Thank you for trying Sticky AMP!!

দলিত ক্ষোভে আসন নড়বড়ে হতে পারে মোদির

দলিত মানুষের পক্ষে বক্তব্য রেখেই চলেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। কিন্তু তাতে বিজেপি বা আরএসএসের নেতাদের দলিতবিরোধী মনোভাবের কোনো পরিবর্তন হচ্ছে না। ছবি: রয়টার্স

দিল্লির মসনদ দখলের পর থেকে ধীরে ধীরে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে সরকার গঠন করছে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)। বামপন্থী বা কংগ্রেস বা আঞ্চলিক কোনো রাজনৈতিক দলই বিজেপির সাফল্যে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি। এমনকি জোরদার আন্দোলন গড়ে তুলতেও ব্যর্থ হয়েছে তারা। অথচ সেই বিজেপির বিরুদ্ধে স্বতঃস্ফূর্ত ক্ষোভের সুস্পষ্ট বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছে দলিত সম্প্রদায়ের মানুষ। বিশ্লেষকেরা বলছেন, এতে ভোট ব্যাংক থেকে শুরু করে বিজেপির রাজনীতি—সবকিছুই ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। টলে উঠতে পারে মোদির গদিও!

এপ্রিলের ২ তারিখ। কিছু দলিত গোষ্ঠী ‘ভারত বন্‌ধ্‌’ ডেকেছিল সেদিন। প্রায় দুই সপ্তাহ আগে দেশটির সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টের দেওয়া এক রায়ের প্রতিবাদে এই বন্‌ধ্‌ ডাকা হয়। তফসিলি জাতি ও উপজাতিদের (শিডিউলড কাস্ট ও শিডিউলড ট্রাইব) বিরুদ্ধে সহিংসতা প্রতিরোধ করতে ১৯৮৯ সালে একটি আইন প্রণয়ন করা হয়েছিল। আদালত সেই আইনের কিছু কঠোর বিধান পরিবর্তন করার আদেশ দেন। আর তারই প্রতিবাদে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে দলিত সম্প্রদায়ের মানুষেরা। ভারতের ১০টি রাজ্যে ছড়িয়ে পড়ে সহিংসতা। নেতৃত্ববিহীন এই বিক্ষোভে দলিত সম্প্রদায়ের মানুষেরা পুলিশ ও উচ্চবর্ণের হিন্দুদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। ফলাফল: ১১ জনের মৃত্যু ও কোটি কোটি রুপির সম্পদ ধ্বংস। এই বিক্ষোভ এতটাই আচমকা ও স্বতঃস্ফূর্ত ছিল যে সরকারি দলের পাশাপাশি বিরোধী দলগুলোও কিছুটা অপ্রস্তুত হয়ে পড়ে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, তফসিলি জাতি ও উপজাতিদের বিরুদ্ধে সহিংসতা প্রতিরোধের আইনটি ছিল ওই সব সম্প্রদায়ের মানুষের নিরাপত্তা ঢাল। উচ্চবর্ণের হিন্দুদের অত্যাচার থেকে বাঁচাতেই এ আইন করা হয়েছিল। কিন্তু সর্বোচ্চ আদালত আইনের কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিধান বাতিল করেছেন। এসবের মধ্যে রয়েছে অনগ্রসর জাতিগোষ্ঠীর কারও বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় আগাম জামিন বাতিল, সরকারি কর্মচারী হলে শুধু ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে গ্রেপ্তার করা ইত্যাদি। অথচ তফসিলি জাতি-উপজাতিভুক্ত নয়, এমন সাধারণ নাগরিকের (যাঁরা সরকারি কর্মচারী) ক্ষেত্রে গ্রেপ্তার করতে হলে পুলিশের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তার অনুমতি প্রয়োজন হয়। কিন্তু পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য তা প্রয়োজন নেই বলে অভিমত দিয়েছেন আদালত। মজার বিষয় হলো, আদালতের পর্যালোচনায় বলা হয়েছে একটি ‘বর্ণহীন সমাজ’ গঠন করতেই এ আদেশ দেওয়া হয়েছে!

