Thank you for trying Sticky AMP!!

করোনার আতঙ্কে কলকাতার রাস্তাঘাট ফাঁকা

কলকাতার রাসবিহারী এভিনিউর ফাঁকা রাস্তা। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার জনজীবন থমকে গেছে। করোনা ভাইরাসের কারণে মানুষ ঘর ছেড়ে বাইরে খুব বেশি বের হচ্ছেন না। স্কুল-কলেজ, দোকান, হাটবাজার বন্ধ। শহরের ব্যস্ত সড়কে নেই গাড়ির চাপ। এ যেন অঘোষিত বনধ। করোনায় আতংকিত মানুষের ভিড় জমছে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে। আজ শনিবার সেখানে করোনাভাইরাস পরীক্ষা করতে অসংখ্য মানুষকে দেখা গেছে।

গতকাল শুক্রবার রাতে বেলেঘাটা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এক নারীর করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চিকিৎসকেরা। এ নিয়ে পশ্চিমবঙ্গে করোনা রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে তিনজন। ২৩ বছর বয়সী এই নারীর বাড়ি রাজ্যের উত্তর ২৪ পরগনার হাবড়ায়। তিনি স্কটল্যান্ড থেকে দেশে ফিরে সরাসরি বেলেঘাটার আইডি হাসপাতালে চিকিৎসকের পরামর্শ নেন। পরীক্ষা শেষে গতকাল রাতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, তিনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।

পশ্চিমবঙ্গে প্রথম করোনা আক্রান্ত রোগীর সন্ধান মেলে গত বুধবার। আক্রান্ত রোগী যুক্তরাজ্যর লন্ডন থেকে মুম্বাই হয়ে কলকাতা আসেন। প্রথম রোগীর বয়স ১৮ বছর। দ্বিতীয় রোগীও এসেছেন লন্ডন থেকে। তিনি দিল্লি হয়ে কলকাতা এসেছেন। তার বয়স ২২ বছর। ওই রোগীর বাড়ি কলকাতার বালিগঞ্জ এলাকায়। গত ১৩ মার্চ সন্ধ্যায় সে কলকাতায় ফিরে সোজা বাড়ি চলে যান। রোগের কথা লুকিয়ে রাখেন বাড়িতে। এরপর গতকাল শুক্রবার তাঁর শরীরে করোনার উপসর্গ দেখা দিলে তাঁকে ভর্তি করা হয় বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে। গতকাল জানা যায়, তিনি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত। এরপর আক্রান্ত ওই রোগীর পরিবারের অন্য ১১ জনকে কলকাতার উপশহর রাজারহাটে গড়া কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়।

এই নিয়ে পশ্চিমবঙ্গে তিন ব্যক্তি করোনা ভাইরাসে পশ্চিমবঙ্গে আক্রান্ত হলো। আর এখন পর্যন্ত সারা ভারতে ২৩৬ জন করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের কথা জানিয়েছে সরকার। এর মধ্যে ১৯১ ভারতীয় এবং ৩২ জন বিদেশি। আর সারা দেশে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫।

এদিকে করোনার জেরে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বেড়েছে। শহরের অধিকাংশ স্থানে লোক সমাগম কমে গেছে। মানুষ বাড়ি থেকে বের হচ্ছে না। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে খুব বেশি জরুরি প্রয়োজন না হলে মানুষকে বাইরে বের না হওয়ার অনুরোধ করা হয়েছে।

বেলেঘাটার হাসপাতালের মানুষের লাইন। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি

করোনা ভাইরাসের প্রভাব পড়েছে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যর বাজারে। খাদ্যদ্রব্যসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য কেনার হার বেড়ে যাওয়ায় পণ্যের দাম বেড়ে গেছে। পাশাপাশি বেড়েছে মাস্ক এবং স্যানিটাইজারের দাম। কেন্দ্রীয় সরকার ঘোষণা দিয়েছে, একটি সাধারণ মাস্ক ১০ রুপি এবং ২০০ এমএল ওজনের একটি স্যানিটাইজার ১০০ রুপির বেশি মূল্যে বিক্রি করা যাবে না। করলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এদিকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা দিয়েছেন, যদি কেউ নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেশি নেয় বা মজুদ করে তাহলে ওই ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মুখ্যমন্ত্রী আগামী সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গ সরকার রাজ্যের সমস্ত রেশনকার্ডধারী গরিব মানুষকে বিনা পয়সায় চালডাল বিতরণ করার ঘোষণা দিয়েছেন। আর রাজ্যের পঞ্চায়েত দপ্তর বিনা মূল্যে রাজ্যের গরিব মানুষদের স্যানিটাইজার বিতরণ শুরু করেছে।