Thank you for trying Sticky AMP!!

হংকংয়ে বিক্ষোভে ঢোকানো হয়েছিল ছদ্মবেশী পুলিশ!

হংকংয়ের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ঘেরাও করে ফ্লাইট বাতিল করতে বাধ্য করেছে বিক্ষোভকারীরা। ছবি: বিবিসির সৌজন্যে।

হংকংয়ে গত রোববার শহর-কাঁপানো সরকারবিরোধী আন্দোলন ঠেকাতে বিক্ষোভে ঢোকানো হয়েছিল ছদ্মবেশী পুলিশ। আন্দোলনের সময়ের এক ভিডিও থেকে ঘটনাটি প্রকাশ হয়ে পড়ে। চাপে পড়ে এখন পুলিশও স্বীকার করেছে এ কথা। তবে এর পক্ষে তাদের ব্যাখ্যা হলো, ‘চরম সহিংস দাঙ্গাকারীদের’ লক্ষ্য করে ‘ফাঁদ পাতার অভিযানে’ পাঠানো হয়েছিল ছদ্মবেশী পুলিশ।

আজ মঙ্গলবার বিবিসি অনলাইনের খবরে বলা হয়, আন্দোলনের সময় সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারী হিসেবে ছদ্মবেশী পুলিশ মোতায়েন করার কথা স্বীকার করেছে হংকং পুলিশ। গত রোববার বিক্ষোভের সময়ের এক ভিডিও থেকে ঘটনাটি প্রকাশ হয়। এতে দেখা যায়, ছদ্মবেশী পুলিশ বিক্ষোভকারীদের গ্রেপ্তার করছে। এ ঘটনা তদন্তের দাবি জানিয়েছে বিক্ষোভকারীরা। এর পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল সোমবার সংবাদ সম্মেলন করে পুলিশ।

হংকংয়ের গণ-আন্দোলন ও বিক্ষোভ শেষ হওয়ার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। যে বিতর্কিত প্রত্যর্পণ বিলের বিরুদ্ধে দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে আন্দোলন চলছে, ইতিমধ্যে তা স্থগিত করা হয়েছে।

বিক্ষোভকারীরা গতকাল হংকংয়ের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ঘেরাও করে ফ্লাইট বাতিল করতে বাধ্য করে। কর্তৃপক্ষ বলছে, বিমানবন্দরের নিয়মিত কার্যক্রম শুরু হয়েছে। তারপরও কিছু এয়ারলাইনস আজ কয়েক শ ফ্লাইট বাতিল করেছে।

গতকালের সংবাদ সম্মেলনে হংকংয়ের ডেপুটি পুলিশ কমিশনার তাং পিং-কেইং ছদ্মবেশী পুলিশ নিয়োগের বিষয়ে আত্মপক্ষ সমর্থন করে বলেন, ‘আমি এটুকু বলতে পারি, আমাদের পুলিশ ছদ্মবেশে কাউকে উসকানি দেয়নি। আমরা তাদের ঝামেলা বাধানোর নির্দেশ দিইনি। পুলিশ চরম সহিংস দাঙ্গাকারীদের লক্ষ্য করে অভিযান চালাচ্ছে। আন্দোলনকারীদের মধ্যে যারা ইট-পাথর ছুড়েছে বা পেট্রলবোমা নিক্ষেপ করেছে, কেবল তাদের বিরুদ্ধেই পদক্ষেপ নিচ্ছে পুলিশ।’

সহকারী পুলিশ কমিশনার মাক চিন-হোও রোববারের সহিংসতার বিষয়ে বিভিন্ন প্রশ্নের মুখে পড়েছিলেন। তিনি বলেন, পুলিশের গুলিতে এক নারী আহত হয়েছেন—এমন কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

চোখে গুলিবিদ্ধ এক নারীর ছবি সপ্তাহজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। এ ঘটনায় তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে হংকং পুলিশ। এর প্রতিক্রিয়ায় গতকাল শহরের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে চোখে ব্যান্ডেজ বেঁধে প্রতিবাদ জানাতে দেখা যায় বিক্ষোভকারীদের।

রোববার বেশ কয়েকটি কেন্দ্রীয় জেলায় পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ হয়। বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ রাবার বুলেট এবং কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করে। ভিডিওতে দেখা গেছে, বিক্ষোভকারীদের ঘেরাও করা রেলওয়ে স্টেশনে পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করছে এবং আন্দোলনকারীদের লাঠিপেটা করছে। এ সময় সংঘর্ষে পুলিশ সদস্যসহ অনেকে আহত হয়।

এদিকে গতকাল হাজার হাজার বিক্ষোভকারী হংকংয়ের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দখল করে নিলে কর্তৃপক্ষ সমস্ত ফ্লাইট বাতিল করতে বাধ্য হয়। এ সময় ১৬০টিরও বেশি ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। কর্মকর্তারা একে ‘চূড়ান্ত বিপর্যয়’ বলে অভিহিত করেছেন।

সন্ধ্যায় পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ধরে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছে— এমন গুজব ছড়িয়ে পড়লে হাজারো মানুষ মধ্যরাতে হেঁটে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।

বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ আজ ভোরে তাদের স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরুর কথা জানায়। তবে ফ্লাইটগুলোর সময়সূচিতে ব্যাপক পরিবর্তন আসতে পারে বলে সতর্ক করেছে তারা।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, আজ সকালে অর্ধশতাধিক বিক্ষোভকারী টার্মিনালগুলোতে অবস্থান করে। বিমানবন্দরের টিকিট কাউন্টারে শতাধিক যাত্রী দাঁড়িয়ে ছিলেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক যাত্রী বিবিসিকে জানান, বিমানবন্দরে তাঁদের জন্য কোনো খাবার বা পানির ব্যবস্থা নেই। বিমানবন্দরের কর্মীরা তাঁদের কোনো সহায়তা করছে না। যাত্রীরা কনভেয়র বেল্ট এবং মেঝেতে ঘুমাতে বাধ্য হচ্ছেন।