Thank you for trying Sticky AMP!!

জার্মানিতে করোনায় এক দিনে সর্বোচ্চ মৃত্যু

করোনাভাইরাস

জার্মানিতে বড়দিন ঘিরে লকডাউন–বিধি আরও কড়াকড়ি করার সিদ্ধান্ত আসার আগেই এক দিনে দেশটিতে করোনাভাইরাসে সর্বোচ্চ মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। জার্মানির সংক্রমণ রোগ বিষয়ের গবেষণা কেন্দ্র রবার্ট কখ ইনস্টিটিউট জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সেখানে ৪১০ জন করোনায় মারা গেছেন। এর আগে গত মধ্য এপ্রিলে জার্মানিতে সর্বোচ্চ ৩১৫ জনের মৃত্যু হয়েছিল।

রবার্ট কখ ইনস্টিটিউট আরও জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় জার্মানিতে ১৮ হাজার ৬৩৩ জনের দেহে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। পাশাপাশি আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্য নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) আনার সংখ্যাও বেড়েছে। এই যাবৎ করোনা সংক্রমণে জার্মানিতে ১৪ হাজার ৭৭১ জন মারা গেছেন।

এখন পর্যন্ত জার্মানিতে ৯ লাখ ৬১ হাজার মানুষ এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। সুস্থ হয়েছেন ৬ লাখ ৫৬ হাজার মানুষ। গত ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চসংখ্যক মানুষের মৃত্যু ঘটলেও পরিস্থিতি আয়ত্তের মধ্যেই আছে বলে জানিয়েছে রবার্ট কখ ইনস্টিটিউট।

নভেম্বর মাসের প্রথম দিকে জার্মানিতে সীমিত পরিসরে লকডাউন করা হয়। তবে এতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের সংখ্যা আশানুরূপ কমেনি। এদিকে আসন্ন বড়দিন উৎসবকে ঘিরে জার্মান সরকার লকডাউন–সম্পর্কিত কিছু নতুন সিদ্ধান্ত ঘোষণা করতে যাচ্ছে।

জার্মান সরকারের ইতিমধ্যে ঘোষিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামী ২৫ ডিসেম্বর বড়দিন উৎসবকে ঘিরে বিশেষ ক্রিসমাস বাজার বন্ধ করাসহ ডিসেম্বরের প্রথম থেকেই যেকোনো অনুষ্ঠানে ১০ জনের বেশি যোগ দিতে পারবে না। অবশ্য ১৪ বছরের কম বয়সীরা এই হিসাবে আওতার বাইরে। পূর্বের নিষেধাজ্ঞা অনুযায়ী পানশালা, রেস্তোরাঁ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, ফিটনেস সেন্টার, সুইমিংপুল ডিসেম্বর পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। স্কুল ও কিন্ডারগার্টেন খোলা থাকলেও বড়দিন উৎসবের নিয়মিত ছুটির পাঁচ দিন আগেই বন্ধ হয়ে যাবে। ট্রেন-বাসসহ সব ধরনের গণপরিবহন ও সুপার মার্কেটে এবং কিছু শহরের কেন্দ্রে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক থাকবে। মাস্ক না পরলে জরিমানা করা হবে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) জরুরি সহায়তা সমন্বয়কারী মাইক রায়ান সবাইকে সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, ২৫ ডিসেম্বর পবিত্র বড়দিন উৎসবকে ঘিরে লকডাউন–ব্যবস্থা কোনো অবস্থাতেই শিথিল করা ঠিক হবে না। বড়দিনের উৎসবকে ঘিরে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব আবারও বাড়তে পারে এবং সংক্রমণের হার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে বলে তিনি জানিয়েছেন।

ইতিপূর্বে রবার্ট কখ ইনস্টিটিউটের সভাপতি লোথার ভিলার জানিয়েছিলেন, জার্মানিতে ৬০–৭০ শতাংশ মানুষ করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হতে পারেন। তবে কবে নাগাদ এই সংক্রমণের বিস্তার ঘটতে পারে, সেই বিষয়ে তিনি কিছু বলেননি।

জার্মানির স্বাস্থ্যমন্ত্রী ইয়ান স্পান জানিয়েছেন, মধ্য ডিসেম্বরের মধ্যেই করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এই বিষয়ে জার্মানজুড়ে ভ্যাকসিনবিষয়ক কাঠামোর কাজ শুরু হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ঝুঁকিপূর্ণ বয়স্ক ব্যক্তিরা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ভ্যাকসিন নিতে পারবেন।

বায়োএনটেক ও ফাইজারের সঙ্গে ইতিমধ্যেই ভ্যাকসিনের বিষয়ে চুক্তি নিয়ে আলোচনা করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন কমিশন। দুটি সংস্থার সঙ্গে প্রাথমিক চুক্তিতে ইইউ ২০ কোটি ভ্যাকসিন সংগ্রহ করবে এবং আরও ১০০ কোটি ভ্যাকসিনের চাহিদা দেওয়া হয়েছে। বায়োএনটেক ও ফাইজারের উদ্ভাবিত ভ্যাকসিনটি বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফএডি) ও আমস্টারডামে অবস্থিত ইউরোপীয় মেডিসিন এজেন্সির (ইএমএ) কাছে অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে।