Thank you for trying Sticky AMP!!

রাশিয়ায় জনরোষের মুখে সাংবাদিককে ছেড়ে দিল পুলিশ

দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবেদন করায় সাংবাদিক ইভান গলুনভের বিরুদ্ধে মাদকের মামলা করার অভিযোগ ওঠে। ছবি: রয়টার্স

রাশিয়ায় জনরোষের মুখে সাংবাদিক ইভান গলুনভের বিরুদ্ধে মাদকের মামলা তুলে নিয়েছে পুলিশ। দেশটিতে পুলিশের এমন ইউটার্ন নেওয়ার ঘটনা বিরল। সাংবাদিক ইভানের সমর্থকদের অভিযোগ, দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবেদনের কারণে ইভানকে ফাঁসানোর চেষ্টা করে পুলিশ। সমর্থকেরা এ ঘটনায় মস্কোয় গণবিক্ষোভেরও হুমকি দেয়।

আজ বুধবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানানো হয়, গতকাল মঙ্গলবার পুলিশ সাংবাদিক ইভান গলুনভের (৩৬) বিরুদ্ধে মাদকের মামলা তুলে নেয়। ইভান মস্কোর সরকারি কর্মকর্তাদের দুর্নীতির প্রতিবেদন করার কারণে দেশটিতে পরিচিত এক নাম। তাঁকে গত বৃহস্পতিবার মাদক–সম্পৃক্ততার অভিযোগে আটক করা হয়; যদিও তিনি এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

নব্বই দশকের পর থেকে রাশিয়ায় কর্তৃপক্ষের সমালোচনা করার কারণে অনেক সাংবাদিককে হুমকির শিকার হতে হয়েছে। কেউ কেউ শারীরিক নির্যাতন, এমনকি হত্যারও শিকার হয়েছেন। তবে ইভান গলুনভকে আটকের পর গণমাধ্যম এককাট্টা হয়ে পড়ে, যা দেশটিতে সচরাচর দেখা যায় না।

রাশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ভ্লাদিমির কলোকলতসেভ বলেছেন, ইভান গলুনভের বিরুদ্ধে কোনো সাক্ষ্য–প্রমাণ না থাকায় মামলা তুলে নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, এ ঘটনায় জড়িত কয়েক পুলিশ কর্মকর্তাকে দায়িত্ব থেকে সাময়িকভাবে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। আরও কয়েকজন জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করার জন্য তিনি প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে বলবেন বলে জানিয়েছেন।

নিজ বাড়ি থেকে আটক করার কয়েক ঘণ্টা পর ইভানকে মুক্ত করে দেওয়া হয়। তাঁর গোড়ালি থেকে বৈদ্যুতিক বেড়িও খুলে ফেলা হয়েছে। তিনি যখন মস্কোর থানা থেকে বেরিয়ে আসেন, তখন শত শত সাংবাদিক সহকর্মী করতালি দিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে তাঁকে স্বাগত জানান।

এ ঘটনায় আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন ইভান। সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি তাঁর কাজ অব্যাহত রাখার কথা জানান। তিনি বলেন, ‘যে কাজ আমি করছিলাম, তা অব্যাহত রাখব, অনুসন্ধান চালিয়ে যাব। কারণ, আমার ভেতরে যে বিশ্বাস রয়েছে এবং যাঁরা সমর্থন দিয়েছেন, তাঁরা আমার প্রতি যে আস্থা প্রকাশ করেছেন, তার প্রতি সুবিচার করতে হবে আমাকে।’

ইভান গলুনভের মুক্তির পর ইউরোপীয় ইউনিয়নের আন্তর্জাতিকবিষয়ক মুখপাত্র মায়া কোসিয়ানসিস টুইটারে এক প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেন, রাশিয়ায় গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এখনো উদ্বেগজনক পর্যায়ে। যেকোনো গতিশীল সমাজের জন্য স্বাধীন কণ্ঠের পাশাপাশি সমালোচনার কণ্ঠও অবিচ্ছেদ্য অংশ।

রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারসের তথ্য অনুসারে, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা সূচকে ১৮০টি দেশের মধ্যে রাশিয়ার অবস্থান ১৪৯তম।