Thank you for trying Sticky AMP!!

করোনায় কলকাতা হাইকোর্টে জরুরি মামলা ছাড়া শুনানি নয়

কলকাতা হাইকোর্ট। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি

করোনাভাইরাসের আতঙ্কে পশ্চিমবঙ্গে আজ সোমবার থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত সব সরকারি-বেসরকারি স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা বন্ধ। জরুরি মামলা ছাড়া কোনো মামলার শুনানি হবে না কলকাতা হাইকোর্টে। ১৯ থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত বন্ধ থাকবে কলকাতার টালিগঞ্জের সিনেমাপাড়ার শুটিংয়ের কাজ।

পশ্চিমবঙ্গ সরকার আগেই ঘোষণা দিয়েছে, করোনার কারণে ১৬ থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত রাজ্যের সব সরকারি-বেসরকারি স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা বন্ধ থাকবে।

করোনাভাইরাসের কারণে আজ থেকে বন্ধ হয়ে গেছে কলকাতার সঙ্গে ঢাকা ও খুলনার মধ্যে চলাচলকারী মৈত্রী ও বন্ধন এক্সপ্রেস ট্রেন। একই কারণে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে স্থলসীমান্তপথের যাত্রী চলাচল। তবে দুই দেশের পাসপোর্টধারী যাত্রীদের বিশেষ ব্যবস্থায় সীমান্ত পারাপারের ব্যবস্থা থাকছে। বিশেষ ব্যবস্থার আওতাভুক্ত থাকছেন কূটনীতিক, বিদেশে কর্মরত চাকরিজীবী ও আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থায় কর্মরত চাকরিজীবীরা।

কলকাতা হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল রাই চট্টোপাধ্যায় গতকাল এক প্রশাসনিক নির্দেশ জারি করে জানিয়েছেন, জরুরি ছাড়া কোনো মামলার শুনানি হবে না কলকাতা হাইকোর্টে। প্রয়োজন ছাড়া হাইকোর্টে সাধারণ বিচারপ্রার্থীদের না যাওয়ারও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ২০ মার্চ পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত দেওয়া হবে।

বিভিন্ন নিম্ন আদালতেও অতি প্রয়োজনীয় মামলা ছাড়া কোনো মামলার শুনানি হবে না। মামলায় যদি কোনো পক্ষ উপস্থিত না থাকে, তবে সেই মামলায় বিরূপ রায় না দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এমনকি আদালতে আসামিদের উপস্থিত না করারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিচারকদের সঙ্গে থাকা শিক্ষানবিশদের আদালতে না যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

কলকাতা হাইকোর্টে আজ থেকে নিয়োগ করা হয়েছে স্বাস্থ্যকর্মী ও চিকিৎসক। তাঁরা বিচারপতি, আইনজীবী, হাইকোর্টে যাতায়াতকারীদের বিভিন্ন গেটে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করবেন।

হাইকোর্ট থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, মামলাকারীরা যেন অযথা আদালতে এসে ভিড় না জমান। এ ছাড়া বন্ধ রাখা হচ্ছে বার কাউন্সিল।

১৯ থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত বন্ধ থাকবে টালিগঞ্জের ছবিপাড়ার সিনেমা, ধারাবাহিক ও ওয়েব সিরিজের শুটিং। মুম্বাইয়ে আগেই বন্ধ হয়েছে শুটিং।

পশ্চিমবঙ্গের গাইঘাটার ঐতিহ্যবাহী মতুয়া মহাসম্মেলন বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এই মহাধর্ম সম্মেলন ২১ মার্চ শুরু হওয়ার কথা ছিল। পশ্চিমবঙ্গের ঐতিহ্যবাহী দক্ষিণেশ্বর ও বেলুড় মঠ মন্দির দর্শনে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। মন্দিরের প্রসাদ বিতরণও বন্ধ করা হয়েছে।

বিদেশ থেকে, বিশেষ করে করোনায় আক্রান্ত ৭টি দেশ থেকে উড়োজাহাজে করে কলকাতায় আসা যাত্রীদের কোয়ারেন্টিনে রাখার জন্য রাজারহাটের চিত্তরঞ্জন ক্যানসার ইনস্টিটিউটের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসে রাখার বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এই ৭টি দেশ হলো চীন, কোরিয়া, ইতালি, ইরান, ফ্রান্স, জার্মানি ও স্পেন।

গত শুক্রবার পশ্চিমবঙ্গ স্বাস্থ্য দপ্তর সন্দেহভাজন রোগীদের গৃহপর্যবেক্ষণে রাখার নির্দেশ দেয়। শুক্রবার ১১৮ জনকে গৃহপর্যবেক্ষণে রাখা হয়। শনিবার রাখা হয় ১ হাজার ২৬৭ জনকে। রোববার রাখা হয় ২ হাজার ৩৯০ জনকে। এঁদের ওপর নজরদারি জারি রেখেছে রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তর।

ভারতের ১৩টি রাজ্যে করোনায় আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে। এখন পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গে কোনো করোনায় আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়নি। তবে পশ্চিমবঙ্গে কয়েকজন সন্দেহভাজন রোগী আছেন। কলকাতার বেলেঘাটার আইডি হাসপাতালে গতকাল সন্দেহভাজন ৩ জনকে ভর্তি করা হয়। এ নিয়ে সেখানে এখন ১৩ জন সন্দেহভাজন রোগী রয়েছেন। তাঁদের পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে।