Thank you for trying Sticky AMP!!

রাশিয়ার সঙ্গে টানাপোড়েন: যুক্তরাজ্যের পক্ষে ইইউ নেতারা

রাশিয়া ছেড়ে যাচ্ছে যুক্তরাজ্যর কূটনীতিকদের বহনকারী গাড়ি। ছবি: রয়টার্স

আশ্রিত সাবেক গোয়েন্দাকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় রাশিয়ার সঙ্গে সৃষ্ট টানাপোড়েনে যুক্তরাজ্যের পক্ষে জোরালো অবস্থান নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) নেতারা। শুক্রবার যৌথ এক বিবৃতিতে তাঁরা বলেন, বিদ্যমান তথ্য-প্রমাণ এবং সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় বলা চলে, এই হত্যাচেষ্টা ‘খুব সম্ভবত’ রাশিয়ার কাজ। এ ঘটনার গ্রহণযোগ্য অন্য কোনো ব্যাখ্যা নেই।

রাশিয়ায় নিযুক্ত নিজেদের দূতকেও ডেকেছে ইইউ। ইইউ নেতারা বলছেন, বিষয়টি নিয়ে পরামর্শ করার জন্য দূতকে তলব করা হয়েছে। ইইউ নেতাদের এ তৎপরতা রাশিয়ার সঙ্গে দ্বন্দ্বের বিষয়টিকে নতুন মাত্রা দিয়েছে।

৪ মার্চ যুক্তরাজ্যের সলসব্যারি শহরের একটি বিপণিকেন্দ্রের বাইরে বেঞ্চিতে সেরগেই স্ক্রিপাল (৬৬) এবং তাঁর মেয়ে ইউলিয়া স্ক্রিপালকে (৩৩) অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ। পরে জানা যায়, তাঁদের ওপর নার্ভ এজেন্ট (বিষাক্ত রাসায়নিক গ্যাস) প্রয়োগ করা হয়েছিল। সেরগেই স্ক্রিপাল একজন সাবেক রাশিয়ান গোয়েন্দা। তিনি যুক্তরাজ্যের গোয়েন্দা সংস্থা এমআই-৬–এর কাছে রাশিয়ার গোপন কিছু তথ্য বিক্রি করেছিলেন। ডাবল এজেন্ট হিসেবে কাজ করা এবং বিশ্বাসঘাতকতার অপরাধে ২০০৬ সালে তাঁকে ১৩ বছরের কারাদণ্ড দেন রাশিয়ার আদালত। ২০১০ সালে রাশিয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বন্দী গুপ্তচর বিনিময়ের অংশ হিসেবে ছাড়া পান স্ক্রিপাল। ছাড়া পেয়ে তিনি যুক্তরাজ্যে আশ্রয় নেন।

যুক্তরাজ্যের অভিযোগ রাশিয়া স্কিপালকে হত্যার উদ্দেশ্যেই রাসায়নিক গ্যাস প্রয়োগ করেছে। এ ঘটনায় ২৩ জন রাশিয়ান কূটনীতিককে বহিষ্কার করে দেশটি। রাশিয়া অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। তারা পাল্টা জবাব হিসেবে রাশিয়া থেকে ২৩ জন ব্রিটিশ কূটনীতিককে বহিষ্কার করে।

ইইউ সম্মেলনকে সামনে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে ইইউ নেতাদের সঙ্গে গোয়েন্দা হত্যাচেষ্টার বিষয়টি নিয়ে আলাপ করেন। এরপরই ইইউর পক্ষ থেকে যৌথ বিবৃতি আসে। রাশিয়ার আগ্রাসন থেকে ইউরোপের নিরাপত্তা রক্ষায় ঐক্যবদ্ধ থাকার ঘোষণা দেন তাঁরা।

স্বাধীন আয়ারল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী লিওভারাদকার এবং লিথুয়ানিয়ার প্রেসিডেন্ট ডালিয়া গ্রাইবসকেইট জানান, যুক্তরাজ্যের পথ অনুসরণ করে তাঁরাও নিজ নিজ দেশে গোয়েন্দাগিরিতে লিপ্ত রাশিয়ান কূটনীতিকদের বহিষ্কারে কাজ করছেন। তবে গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী অ্যালেক্সিস টিপরাস বিষয়টিতে দায়িত্বশীল আচরণের আহ্বান জানিয়েছেন।

শুক্রবার অনুষ্ঠিত ইইউ সম্মেলনে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে বিচ্ছেদের বিষয়টিই (ব্রেক্সিট নামে পরিচিত) মূলত উত্তাপ ছড়ানোর কথা ছিল। কিন্তু সে জায়গা দখল করে নেয় রাশিয়ার আগ্রাসন। সম্মেলন থেকে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে বিচ্ছেদপরবর্তী সম্পর্ক নির্ধারণ নিয়ে আলোচনার অনুমোদন দেওয়া হয়।

ইইউ ও যুক্তরাজ্যের নেতারা বলেন, চলতি বছরের অক্টোবরের মধ্যেই নতুন সম্পর্ক নিয়ে চুক্তিতে পৌঁছাতে চান তাঁরা। যাতে ২০১৯ সালের ২৯ মার্চ ব্রেক্সিট কার্যকর হওয়ার আগে চুক্তিটি উভয় পক্ষের পার্লামেন্টে পাশ করিয়ে নিতে সময় পাওয়া যায়।

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে বলেন, ব্রেক্সিটের পর যুক্তরাজ্য অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা ক্ষেত্রে ইইউর সঙ্গে সহযোগিতাপূর্ণ ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক চায়। ইইউ নেতারাও একটি সফল চুক্তির আশা প্রকাশ করেন। গোয়েন্দা হত্যাচেষ্টার ঘটনা যুক্তরাজ্য ও ইইউর বিচ্ছেদের উত্তাপে আপাতত পানি ঢেলে দিয়েছে বলে মনে হচ্ছে।