Thank you for trying Sticky AMP!!

আগে জম্মু-কাশ্মীরের রাজ্যের মর্যাদা, পরে ভোটের দাবি

ফারুক আবদুল্লাহ ও মেহবুবা মুফতি

জম্মু–কাশ্মীর বিধানসভার ভোট আয়োজনের কেন্দ্রীয় উদ্যোগের বিরোধিতা করে গুপকর জোট জানিয়ে দিল, আগে পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদা ফেরত দেওয়া হোক, তারপর ভোট। জোট নেতৃত্ব একই সঙ্গে এ কথাও বলেছেন, জন্মু–কাশ্মীর নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ডাকা সর্বদলীয় বৈঠকের পরও আস্থা ফেরাতে কেন্দ্রীয় সরকার ব্যর্থ। রাজনৈতিক কর্মীসহ অন্য বন্দীদের মুক্তি দেওয়া হয়নি। দমন–পীড়ন আইন প্রয়োগও বন্ধ হয়নি। এই কেন্দ্রীয় আচরণ তাঁদের হতাশ করেছে।

জম্মু–কাশ্মীরের পঞ্চদলীয় জোট গুপকর অ্যালায়েন্সের এই সিদ্ধান্ত সাবেক এই রাজ্যের বিধানসভা ও লোকসভার আসন পুনর্বিন্যাসের বা ‘ডিলিমিটেশন’–এর কাজ কঠিন করে দেবে। ৭ জুলাই ডিলিমিটেশন কমিশন কেন্দ্রশাসিত এই অঞ্চলে আসছে। ন্যাশনাল কনফারেন্সের তিন নেতা ফারুক আবদুল্লাহ, হাসনান মাসুদি ও আকবর লোন এবং বিজেপির দুজন এ কমিশনের সদস্য। এর আগে কমিশনের কোনো বৈঠকেই ন্যাশনাল কনফারেন্স যোগ দেয়নি। রোববারের বৈঠকের পর জোটের পক্ষ থেকে জানানো হয়নি, কমিশনের ডাকে তাঁরা বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন কি না।

গত মাসের শেষাশেষি জম্মু–কাশ্মীরের সব আঞ্চলিক দলের নেতাদের দিল্লিতে বৈঠকে ডেকেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সেই বৈঠকের পর গত রোববার গুপকর জোটের নেতারা সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ও জোট চেয়ারম্যান ফারুক আবদুল্লাহর বাসভবনে বৈঠকে বসেন। বৈঠকের পর জোটের পক্ষ থেকে এক প্রস্তাব গৃহীত হয়। যাতে বলা হয়, আগে জম্মু–কাশ্মীরকে পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদা ফেরত দিতে হবে। ভোট করাতে হবে তারপর।

জোটের পক্ষে তৈরি এক বিবৃতি পাঠ করে সংবাদমাধ্যমকে সিপিএম নেতা ইউসুফ তারিগামি বলেন, দিল্লি বৈঠকের পর জোটের সব নেতা হতাশ হয়েছেন। কারণ, কেন্দ্রীয় সরকার জম্মু–কাশ্মীরের জনগণের আস্থা অর্জনের জন্য কোনো চেষ্টাই এখন পর্যন্ত করেনি। রাজনৈতিক বন্দী ও অন্য গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের জেল থেকে মুক্তি দেয়নি। দমনমূলক আইন প্রয়োগেও বিরাম দেয়নি। মানুষের মন জিতে আস্থা ফেরাতে এসব জরুরি ছিল। বিবৃতিতে বলা হয়, বিধানসভার ভোট করানোর উদ্যোগ চলছে। কিন্তু তার আগে জম্মু–কাশ্মীরকে পূর্ণাঙ্গ রাজ্যের মর্যাদা ফেরত দিতে হবে। বিবৃতিতে এ কথাও বলা হয়েছে, জোট নেতারা রাজ্যের মর্যাদা ফেরানোর দাবি নিয়ে অন্য রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গেও কথা বলবেন, যাতে সব মানুষের দাবি এক স্বরে উঠে আসে।

ফারুক আবদুল্লাহর বাড়িতে ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন পিডিপি নেত্রী ও জোটের ভাইস চেয়ারপারসন মেহবুবা মুফতি, মুখপাত্র ইউসুফ তারিগামি, সাংসদ হাসনান মাসুদি, পিপলস মুভমেন্ট দলের জাভেদ মুস্তাফা মীর ও আওয়ামী ন্যাশনাল কনফারেন্সের নেতা মুজাফফর আহমেদ শাহ। সম্প্রতি জোট ছেড়ে বেরিয়ে গেছে সাজ্জাদ লোনের দল পিপলস কনফারেন্স। কংগ্রেস জোটের সহমর্মী। তাদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে কংগ্রেস জেলা উন্নয়ন পর্ষদের ভোটেও লড়েছে। কিন্তু তারা জোটের সদস্য নয়।

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দিল্লির বৈঠকেও গুপকর জোট নেতারা অবিলম্বে পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদা ফেরতের দাবি জানিয়েছিলেন। কংগ্রেস নেতা গুলাম নবী আজাদও সেই দাবি জানিয়েছিলেন। তাঁদের ‘টাইমলাইন’ ছিল, আগে পূর্ণ রাজ্য, তারপর ভোট। ডিলিমিটেশন করা হোক সারা দেশের সঙ্গে একযোগে। ২০২৬ সালে। কেন্দ্রীয় সরকার আবার চায় আগে ডিলিমিটেশন করিয়ে পরে ভোট। তারও পর পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদা ফেরত।

জোট নেতাদের ধারণা, কেন্দ্র আগে ডিলিমিটেশন চাইছে, যাতে জম্মু ও কাশ্মীরের মধ্যে বিধানসভা আসনের ফারাকটা ঘুচিয়ে বিজেপির ক্ষমতায়ন সহজ হয়। লাদাখের চারটি আসন বাদ দিলে পুরোনো বিধানসভা অনুযায়ী মোট ৮৩টি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে জম্মুতে ছিল ৩৭, উপত্যকায় ৪৬টি। বিজেপি চাইছে কেন্দ্র পুনর্বিন্যাসের মাধ্যমে এই ফারাক ঘুচিয়ে দিতে। যাতে জম্মুর শক্তিতে তারা ক্ষমতায় আসতে পারে।