Thank you for trying Sticky AMP!!

কোহিনুর ব্রিটিশদের দেওয়া হয়েছিল বাধ্য হয়ে

কোহিনুর মুকুট

ভারত সরকার ২০১৬ সালের এপ্রিলে সুপ্রিম কোর্টকে বলেছিল, যুক্তরাজ্য কোহিনুর হীরা চুরি করেনি অথবা জোর করে নেয়নি। তৎকালীন পাঞ্জাবে ক্ষমতায় থাকা মহারাজা রঞ্জিত সিংহের উত্তরাধিকারীরা ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিকে এটি উপহার দিয়েছিলেন। তবে সরকারের এই বক্তব্যের সঙ্গে সম্প্রতি দ্বিমত পোষণ করছে আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া (এএসআই)। তারা বলছে, আসলে ইংল্যান্ডের রানি ভিক্টোরিয়াকে কোহিনুর দিতে বাধ্য হয়েছিলেন লাহোরের মহারাজা।

জনস্বার্থে করা এক মামলায় এর আগে সরকার বলেছিল, মহারাজা রঞ্জিত সিংহের উত্তরাধিকারীরা ‘অ্যাংলো-শিখ’ যুদ্ধের ‘ক্ষতিপূরণ হিসেবে’ যুক্তরাজ্যকে স্বেচ্ছায় এই কোহিনুর দিয়েছিলেন।

কোন কারণে কোহিনুর ভারত থেকে যুক্তরাজ্যে গেল, সেই বিষয়টি জানতে চেয়ে তথ্য অধিকার আইনে (আরটিআই) দেশটির সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে সম্প্রতি আবেদন করেন ভারতের অধিকারকর্মী রোহিত সাভারওয়াল। সেই আবেদনের জবাব থেকেই বেরিয়ে এসেছে এমন তথ্য। রোহিত বলেন, ‘কার কাছে আরটিআই আবেদন করব, সেই ব্যাপারে আমার ধারণা ছিল না। আমি সরাসরি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দপ্তর বরাবর পাঠিয়েছিলাম আবেদনটি। প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর আবেদনটি পাঠিয়ে দেয় এএসআই দপ্তরে। সঠিক জবাব পেতে সরকারি এক দপ্তর থেকে আরেক দপ্তরে আবেদন পাঠানোর অনুমতি দেওয়া আছে আরটিআই আইনে।’

রোহিতের প্রশ্ন ছিল, ভারতের কর্তৃপক্ষ কোহিনুর হীরা যুক্তরাজ্যকে উপহার দিয়েছিল, না এর পেছনে অন্য কারণ ছিল। জবাবে এএসআই বলেছে, লর্ড ডালহৌসি ও মহারাজা দুলিপ সিংহের মধ্যে ১৮৪৯ সালে লাহোর চুক্তি হয়। ওই চুক্তি অনুযায়ী লাহোরের মহারাজা ওই কোহিনুর হীরা ইংল্যান্ডের রানিকে দিতে বাধ্য হন।

এই চুক্তির সারমর্মও এএসআইয়ের জবাবে তুলে ধরা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, ওই চুক্তি অনুযায়ী কোহিনুর হীরা শাহ-সুজা-উল-মুলকের কাছ থেকে নেবেন মহারাজা রঞ্জিত সিংহ। তারপর সেটি ইংল্যান্ডের রানি ভিক্টোরিয়ার কাছে দিতে বাধ্য থাকবেন লাহোরের মহারাজা। এএসআই আরও জানিয়েছে, ওই চুক্তি থেকে দেখা যাচ্ছে, দুলিপ সিংহ ইচ্ছাকৃতভাবে কোহিনুর হীরা যুক্তরাজ্যকে দেননি।

এএসআইয়ের এই বক্তব্যকে সমর্থন দিয়েছেন মহারাজা দুলিপ সিংহ মেমোরিয়াল ট্রাস্টের চেয়ারম্যান ও কবি গুরুভজন সিংহ গিল। গুরুভজন বলেছেন, তিনি এ কথাটাই দীর্ঘদিন ধরে বলার চেষ্টা করছেন।

রোহিত বলেন, ‘সম্প্রতি আমি যুক্তরাজ্যের একজন নাগরিকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলাম, যিনি আমাকে বলেছিলেন, কোহিনুর রানিকে উপহার দেওয়া হয়েছে। তখন থেকে আমি এই বিষয়ে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করতে শুরু করি।’