Thank you for trying Sticky AMP!!

খাসোগির মরদেহ বনে ফেলে দেওয়া হয়েছে?

সৌদি সাংবাদিক জামাল খাসোগি। ছবি: এএফপি

সৌদি সাংবাদিক জামাল খাসোগির মরদেহ কাছের কোনো বন বা খামারে ফেলে দেওয়া হতে পারে। নাম প্রকাশ না করে তুর্কি কর্মকর্তারা এমন সন্দেহের কথা জানান।

আজ শুক্রবার বিবিসি অনলাইনের খবরে জানানো হয়, অনুসন্ধানের সময় সৌদি কনস্যুলেট ও কনসাল জেনারেলের বাসভবন থেকে নেওয়া নমুনা খাসোগির ডিএনএর সঙ্গে মেলে কি না, তা পরীক্ষা করা হচ্ছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, বুধ ও বৃহস্পতিবার দুই দিনে তুর্কি তদন্ত কর্মকর্তারা সৌদি কনসাল জেনারেলের বাসভবনে ৯ ঘণ্টা ধরে তল্লাশি চালান। কনস্যুলেট থেকে বাসভবনের দূরত্ব মাত্র ২০০ মিটার। সিসিটিভির ফুটেজে দেখা গেছে, খাসোগি কনস্যুলেট ভবনের ভেতরে প্রবেশের দুই ঘণ্টা পর সৌদি কূটনৈতিক নম্বরপ্লেটের কয়েকটি গাড়ি কনস্যুলেট থেকে বাসভবনের দিকে যাচ্ছে।
খাসোগি ২ অক্টোবর তুরস্কের ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেট ভবনে প্রবেশের পর থেকে নিখোঁজ রয়েছেন। তুরস্ক দাবি করেছে, কনস্যুলেট ভবনের ভেতর সৌদি এজেন্টরা খাসোগিকে হত্যা করার পর তাঁর দেহ টুকরো টুকরো করে সরিয়ে ফেলেছে। এই হত্যা মিশনে অংশ নিয়েছে রিয়াদ থেকে ইস্তাম্বুলে আসা ১৫ সদস্যের সৌদি স্কোয়াড।
খাসোগির সঙ্গে কী হয়েছে, সে সম্পর্কে কোনো তথ্য জানা নেই বলে জানিয়েছে সৌদি আরব। শুরুতে সৌদি আরব দাবি করেছিল, কনস্যুলেট ভবনে কাজ শেষে খাসোগি বেরিয়ে গেছেন।
আরেক তুর্কি কর্মকর্তা এবিসি নিউজকে জানিয়েছেন, তুরস্কে সফরের সময় গতকাল বৃহস্পতিবার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও খাসোগি হত্যার সময়ের অডিও টেপ শুনেছেন। পরে তা মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র হিদার নোয়ার্ট অস্বীকার করেছেন।
তুরস্ক আগেই দাবি করেছিল, তাদের কাছে খাসোগি হত্যার অডিও ও ভিডিও টেপ রয়েছে। তবে তা কখনো প্রকাশ করেনি তারা।

প্রেমিকা হাটিজে জেংগিসকে বিয়ে করার জন্য প্রয়োজনীয় নথি আনতে কনস্যুলেট ভবনে গিয়েছিলেন খাসোগি। তিনি ভেতরে প্রবেশের সময় হাটিজে বাইরে অপেক্ষায় ছিলেন। হাটিজে জানান, তিনি ১১ ঘণ্টা অপেক্ষা করেও খাসোগিকে বের হতে দেখেননি।

জামাল খাসোগি ছিলেন সৌদি আরবের খ্যাতনামা সাংবাদিক। তিনি বিভিন্ন সৌদি সংবাদমাধ্যমের হয়ে বড় বড় ঘটনার প্রতিবেদন করেছেন। তিনি যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রে সৌদি রাষ্ট্রদূতের মিডিয়া উপদেষ্টা ছিলেন। তবে পরে তিনি সরকারের রোষানলে পড়েন। গত বছর যুবরাজ মোহাম্মদ ক্ষমতা নেওয়ার পর গ্রেপ্তার এড়াতে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে স্বেচ্ছা নির্বাসনে চলে যান। সেখানে তিনি ওয়াশিংটন পোস্টে মাসে একটি কলাম লিখতেন। সর্বশেষ কলামে তিনি আরব বিশ্বজুড়ে গণমাধ্যমের স্বাধীনতার আহ্বান জানিয়েছিলেন।

শীর্ষ স্থানীয় কয়েকটি মানবাধিকার সংগঠন দাবি করেছে, খাসোগি হত্যার অভিযোগের ব্যাপারে তুরস্ক যেন জাতিসংঘের তদন্ত চায়।

খাসোগির ঘটনা সৌদি আরবের সঙ্গে এর পশ্চিমা মিত্রদের মধ্যে টান টান সম্পর্কের সৃষ্টি করেছে। আগামী সপ্তাহে রিয়াদে অনুষ্ঠেয় শীর্ষ বিনিয়োগ সম্মেলন থেকে নাম প্রত্যাহার করে নিতে যাচ্ছেন মার্কিন বাণিজ্যমন্ত্রী স্টিভেন নিউচিন ও ব্রিটিশ বাণিজ্যমন্ত্রী লিয়াম ফক্স। এর আগে বেশ কয়েক জন শীর্ষ বিনিয়োগকারী ও মিডিয়া গ্রুপ সম্মেলন থেকে নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছে। সৌদিতে বিভিন্ন সংস্কারমূলক কাজের কথা তুলে ধরতে সম্মেলনটির আয়োজন করেছেন সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান।
সম্মেলনটি বর্জনের চাপ থাকার পরও এতে পেপসি ও ইডিএফের মতো বড় কয়েকটি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান অংশ নিতে যাচ্ছে।
পশ্চিমা দেশগুলোর প্রধান মিত্রদের একজন সৌদি আরব, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের। বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ তেল রপ্তানিকারক দেশটির তাৎপর্যপূর্ণ প্রভাব রয়েছে বিশ্বমঞ্চে।
সম্মেলন বর্জনকারীদের মধ্যে নেদারল্যান্ডস ও ফ্রান্সের অর্থমন্ত্রীরা, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) প্রধান রয়েছেন।

এদিকে গতকাল বৃহস্পতিবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘মনে হচ্ছে’ খাসোগি খুন হয়েছেন। ‘এটা খুবই দুঃখজনক’। এই হত্যায় সৌদি আরবের জড়িত থাকার কথা প্রমাণ হলে এর পরিণতি ‘খুব খারাপ’ হতে পারে।
যদিও এ ঘটনায় সৌদি সরকারের পক্ষ টেনে ঘটনাটি চাপা দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, খাসোগির নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা খুবই দুঃখজনক। কিন্তু জোরালো কোনো তথ্য প্রমাণ ছাড়া রাশিয়া সৌদির সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ করবে না।

আরও পড়ুন: 
খাসোগিকে কেটে টুকরো করা হয়!
মাত্র সাত মিনিটে টুকরো টুকরো করে হত্যা!
খাসোগি হত্যা জিজ্ঞাসাবাদের সময়!
কী এমন করেছিলেন খাসোগি?
খাসোগি খুনে স্বীকারোক্তি দেবে সৌদি আরব?
তল্লাশির আগে সৌদির কনসাল জেনারেল হাওয়া
যুবরাজ সালমানের অন্ধকার দিক
খাসোগি হত্যাকালীন অডিও চায় যুক্তরাষ্ট্র