Thank you for trying Sticky AMP!!

হাওড়া স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকা লোকাল ট্রেন

কলকাতা ফিরল কলকাতায়

ট্রেনে চেপে শহর বা শহরতলির অজস্র মানুষ ছুটছে। সকাল-সন্ধ্যায় একই চিত্র দেখা যেত কলকাতায়। এই শহরের অপরিহার্য অঙ্গ ছিল ট্রেন। সে হোক পাতাল বা লোকাল ট্রেন। কিন্তু করোনার কোপে এ বছরের ২৩ মার্চ থেকে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল কলকাতার এই দুই ট্রেন। সেই চিরচেনা রূপে আজ বুধবার থেকে ফিরছে আনন্দনগরী।

আজ ভোর পাঁচটা থেকে ফের ঘুরল কলকাতার লোকাল ট্রেনের চাকা। চালু হয়ে গেল কলকাতার ঐতিহ্যবাহী ইলেকট্রিক লোকাল ট্রেন। এই ট্রেন চলাচল শুরু হয় পশ্চিমবঙ্গের তিনটি রেল ডিভিশন থেকে। আজ চালু হলো ৬৯৬টি ট্রেন। এর মধ্যে শিয়ালদহ ডিভিশনে ৪১৩টি, হাওড়া ডিভিশনে ২০২টি ও খড়গপুর ডিভিশনে ৮১টি ট্রেন। সেই সঙ্গে মেট্রো বা পাতালরেলের সংখ্যাও আজ থেকে বাড়ানো হয়েছে।

রেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, করোনার বিধি মেনে প্রত্যেক যাত্রীকে ট্রেনে উঠতে হবে।

বসতে হবে সামাজিক দূরত্ব মেনে। বসার তিন আসনের মাঝেরটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তাই তিন আসনে বসতে হবে এখন দুজন যাত্রীকে। মাঝের আসনে না বসার অনুরোধ জানিয়ে রেল কর্তৃপক্ষ একটি স্টিকারও লাগিয়ে দিয়েছে।

রেল কর্তৃপক্ষ ট্রেন চলাচল শুরুর আগে নির্দেশিকা প্রকাশ করে বলেছে, প্রত্যেক যাত্রীকে মাস্ক পরে ট্রেনে উঠতে হবে। প্রয়োজনে  হাতের কাছে রাখতে হবে স্যানিটাইজার। স্টেশনেও থাকছে স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা। প্রতিটি ট্রেনকে প্রতিদিনই স্যানিটাইজ করে নামাতে হবে। প্রতিটি স্টেশনকে পরিষ্কার রাখতে হবে। পরিষ্কার রাখতে হবে শৌচাগারকে। স্টেশনে মোতায়েন রাখতে হবে পুলিশ ও রেল পুলিশকে।

রাখতে হবে গার্ডরেলও। ওই গার্ডরেলই দেখিয়ে দেবে ঢোকা ও বের হওয়ার পথ।
রেল কর্তৃপক্ষ আরও জানিয়েছে, অফিস সময়ে যাত্রীদের চাপ কমাতে চালানো হবে ৮৫ শতাংশ ট্রেন।

কলকাতার লাখো অফিসযাত্রীসহ জীবন–জীবিকার জন্য যাঁরা প্রতিদিন পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন এলাকায় রুটিরুজির জন্য ছোটেন, তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে এই লোকাল ট্রেন ও পাতালরেল চালুর দাবি জানিয়ে আসছিলেন। তাঁদের কথা বিবেচনা করে রেল কর্তৃপক্ষ লোকাল ও পাতালরেল চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

এই দাবির প্রতি সাড়া দিয়ে এ বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর থেকে করোনার নিয়ম–বিধি মেনে চালু করা হয় কলকাতার মেট্রোরেল। এরপরেই কলকাতার লোকাল ট্রেন চালানোর জোর দাবি ওঠে। এই দাবির প্রতি সায় দেয় পশ্চিমবঙ্গ সরকারও। তারাও দাবি তোলে অবিলম্বে লোকাল ট্রেন চালানোর। এরপরই এই দাবির প্রতি সায় দেয় কেন্দ্রীয় রেল মন্ত্রণালয়। গোটা রেলব্যবস্থা অবশ্য নিয়ন্ত্রণ করে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারই।

রেল কর্তৃপক্ষ সূত্রে প্রকাশ, আগে কলকাতার হাওড়া, শিয়ালদহ ও খড়গপুর ডিভিশন থেকে প্রতিদিন ৯১৩টি লোকাল ট্রেন চলাচল করত। আজ থেকে চলাচল শুরু করেছে ৬৯৬টি ট্রেন। তবে ট্রেনের ব্যস্ত সময়ে এর সংখ্যা বাড়ানো হবে। ব্যস্ত সময় হলো সকাল ৮টা থেকে বেলা ১১টা এবং বিকেল সাড়ে ৪টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা।

আজ থেকে কলকাতার মেট্রোরেলের সংখ্যাও বাড়ানো হয়েছে। এখন দিনে ১৫২টি মেট্রোরেল চলাচল করে। আজ থেকে তা বাড়িয়ে চলবে ১৯০টি। আগে ব্যস্ত সময়ে ১০ মিনিট অন্তর ট্রেন চলত। এবার তা চলবে প্রতি ৭ মিনিট অন্তর। যদিও কলকাতার মেট্রোরেল করোনার কারণে ২৩ মার্চ থেকে বন্ধ হয়ে যায়; তবে মাঝে ১৪ সেপ্টেম্বর থেকে ফের আংশিক মেট্রোরেল চালু করা হয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে।