Thank you for trying Sticky AMP!!

অভিনেতা সৌমিত্রের অবস্থার অবনতি

পশ্চিমবঙ্গের প্রখ্যাত অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত পশ্চিমবঙ্গের প্রখ্যাত অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের অবস্থার অবনতি হয়েছে। গতকাল শুক্রবার বিকেলে হঠাৎ তাঁর শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা কমে যায়। শুরু হয় মৃদু শ্বাসকষ্ট। অনিয়মিত হয় রক্তচাপ। সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকেরা তাঁকে স্থানান্তরিত করেন বেলভিউ হাসপাতালের আইটিইউ বা ইনটেনসিভ থেরাপি ইউনিটের কেবিনে।

গত মঙ্গলবার করোনাভাইরাসে আক্রান্ত সৌমিত্রকে বেলভিউ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরদিন বুধ ও বৃহস্পতিবার ভালোই ছিল তাঁর অবস্থা। তাঁর রয়েছে ক্যানসার, সিওপিডি, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস। তার ওপরে করোনা পজিটিভ। ফলে কোনো ঝুঁকি না নিয়েই গতকালই  তাঁর জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ডের সুপারিশ নিয়ে তাঁকে সুচিকিৎসার জন্য স্থানান্তরিত করা হয় আইটিইউতে। সেখানে তাঁকে দেওয়া হচ্ছে অক্সিজেন।

বেলভিউ নার্সিংহোমের প্রধান নির্বাহী প্রদীপ ট্যান্ডন গতকাল বলেছেন, ‘সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের চিকিৎসা চলছে। তিনি এখন আছেন হাসপাতালের আইটিইউয়ের একটি কেবিনে। চিকিৎসা নিচ্ছেন ক্রিটিক্যাল কেয়ার বিশেষজ্ঞ অরিন্দম করসহ তাঁর চিকিৎসার জন্য গঠিত চার সদস্যের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দলের পরামর্শে। এখানে চার দিন থাকতে হতে পারে।’

গত ৩০ সেপ্টেম্বর সৌমিত্র একটি বায়োপিকের শুটিংয়ের জন্য গিয়েছিলেন টালিগঞ্জের ভারতলক্ষ্মী স্টুডিওতে। সেখানে তাঁর শুটিংয়ের জন্য উপস্থিত ছিলেন কলাকুশলী সহ ২৫ থেকে ৩০ জন কর্মী। এখানেই শুটিংয়ের সময় তিনি বলেন, ‘শরীরটা ভালো লাগছেনা। দ্রুত শুটিংয়ের কাজ শেষ করুন।’ এরপর দ্রুত শুটিং শেষ করে তিনি বাড়িতে আসেন। ১ অক্টোবর থেকে বাড়িতে থাকাকালীন তাঁর শরীরটা ভাল যাচ্ছিলনা। জ্বর হয়। তবে করোনার কোনো উপসর্গ দেখা যায়নি। এরপরই চিকিৎসকের পরামর্শে তাঁর করোনার নমুনা পরীক্ষা করা হলে গত সোমবার তার করোনার পজিটিভ রিপোর্ট আসে।

যদিও করোনার কারণে তাঁর শুটিং বন্ধ থাকলেও সম্প্রতি তিনি শুটিংয়ের জন্য ফিরে আসেন টালিউডে। অংশ নেন নিজের একটি তথ্যচিত্রের শুটিংয়ে। এ ছাড়া তিনি শেষ করেন পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়ের নির্মিত ছবি ‘অভিযান’এর।

সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের বয়স এখন ৮৫ বছর। ১৯৩৫ সালের ১৯ জানুয়ারি তিনি জন্মগ্রহণ করেন পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার কৃষ্ণনগরে। পড়াশোনা করেন হাওড়া জেলা স্কুল, স্কটিশ চার্চ কলেজ, কলকাতার সিটি কলেজ এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে।

বাংলা চলচ্চিত্রের এই দিকপাল ২০১২ সালে পেয়েছেন ভারতের চলচ্চিত্র অঙ্গনের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মান দাদা সাহেব ফালকে পুরস্কার। এ ছাড়া আরও পেয়েছেন দেশ বিদেশের বহু পুরস্কার। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ফ্রান্সের ’লেজিয়ঁ দ্য নর’ পুরস্কার (২০১৮)। পেয়েছেন ভারতের রাষ্ট্রীয় সম্মান পদ্মভূষণ (২০০৪) সহ ভারতের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, সংগীতনাটক একাডেমি পুরস্কার, ফিল্ম ফেয়ার পুরস্কার সহ নানা পুরস্কার। তিনি একাধারে অভিনেতা অন্যদিকে একজন নামী আবৃত্তিকার।