Thank you for trying Sticky AMP!!

হরমুজ প্রণালি থেকে ব্রিটিশ ট্যাংকার জব্দ করেছে ইরান

স্টেনা ইমপেরো। ছবি: বিবিসির সৌজন্যে

উপসাগরীয় এলাকায় হরমুজ প্রণালি থেকে ইরান স্টেনা ইমপেরো নামের ব্রিটিশ পতাকাবাহী ট্যাংকার জব্দ করেছে। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে যুক্তরাজ্য। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেরেমি হান্ট হুমকি দিয়েছেন, ইরান ট্যাংকারটিকে মুক্ত করে না দিলে এর ‘পরিণতি গুরুতর’ হবে।

আজ শনিবার বিবিসি অনলাইনের খবরে জানানো হয়, সবশেষ এই পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি এখন যুক্তরাজ্যের সঙ্গেও ইরানের চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, স্টেনা ইমপেরো ট্যাংকারটিকে সাগরে চারটি যান ও আকাশে হেলিকপ্টার ঘিরে রেখেছে।

ট্যাংকার কর্তৃপক্ষ জানায়, যানটিতে ২৩ জন ক্রু আছেন, এখন সেটি উত্তরে ইরানের দিকে রয়েছে। তারা ট্যাংকারের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করতে পারছে না।

তবে তেলবাহী ট্যাংকার মেসডারের গ্লাসগো (স্কটল্যান্ডের) ভিত্তিক অপারেটর নরবাল্ক শিপিং জানিয়েছে, সশস্ত্র রক্ষীরা ট্যাংকারটি আটকের পর তারা স্থানীয় সময় গতকাল শুক্রবার বিকেলে ট্যাংকারের সঙ্গে যোগাযোগ পুনঃস্থাপন করতে পেরেছে। ক্রুরা নিরাপদে আছেন।

এ ঘটনার ব্যাপারে আলোচনার জন্য যুক্তরাজ্যের হোয়াইট হলে গতকাল সরকারের জরুরি কমিটি কোবরা দুবার বৈঠক করেছে। এর মুখপাত্র জানিয়েছেন, ইরানের এই অগ্রহণযোগ্য কার্যকলাপের ব্যাপারে সরকার গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। আন্তর্জাতিক নৌ চলাচলের স্বাধীনতার প্রতি এটা সুস্পষ্ট চ্যালেঞ্জ। সাময়িকভাবে ওই এলাকা এড়িয়ে চলার জন্য যুক্তরাজ্যের নৌযানগুলোকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেরেমি হান্ট ট্যাংকার আটককে ‘সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য’ মন্তব্য করে বলেন, জলপথে নৌ চলাচলের স্বাধীনতা অবশ্যই রক্ষা করতে হবে। তিনি আরও বলেন, ‘উদ্ভূত পরিস্থিতির শিগগির সমাধান না হলে ফলাফল ভয়াবহ আকার ধারণ করবে। আমরা সামরিক পদক্ষেপের কথা ভাবছি না। কূটনৈতিক উপায়ে সমাধানের কথাই ভাবছি। কিন্তু আমরা স্পষ্ট করতে চাই যে এটার সমাধান হতেই হবে। তেহরানে আমাদের রাষ্ট্রদূত ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। আমরা আমাদের আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সঙ্গেও এ ব্যাপারে কাজ করছি।’

ইরানি রেভল্যুশনারি গার্ড অনুমোদিত বার্তা সংস্থা দ্য তাসনিম ইরানের বন্দর ও উপকূলবর্তী সংস্থার বরাত দিয়ে জানিয়েছে, ব্রিটিশ তেলবাহী ট্যাংকার স্টেনা ইমপেরো সমস্যা করছিল বলে তথ্য ছিল তাদের হাতে। তারা তিনটি নিয়ম ভেঙেছিল। জিপিএস বন্ধ করে রেখেছিল, প্রবেশমুখের দিকে না গিয়ে হরমুজ প্রণালির দিকে যাচ্ছিল এবং সতর্কবার্তা অমান্য করছিল। এ কারণে ট্যাংকারটিকে জব্দ করা হয়।

এ মাসের শুরুতে ইরানের ট্যাংকার ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করছে সন্দেহে তা জব্দ করে ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ। সিরিয়ার জন্য তেল বহন করছে সন্দেহে ৪ জুলাই স্পেনের দক্ষিণ উপকূলে যুক্তরাজ্যে তাদের অন্তরীপ জিব্রাল্টারের কাছে ইরানের গ্রেস ১-কে জব্দ করে। এ নিয়ে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনার সূত্রপাত হয়। ৯ জুলাই উপসাগরীয় এলাকায় ইরানের জলসীমায় যুক্তরাজ্যের নৌযানগুলোর হুমকি রয়েছে বলে জানায় যুক্তরাজ্য। ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় অভিযোগ করে, এর এক দিন পর ওই অঞ্চলে ব্রিটিশ তেলবাহী ট্যাংকারকে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে ইরানের জাহাজগুলো; যদিও ইরান এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মতে, আলোচনা ও সমঝোতার মাধ্যমেই এই সমস্যার একমাত্র সমাধান আসতে পারে।