Thank you for trying Sticky AMP!!

ক্ষমতা ছাড়ার আগমুহূর্তেও চীনের ওপর নিষেধাজ্ঞা ট্রাম্পের

ডোনাল্ড ট্রাম্প

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ক্ষমতা ছাড়ার বাকি আর পাঁচ দিন। এরই মধ্যে গতকাল বৃহস্পতিবার চীনের সরকারি কর্মকর্তা ও বড় কিছু প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার খড়্গ চাপালেন। বিরোধপূর্ণ দক্ষিণ চীন সাগর নিয়ে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালানোর অভিযোগে এ পদক্ষেপ নিলেন তিনি। পাশাপাশি ৯ প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে বিনিয়োগসংক্রান্ত নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন। খবর রয়টার্সের।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, বাণিজ্যযুদ্ধসহ নানা বিষয়ে চীনের সঙ্গে বহুদিন ধরেই উত্তেজনায় জড়িয়ে আছে যুক্তরাষ্ট্র। এখন ক্ষমতার একেবারে শেষ পর্যায়ে এসেও ট্রাম্পের এমন বৈরিতাপূর্ণ আচরণে দেশ দুটির মধ্যে এ উত্তেজনা আরও বাড়বে। তিনি এমন একসময় এ পদক্ষেপ নিলেন, যখন গত ৩ নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী জো বাইডেন আগামী বুধবার হোয়াইট হাউসে বসতে চলেছেন। ট্রাম্পের সর্বশেষ এ পদক্ষেপ বিষয়ে জানতে চাইলে তাৎক্ষণিকভাবে মন্তব্য করতে রাজি হয়নি নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট বাইডেনের ট্রানজিশন টিম।

দক্ষিণ চীন সাগরের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিরোধে জড়ানো দেশগুলোর ওপর বলপ্রয়োগের অভিযোগে আরোপিত এ নিষেধাজ্ঞার অধীন নতুন বিধিনিষেধের মুখে পড়বেন চীনের সরকারি মালিকানাধীন সংস্থাগুলোর নির্বাহীরা, ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টি ও সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তারা এবং বৃহৎ তেল কোম্পানি সিএনওওসি।

জ্যেষ্ঠ মার্কিন কর্মকর্তারা গতকাল বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের বলেন, তেল কোম্পানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হলেও অপরিশোধিত তেল, পরিশোধিত জ্বালানি ও প্রাকৃতিক গ্যাস এবং সিএনওওসির সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে গড়ে ওঠা প্রতিষ্ঠান, যা দক্ষিণ চীন সাগরে তৎপরতায় নিয়োজিত নয়, তাদের ক্ষেত্রে এটি প্রযোজ্য হবে না।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা সদর দপ্তর পেন্টাগনের নিষেধাজ্ঞার তালিকায় আছে আরও ৯ প্রতিষ্ঠান। এগুলোর মধ্যে আছে উড়োজাহাজ নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান কোমাক ও মুঠোফোন তৈরির প্রতিষ্ঠান শিয়াওমি করপোরেশনও। প্রতিষ্ঠানগুলো চীনা সামরিক বাহিনীর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বলে অভিযোগ ট্রাম্প প্রশাসনের।

রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার অপব্যবহার করছে যুক্তরাষ্ট্র

যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞায় কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে চীন। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অভিযোগ করেছে, বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোকে দমাতে ওয়াশিংটন জাতীয় নিরাপত্তার নামে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক ইস্যুতে রাজনৈতিক ও আদর্শগত ছিপি লাগাচ্ছে। একই সঙ্গে অপব্যবহার করছে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার।
যুক্তরাষ্ট্র অনেক আগে থেকেই দক্ষিণ চীন সাগরের ওপর বেইজিংয়ের একচ্ছত্র ভূখণ্ডগত দাবি নাকচ করে আসছে। এই জলপথ একদিকে খনিজ সম্পদে সমৃদ্ধ, অন্যদিকে কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক পথ। ওয়াশিংটন বলছে, ওই সাগরে চীনের মতোই মালিকানা দাবি করে চলা এ অঞ্চলের ভিয়েতনাম ও ফিলিপাইনকে বেইজিং ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। তবে চীনের অভিযোগ, ওয়াশিংটন দক্ষিণ চীন সাগরে যুদ্ধজাহাজ ও যুদ্ধবিমান পাঠিয়ে এই অঞ্চলকে অস্থিতিশীল করে তোলার চেষ্টায় লিপ্ত।
চীনের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দিয়ে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও বলেছেন, ‘দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়ার যেসব দেশ নিজেদের সার্বভৌম অধিকার ও স্বার্থ রক্ষায় দক্ষিণ চীন সাগরের ওপর মালিকানা দাবি করছে, আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে তাদের পাশে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।’

পম্পেও বলেন, ওয়াশিংটন চীনের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানগুলোর নির্বাহী এবং দেশটির ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টি ও নৌবাহিনীর কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ভিসাসংক্রান্ত বিধিনিষেধ জারি করছে। তিনি আরও বলেন, বিরোধপূর্ণ দক্ষিণ চীন সাগরের ওপর ব্যাপকভিত্তিক মালিকানা দাবি, সেখানে নির্মাণকাজ চালানো বা সামরিক স্থাপনা প্রতিষ্ঠা কিংবা দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়ার সংশ্লিষ্ট দেশগুলোকে ভয় দেখানোর সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানগুলো নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়বে। প্রতিষ্ঠানগুলোর নির্বাহী ও কর্মকর্তাদের পাশাপাশি তাঁদের পরিবারের সদস্যদের জন্যও এটি প্রযোজ্য হতে পারে।
মার্কিন নিষেধাজ্ঞা নিয়ে চীনের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানা যায়নি।