Thank you for trying Sticky AMP!!

তৃণমূল কংগ্রেসে পরিবারতন্ত্র চালু!

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

তৃণমূল কংগ্রেসেরই অভ্যন্তরে পরিবারতন্ত্র জেঁকে বসছে। যে পরিবারতন্ত্রকে অস্ত্র বানিয়ে নেতা হয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা, এখন তাঁর দলের ভেতর এ চর্চা নিয়ে কথা উঠতে শুরু করেছে। তৃণমূলে পরিবারতন্ত্রের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন মমতারই এক নিকট আত্মীয়।

১৯৯৮ সালে কংগ্রেস ভেঙে দল থেকে বেরিয়ে এসে সে সময়ের বিরোধীদলীয় নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গড়েছিলেন নতুন দল তৃণমূল কংগ্রেস। কংগ্রেসকে তুলাধোনা করতে নেমে পড়েছিলেন রাজনীতির ময়দানে মমতা। ভেঙে দিয়েছিলেন কংগ্রেসের সাজানো বাগান। তারপর ধীরে ধীরে গড়ে তুলেছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসকে জনপ্রিয়তার শিখরে। সেদিনও মমতা কংগ্রেসের পরিবারতন্ত্রের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন। মমতার বিরোধিতা ছিল কংগ্রেসের পরিবারতন্ত্রের বিরুদ্ধে। তাই কংগ্রেসের বিরুদ্ধে অভিযোগ জোরালো করে তুলেছিলেন মমতা। কংগ্রেসের বিরুদ্ধে শাণিত মমতার রাজনৈতিক অস্ত্রে একসময় ঘায়েল হয়ে পড়ে মূল কংগ্রেস। ধীরে ধীরে জনপ্রিয়তা হারাতে থাকে। অন্যদিকে, জনপ্রিয়তা পেতে থাকে মমতার তৃণমূল কংগ্রেস।

সেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এখন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী এবং দলের একচ্ছত্র নেত্রী। তৃণমূল বলতে এখনো তাঁকেই বোঝায়। কিন্তু কে হবেন মমতার উত্তরাধিকারী? এ বিষয়টি নিয়ে এত দিন রাজনৈতিক অঙ্গনে কানাঘুষা ছিল। কেউ মুখ খুলে কোনো কথাও বলতে পারেনি। কারণ, মমতাই দলের সর্বেসর্বা।

যদিও সম্প্রতি মমতার দল তৃণমূল কংগ্রেসের মহাসচিব ও পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এই বিতর্কের মাঝে বলেছেন, তৃণমূলে মমতার উত্তরাধিকারী হবেন দলের তরুণ সাংসদ এবং তৃণমূল যুব কংগ্রেসের রাজ্য সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (৩০)। এ প্রস্তাবের পক্ষে সিলমোহর দিয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক ও সাংসদ সুব্রত বক্সিও। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় মমতার বড় ভাই অমিত বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছেলে। নতুন এসেছেন রাজনীতিতে।

এদিকে, অভিষেককে মেনে নিতে পারছেন না মমতার ছোট ভাই কার্তিক বন্দ্যোপাধ্যায়। কার্তিক বন্দ্যোপাধ্যায়ও তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে যুক্ত। তবে তিনি অন্যদের মতো সেই সুযোগ-সুবিধা আদায় করে নিতে পারেননি।

গত শনিবার কলকাতার রোটারি সদনে কার্তিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের একটি সামাজিক সংগঠন ‘বিবেক’ আয়োজন করেছিল একটি অনুষ্ঠানের। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কার্তিক বন্দ্যোপাধ্যায়। অনুষ্ঠানে সেদিন দেখা যায় একটি লিফলেট। লিফলেটের ভাষা ছিল, ‘পরিবারতন্ত্রের হাতে বিপন্ন গণতন্ত্র’।

লিফলেটে বলা হয়, ‘গতকালও যাকে রাজনীতির ময়দানে দেখা যায়নি, পরিবারতন্ত্রের হাত ধরে আজ সে রাজনীতির শীর্ষস্থানে চলে যাচ্ছে।’ তাঁর ইঙ্গিত অভিষেকের দিকে।

দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডায়মন্ড হারবার আসনের তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সাংসদ হিসেবে কী কাজ করেছেন, তা নিয়ে ‘নিঃশব্দ বিপ্লব’ নামের একটি বই প্রকাশ করা হয়েছে। অভিষেকের বিরুদ্ধে সমালোচনা থাকলেও পার্থ-সুব্রত বক্সিরা তাঁকে সমর্থন দিয়ে বলেছেন, দলের উত্তরাধিকারী হচ্ছেন অভিষেক।

ভারতের কয়েকটি সংবাদমাধ্যম বলছে, কার্তিক বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাকা-ভাইপোর সম্পর্ক সুখকর নয়। পরিবারতন্ত্র ইস্যু তুলে তারই বহিঃপ্রকাশ ঘটানো হচ্ছে।