Thank you for trying Sticky AMP!!

যুক্তরাজ্যের উপপ্রধানমন্ত্রী ডমিনিক রাবকেও প্রাণনাশের হুমকি

যুক্তরাজ্যের উপপ্রধানমন্ত্রী ও কনজারভেটিভ পার্টির নেতা ডমিনিক রাব

যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির এমপি স্যার ডেভিড অ্যামেসের হত্যাকাণ্ডের পর থেকে দেশটির এমপিদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। এ নিয়ে চলছে আলোচনা। এর মাঝেই যুক্তরাজ্যের উপপ্রধানমন্ত্রী ও কনজারভেটিভ পার্টির নেতা ডমিনিক রাব জানিয়েছেন, গত দুই বছরে তিনি তিনবার জীবননাশ ও অঙ্গহানির হুমকি পেয়েছেন। তাঁকে অ্যাসিড ছোড়ার হুমকিও দেওয়া হয়েছে। ডমিনিক রাবের এমন মন্তব্যে শোরগোল পড়েছে যুক্তরাজ্যের রাজনীতিতে। আইনপ্রণেতাদের নিরাপত্তা বাড়ানোর দাবি উঠেছে।

আজ সোমবার ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান–এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এদিন সকালে বিবিসি ব্রেকফাস্ট অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে নিজের জীবনের ওপর আসা হুমকির বিষয়ে খোলামেলা কথা বলেন ডমিনিক রাব। তিনি বলেন, ‘গত দুই বছরে আমাকে তিনবার হুমকি দেওয়া হয়েছে। সর্বশেষ পাওয়া হুমকিতে আমার ওপর অ্যাসিড ছোড়ার কথা বলা হয়েছিল। আমি বাধ্য হয়ে পুলিশের অভিযোগ জানিয়েছি।’

Also Read: যুক্তরাজ্যের এমপিদের পুলিশি নিরাপত্তা দেওয়া হবে : প্রীতি প্যাটেল

তিনি একা নন, যুক্তরাজ্যের আরও অনেক এমপি হয়রানির শিকার হয়েছেন, হুমকি পেয়েছেন বলেও জানান ডমিনিক রাব। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমার চেয়েও বেশি হয়রানির শিকার হয়েছেন, এমন কয়েকজন সহকর্মী রয়েছেন। বিশেষত নারী এমপিরা। অনেকেই এসব হুমকির খবর জনসম্মুখে এনেছেন, প্রতিবাদ করেছেন।’
এরপর আইটিভির ‘গুড মর্নিং ব্রিটেন’ অনুষ্ঠানে অংশ নেন ডমিনিক রাব। সেখানে এমপিদের নিরাপত্তা বাড়ানোর দাবি করেন তিনি। ডমিনিক রাব বলেন, রাজনীতিবিদদের অনেক জায়গায় যেতে হয়। সাধারণ মানুষের সঙ্গে মিশতে হয়। তাঁদের জন্য সর্বোচ্চ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা প্রয়োজন।

রাজনীতিবিদ ও সাধারণ মানুষের প্রতি ঘৃণা ছড়ানো ঠেকাতে মূলধারার গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে বলেও মন্তব্য করেন ডমিনিক রাব। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের যেসব অ্যাকাউন্ট থেকে ঘৃণা ছড়ানো হয়, প্রয়োজনে সেসব অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেওয়ার পক্ষে মত দেন তিনি।

Also Read: ব্রিটিশ এমপির সন্দেহভাজন হত্যাকারী সন্ত্রাসবাদ আইনে গ্রেপ্তার

গত শুক্রবার কনজারভেটিভ পার্টির এমপি স্যার ডেভিড অ্যামেস (৬৯) নিজ নির্বাচনী এলাকা লন্ডনের পূর্বে এসেক্সের লেই-অন-সি শহরে ছুরিকাঘাতে নিহত হন। ওই সময় ঘটনাস্থল থেকে আলি হারবি আলি নামে এক সন্দেহভাজনকে আটক করে পুলিশ। ২৫ বছর বয়সী আলি হারবি সোমালীয় বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক। ওই দিন রাতেই তাঁকে সন্ত্রাসবাদ আইনে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। এ ঘটনাকে ‘সন্ত্রাসী হামলা’ হিসেবে চিহ্নিত করে লন্ডন পুলিশ।

বিবিসি জানিয়েছে, সন্দেহভাজন হামলাকারী আলি হারবি যুক্তরাজ্য সরকারের করা ঝুঁকিপূর্ণ উগ্রবাদীর তালিকায় ছিলেন। কয়েক বছর আগে তাঁকে ‘প্রিভেন্ট’ নামের একটি সন্ত্রাসবাদ প্রতিরোধী কর্মসূচিতে অংশ নিতে বলা হয়েছিল। লোকজনকে উগ্রবাদ থেকে দূরে রাখতে এই কর্মসূচি চালানো হয়। ডেভিড অ্যামেসকে হত্যার পরদিন শনিবার যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন নিহত আইনপ্রণেতার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

ডেভিড অ্যামেসের হত্যাকাণ্ডের পর থেকে ব্রিটিশ এমপিদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার সময় যুক্তরাজ্যের এমপিদের পুলিশি নিরাপত্তা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রীতি প্যাটেল। অন্যদিকে পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউস অব কমন্সের স্পিকার লিন্ডসে হোয়েলও এমপিদের নিরাপত্তায় পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেওয়ার ওপর জোর দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

ডেভিড অ্যামেসকে স্মরণ করে হাউস অব কমন্সের ডেপুটি স্পিকার এলেনর লাইং বলেন, ডেভিড একজন অমায়িক মানুষ ছিলেন। ভীষণ উদ্যমী, দয়ালু ও চিন্তাশীল ছিলেন তিনি। এদিকে বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, এমপি ডেভিড অ্যামেসের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন তাঁর সহকর্মীরা। স্থানীয় সময় সোমবার দুপুরে হাউস অব কমন্সের সদস্যরা তাঁর স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন।

Also Read: এমপি হত্যাকাণ্ডকে সন্ত্রাসী ঘটনা বলছে যুক্তরাজ্য

ডেভিড অ্যামেসের আগেও যুক্তরাজ্যের একাধিক আইনপ্রণেতা ও রাজনীতিকের ওপর হামলা হয়েছে। কয়েকজন নিহত হয়েছেন। জো কক্স নামের লেবার পার্টির এক এমপিকে ২০১৬ সালে গুলি করে ও ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়। তারও আগে ২০১০ সালে স্টিফেন টিমস নামের লেবার পার্টির একজন আইনপ্রণেতা ছুরিকাঘাতের শিকার হন। এ ছাড়া ২০০০ সালে ছুরিকাঘাতে নিহত হন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির এমপি নাইজেল জোনসের সহকারী অ্যান্ড্রু পেনিংটন।