ভারতের সুপ্রিম কোর্টের দেওয়া এক রায়ের প্রতিবাদে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে দলিত সম্প্রদায়ের মানুষ। ভারতের ১০টি রাজ্যে ছড়িয়ে পড়ে সহিংসতা। ছবি: এএফপি

অবশ্য শাসক দল ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) নেতৃত্বাধীন নরেন্দ্র মোদি সরকারের আইনজীবী মনীন্দর সিং আইনে বদল না আনার জন্যই লড়েছিলেন। আদালতের প্রতি আরজি জানিয়ে তিনি বলেছিলেন, আইন সংশোধনের বিষয়টি যেন পার্লামেন্টের ওপর ছেড়ে দেওয়া হয়। আদালত সেই কথায় কান দেননি। আদালতের রায়ের পর্যালোচনা চেয়ে সরকারপক্ষ পিটিশন দায়ের করেছে আরও দুই সপ্তাহ পর। এই দেরির কোনো সন্তোষজনক ব্যাখ্যা অবশ্য নরেন্দ্র মোদির সরকার দেয়নি।

ভারতের তেলেঙ্গানা রাজ্যের শতাধিক সামাজিক ও গণসংগঠনের জোট ‘টি-মাস’-এর চেয়ারম্যান কাঞ্ছা ইলাইয়াহ শেফার্ড এ বিষয়টি নিয়ে সম্প্রতি একটি নিবন্ধ লিখেছেন। ইন্ডিয়া টুডে ম্যাগাজিনে প্রকাশিত সেই নিবন্ধে তিনি লিখেছেন, সরকারের কার্যক্রম আদতে বিজেপির নিয়ন্ত্রণে নেই। এটি চলে গেছে রাষ্ট্রীয় সেবক সংঘের (আরএসএস) হাতে। আর দলিত বা আদিবাসীদের জন্য কোনো সহানুভূতি নেই আরএসএসের। সমাজের উঁচু বর্ণের মানুষ ও গরু নিয়েই তাদের কারবার। আরএসএস যে হিন্দু মাতৃভূমির কথা বলে, তাতে এসব অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর স্থান নেই। আরএসএস শুধু ব্রাহ্মণ, বৈশ্য ও ক্ষত্রিয়দের উন্নয়ন নিয়ে ভাবে। তাই পরোক্ষভাবে দলিত সম্প্রদায় ধ্বংসের নীতিতে মদদ দেওয়া হচ্ছে। আর এর প্রতিক্রিয়াতেই সৃষ্টি হয়েছে দলিত বসন্ত।

নেতৃত্ববিহীন বিক্ষোভে দলিত সম্প্রদায়ের মানুষেরা পুলিশ ও উচ্চবর্ণের হিন্দুদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এই সংঘর্ষে ১১ জনের মৃত্যু ও কোটি কোটি রুপির সম্পদ ধ্বংস হয়। ছবি: রয়টার্স


দলিতেরা কী অবস্থায়?
গত মাসে দেওয়া আদালতের রায়ে বলা হয়েছে, তফসিলি জাতি ও উপজাতিদের বিরুদ্ধে সহিংসতা প্রতিরোধ আইনের অনেক অপব্যবহার হয়। ২০১৫ সালের সরকারি হিসাব অনুযায়ী, ওই বছরে দায়ের করা প্রায় ১৬ শতাংশ অভিযোগ ছিল মিথ্যা। আর বাকি মামলাগুলোর ৭৫ শতাংশই পরে প্রত্যাহার করা হয়েছিল।

তবে আদালতের দেওয়া এই তথ্য সার্বিক চিত্র নয় বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা। দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞানের অধ্যাপক বিবেক কুমার ইন্ডিয়া টুডেকে বলেন, আইনটি পরিপূর্ণভাবে ব্যবহারই করা হয়নি। আইনের অপব্যবহারের দাবি অতিরঞ্জিত। পত্রিকাটির বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, স্বাধীনতার সাত দশক পেরিয়ে গেলও ভারতের দলিত সম্প্রদায়ের তিন-চতুর্থাংশ এখনো প্রত্যন্ত অঞ্চলে থাকেন। এই সম্প্রদায়ের মানুষের ৮৪ শতাংশের মাসিক রোজগার পাঁচ হাজার রুপির নিচে।

ভারতের ন্যাশনাল ক্রাইম রিসার্চ ব্যুরোর সাম্প্রতিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৫-১৬ সালে উত্তর প্রদেশে দলিতদের বিরুদ্ধে অপরাধ বেড়েছে ২৫ শতাংশ। বিজেপি শাসিত হরিয়ানা ও গুজরাটের মতো রাজ্যগুলোতেও এ হার বেড়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, হিন্দুত্ববাদী রাজনীতি এর অন্যতম কারণ।

