Thank you for trying Sticky AMP!!

সুন্দর বাড়ি পড়ে আছে, থাকার মানুষ নেই

জাপানে সুন্দর অনেক বাড়ি পড়ে আছে, যেগুলোতে থাকার মানুষ নেই। জনসংখ্যা কমে যাওয়ায় এসব বাড়ি এখন ভুতুড়ে বাড়ি।

বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশে জনসংখ্যা কমে যাওয়ার বিষয়টি উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে জাপানের নাম সবার আগে আসে। ২০১৮ সালে দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে কমসংখ্যক শিশু জন্মগ্রহণ করেছে। দেশটিতে মৃত্যু হার জন্মহারকে ছাড়িয়ে গেছে।

জনসংখ্যা কমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে উদ্বেগ তৈরি হচ্ছে বাসস্থান নিয়ে। দিন দিন বাড়ির চাহিদা কমছে। ইতিমধ্যে জাপানে এ সমস্যা দেখা দিয়েছে। বিবিসি অনলাইনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

জাপানে বয়স্ক মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। দেশটির মোট জনসংখ্যার ২০ শতাংশের বেশি মানুষের বয়স ৭০ বছর বা তার বেশি। জন্মহার কমে যাওয়ায় তারা সম্পদ নিয়ে সমস্যায় রয়েছেন। সেখানে প্রয়োজনের তুলনায় বাড়ি বেশি হয়ে গেছে। এসব বাড়িতে বসবাস করার লোক নেই। এ ধরনের খালি বাড়িগুলো ‘একিয়া’ নামে পরিচিত। কোনো উত্তরসূরি না থাকায় বা বাড়ি ভাড়া না হওয়ায় একিয়ার পরিমাণ বাড়ছেই।

গত বছরে জাপানে একিয়া হিসেবে বাড়ির নিবন্ধনের সংখ্যা ১৩ দশমিক ৬ শতাংশ ছাড়িয়ে যায়। এ সমস্যা আরও বাড়বে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়। জাপানের ওই বাড়ি বিদেশি কোনো আত্মীয় সেকেন্ড হোম করের কারণে দাবি করে না। তবে তা দাবি করা মানুষের সংখ্যাও নগণ্য।

তরুণ প্রজন্ম বিভিন্ন গ্রাম ছেড়ে শহরে নিজেরা কাজকর্ম শুরু করায় অনেক গ্রামাঞ্চলে এখন একিয়ার সংখ্যা ব্যাপক হারে বেড়ে গেছে। এসব বাড়ির দাম একেবারে কম হওয়ার পরও তা কিনতেও কেউ আগ্রহ দেখান না। এ কারণে একিয়া ব্যাংকের কাছে এসব বাড়ি বোঝা হয়ে গেছে। যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতি না পাওয়ায় তারা এসব বাড়ি নতুন করে তৈরি বা ভেঙে ফেলতেও পারছে না। স্থানীয় কাউন্সিলের পক্ষ থেকে প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় এসব বাড়ি যাতে বোঝা না হয়ে দাঁড়ায়, তা নিশ্চিত করতে চাপ বাড়ছে। কয়েক দশকের পুরোনো একিয়াগুলো নিয়ে ঝুঁকি বেশি।

টোকিওর উত্তর-পূর্ব পাহাড়ি শহরাঞ্চলে শান্ত অকুতামা অঞ্চলে একিয়ার পরিমাণ সবচেয়ে বেশি বেড়েছে। এটি শহর থেকে মাত্র ২ ঘণ্টার পথ। বছর চারেক আগে অকুতামা কাউন্সিল এসব বাড়ি ১৫ বছর মাসিক ভাড়া নেওয়ার পর পুরোপুরি ভাড়াটেকে দেওয়ার পরিকল্পনা গ্রহণ করে। এ ছাড়া নানা সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার ঘোষণার পরও সেখানে নতুন বাসিন্দা পাওয়া যাচ্ছে না।

টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক চাই নোজাওয়া বলেন, বড় এবং কেন্দ্রীয় এলাকাগুলোতে একিয়া সমস্যা বাড়বে। জনসংখ্যা কমে যাওয়ায় এর কোনো সমাধান পাওয়া যায়নি। এর সমাধান হচ্ছে নতুন প্রজন্ম তৈরি। তা না হলে শহর আর ভবন খালি হতেই থাকবে।