—শৈশব আর বড়বেলার মাঝামাঝি সময়টা।’

কাদানোর জন্ম টোকিওতে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ১০ বছর বয়সে তাঁকে নিজের বাড়ি ছাড়তে হয়েছিল। এ সময় তাঁকে জাপানের উত্তরাঞ্চলে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। যুদ্ধ শেষে জাপান বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন তিনি। পরে কিছু সময়ের জন্য তিনি ব্রাজিলে থিতু হন।

ইকো কাদোনো

যুদ্ধের সময়কার ও ব্রাজিলের দিনগুলো নিয়ে তাঁর ‘ফরেস্ট অব টানেল’, ‘ব্রাজিল অ্যান্ড মাই ফ্রেন্ড লুইজিনহো’সহ অনেক বই রয়েছে।
এই লেখিকা নিজেকে ‘দেরিতে প্রস্ফুটিত’ বলে উল্লেখ করেন। ৩৫ বছর বয়সে তাঁর প্রথম বই প্রকাশিত হয়।
সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘আমি একজন লেখকের চেয়ে বেশি করে একজন পাঠক ছিলাম।...পরে বার কয়েক চেষ্টার পর অনুধাবন করলাম আমি লিখতে পছন্দ করি। আমার লেখা প্রকাশিত না হলেও আমি সারা জীবন লিখে যেতে চাই।’

এরই মধ্যে ছবির বইসহ তাঁর প্রায় ২০০টি মৌলিক লেখা প্রকাশিত হয়েছে। রয়েছে তরুণেদর জন্য গল্প, রচনা এবং প্রবন্ধ। তবে সবকিছু ছাপিয়ে তাঁর বিখাত কাজ ‘কিকিস ডেলেভারি সার্ভিস’।

এরই মধ্যে জাপানের অ্যানিমেশন হাউস স্টুডিও ঘিবলির বিখ্যাত পরিচালক হায়য়ো মিয়াজাকি এ নিয়ে অ্যানিমেশন চলচ্চিত্র বানিয়েছেন।

কাদোনোর এডিটর তোমোকো হোনোবে বলেন, ‘কিকিস ডেলিভারি সার্ভিস’ শিশুদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস তৈরি করে। তারা বিশ্বাস করে, প্রত্যেকের মধ্যে নিজস্ব কিছু জাদুর ক্ষমতা আছে।