দিল্লিভিত্তিক ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব দলিত স্টাডিজের (আইআইডিএস) পরিচালক ও অধ্যাপক শঙ্ঘমিত্রা শীল আচার্য বলছেন, দলিতদের ওপর যারা অত্যাচার করে, তারা সামাজিক মর্যাদার দিক থেকে উঁচু তলার মানুষ। তাই দলিত সম্প্রদায়ের লোকদের পক্ষে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করাই দুরূহ বিষয়। অনেক ক্ষেত্রে পুলিশও মামলা নিতে চায় না। মামলা করলেও সামাজিক ও অর্থনৈতিক চাপের কারণেই তা প্রত্যাহার করতে হয় দলিতদের। সুতরাং অপরাধ না হওয়ায় মামলা প্রত্যাহার করা হয়, তা নয়। বরং সামাজিক মর্যাদার অভাবেই দলিতরা এটি করতে বাধ্য হয়।

একটি জরিপের বরাত দিয়ে ইন্ডিয়া টুডের বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, বর্তমানে ভারতে দলিত সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে প্রতি ১৫ মিনিটে একটি করে অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে। প্রতিদিন দলিত সম্প্রদায়ের ছয়জন নারী ধর্ষণের শিকার হচ্ছেন। গত ১০ বছরে ভারতে দলিত নির্যাতনের ঘটনা বেড়েছে ৬৬ শতাংশ।

২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী, ৬০ শতাংশ দলিত সম্প্রদায়ভুক্ত মানুষ কোনো অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশ নিতে পারছেন না। যাঁরা কাজ করছেন, তাঁদের ৫৫ শতাংশই কৃষিকাজে জড়িত। দলিত পরিবারের শিশুদের ৫৩ দশমিক ৬ শতাংশই অপুষ্টিতে ভোগে। একই সঙ্গে স্যানিটেশন ও বিশুদ্ধ পানি ব্যবহারের সুযোগ পান ২০ শতাংশের কম মানুষ।

টি-মাসের চেয়ারম্যান কাঞ্ছা ইলাইয়াহ শেফার্ড বলছেন, উচ্চশিক্ষা লাভের ক্ষেত্রেও বৈষম্যের শিকার হচ্ছে দলিতরা। সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ নামের সংগঠনের উচ্চবর্ণের হিন্দু শিক্ষার্থীদের নির্যাতনের ভয়ে থাকে তারা।

সমাজবিজ্ঞানী দীপঙ্কর গুপ্ত মনে করেন, যখন শোষিত শ্রেণি নিজেদের অধিকার দাবি করে, তখন সংঘাত অনিবার্য। যুক্তরাষ্ট্রে কৃষ্ণাঙ্গদের সঙ্গে শ্বেতাঙ্গদের এমনই হয়েছিল। ভারতেও দলিত সম্প্রদায়ের সঙ্গে তেমনটিই হচ্ছে।

দলিত বিক্ষোভ এতটাই আচমকা ও স্বতঃস্ফূর্ত ছিল যে সরকারি দলের পাশাপাশি বিরোধী দলগুলোও কিছুটা অপ্রস্তুত হয়ে পড়ে। অমৃতসরে প্রতিবাদের সময় পোড়ানো হয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কুশপুত্তলিকা। ছবি: এএফপি


ভোটের রাজনীতি
ভারতের দলিত সম্প্রদায়ের রয়েছে প্রচুর ভোট। আর এ কারণেই সব রাজনৈতিক দলের গুরুত্বপূর্ণ এজেন্ডায় পরিণত হয়েছে দলিতরা। ২০১৪ সালে দলিতদের কাছ থেকে মোট ভোটের ২৪ শতাংশ পেয়েছিল বিজেপি। উত্তর প্রদেশ রাজ্যে মায়াবতীর বহুজন সমাজবাদী পার্টি (বিএসপি) দলিত সম্প্রদায়ের সমর্থনেই টিকে ছিল অনেক দিন। ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে তাতে ধস নামে। আর তাতেই ক্ষমতার বাইরে চলে যায় বিএসপি।

ইন্ডিয়া টুডের বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেস, ওডিশায় বিজু জনতা দল এবং তামিলনাড়ুতে এআইএডিএমকের দখলে আছে দলিত সম্প্রদায়ের বেশির ভাগ ভোট। তেলেঙ্গানায় আগে কংগ্রেস দলিতদের ভোট বেশি পেত। কিন্তু এখন তা চলে গেছে তেলেঙ্গানা রাষ্ট্র সমিতির কাছে।

চলতি বছর চারটি রাজ্যে নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। আগামী বছরের শুরুতেই হবে লোকসভা নির্বাচন। এখন বিজেপি যদি দলিত সম্প্রদায়ের ভোট পেতে চায়, তবে অবশ্যই এই সম্প্রদায়ের দাবির প্রতি সম্মান দেখাতে হবে। দলিতদের অস্বীকার করলে, তা বিজেপির জন্য শুধু দুর্ভোগই নিয়ে আসবে। কারণ, বিহার ও দিল্লিতে বিজেপির সাম্প্রতিক বিপর্যয়ের মূলেও আছে দলিতরা। অন্যদিকে, বিরোধী দলগুলো দলিত সম্প্রদায়ের ক্ষোভকে পুঁজি করে ভোট ছিনিয়ে নিতে তৎপর।

বিজেপির বিরুদ্ধে স্বতঃস্ফূর্ত ক্ষোভের সুস্পষ্ট বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছে দলিত সম্প্রদায়ের মানুষ। এতে ভোট ব্যাংক থেকে শুরু করে বিজেপির রাজনীতি—সবকিছুই ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। ছবি: রয়টার্স


বিজেপি যেভাবে দেখে
নির্বাচনের বৈতরণি পার হতে হলে নরেন্দ্র মোদির বিজেপিকে দলিত সম্প্রদায়ের ভোট পেতেই হবে। অথচ বিজেপির অন্যান্য নেতাদের কাছে দলিতদের প্রতি ঘৃণা ভিন্ন কিছু নেই। মোদি মন্ত্রিসভার সদস্য অনন্ত কুমার হেগড়ে গত ৩০ মার্চ প্রকাশ্যে দলিতবিরোধী মন্তব্য করেন। তিনি দলিতদের কুকুরের সঙ্গে তুলনা করেছিলেন। এর আগে গত ডিসেম্বরে ভারতের সংবিধান পাল্টে ফেলার কথা বলেছিলেন তিনি। সেই বক্তব্যে অনগ্রসর জাতিগোষ্ঠী হিসেবে দলিতদের জন্য বরাদ্দ সরকারি সুযোগ-সুবিধা বাতিলের ইঙ্গিতই ছিল।

ইন্ডিয়া টুডের বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, ২০১৬ সালে বিজেপি নেতা দয়াশংকর সিং এক বিস্ফোরক মন্তব্য করেছিলেন। দলিত সম্প্রদায়ের প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেত্রী ও বহুজন সমাজবাদী পার্টির প্রধান মায়াবতীকে ‘পতিতার চেয়েও খারাপ’ বলে অভিহিত করেছিলেন তিনি। এ ছাড়া উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার আগে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন হতে দলিত সম্প্রদায়ের দর্শনার্থীদের দেওয়া হয় শ্যাম্পু ও সাবান।

এসব থেকেই বোঝা যায়, দলিত সম্প্রদায়ের প্রতি বিজেপি নেতাদের দৃষ্টিভঙ্গি কেমন। আর এই জায়গাতেই আটকে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তাঁর শুকনো কথায় এখন আর বিজেপি নেতাদের চিড়ে ভিজছে না। মোদি বলে দিয়েছেন, ‘চাইলে আমাকে মারো, কিন্তু আমার দলিত ভাইদের নয়।’ কিন্তু তাতে বিজেপি বা আরএসএসের নেতাদের দলিতবিরোধী মনোভাবের কোনো পরিবর্তন হচ্ছে না।

টি-মাসের চেয়ারম্যান কাঞ্ছা ইলাইয়াহ শেফার্ড বলছেন, ‘দল বা মন্ত্রী—কারও ওপরেই মোদির কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। তারা সবাই আরএসএসের দখলে। দলিত সম্প্রদায় এখন বুঝতে পারছে যে গোরক্ষা নীতির নামে দলিত ও আদিবাসীদের গবাদিপশু-নির্ভর অর্থনীতি ও খাদ্যের উৎস ধ্বংস করা হচ্ছে। এখন সরকারি চাকরি ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধায় সংরক্ষিত আসন বাতিলের আশঙ্কা দেখা দেওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে তারা।’

বেসরকারি চাকরিতে দলিত সম্প্রদায়ের শিক্ষিত যুবকেরা একেবারেই সুযোগ পাচ্ছেন না বলে মনে করেন রাজনৈতিক দল কংগ্রেসের তফসিলি জাতিগোষ্ঠী বিভাগের প্রধান কে. রাজু। তিনি বলেন, ‘বিজেপি সরকারের হাবভাবে এখন সরকারি চাকরি নিয়েও শঙ্কায় পড়ে গেছে তারা। এই বঞ্চিত দলিত সম্প্রদায় এখন পরিবর্তন চায়। তবে আদালত সম্প্রতি যে রায় দিয়েছেন, তেমন পরিবর্তন তারা চায়নি।’

কিন্তু দলিত সম্প্রদায়ের সেই পরিবর্তনের আকাঙ্ক্ষা কি নরেন্দ্র মোদির শাসনের জন্য হুমকি হয়ে উঠবে? সময়েই মিলবে এর জবাব।