Thank you for trying Sticky AMP!!

দিল্লির ঘটনায় ভারতের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন অমর্ত্য সেন

প্রতীচী ট্রাস্টের বার্ষিক আলোচনা সভায় নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক অমর্ত্য সেন। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি

নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনকে কেন্দ্র করে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লির সহিংসতার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক অমর্ত্য সেন। তিনি ভারতের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

অমর্ত্য সেন গতকাল শনিবার শান্তিনিকেতনে প্রতীচী ট্রাস্টের বার্ষিক আলোচনা সভায় যোগ দিয়ে এসব কথা বলেছেন।

সভায় অমর্ত্য সেন বলেছেন, ‘দিল্লিতে যা ঘটেছে, একজন ভারতীয় হিসেবে আমি উদ্বিগ্ন। আর এ নিয়ে ভারতের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তার কারণ আছে।’

নোবেলজয়ী এই অর্থনীতিবিদ বলেন, ‘দেশের রাজধানী কেন্দ্রীয় সরকার–নিয়ন্ত্রিত। সেখানে যদি সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচার হয়, আর সেই অত্যাচার যদি পুলিশ নিয়ন্ত্রণ করতে না পারে বা প্রয়োজনীয় চেষ্টা না করে, তাহলে সত্যিই চিন্তার কারণ আছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘এটা তো ঠিক, যাঁরা মার খাচ্ছেন, তাঁদের মধ্যে সংখ্যালঘু মুসলিম বেশি। ভারত একটা ধর্মনিরপেক্ষ দেশ। সেখানে হিন্দু-মুসলমান পার্থক্য করলে চলবে না। তাই এটা যদি ঘটতেই থাকে, তাহলে একজন গর্বিত ভারতীয় নাগরিক হিসেবে চিন্তার বড় কারণ আছে।’

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে কেন্দ্রীয় সরকারের ভূমিকা নিয়ে অমর্ত্য সেন বলেন, ‘দিল্লিতে গন্ডগোল হচ্ছে, কিন্তু কী কারণে হচ্ছে, দোষটা কোথায় হচ্ছে, এই ঘটনায় সরকারি চেষ্টার অভাব রয়েছে কি না বা পুলিশের অক্ষমতা রয়েছে কি না, তা আমাদের বিচার করতে হবে। এখন এই পরিস্থিতিতে দিল্লিকে শান্ত করা খুবই জরুরি।’

বাংলাদেশি ছাত্রীকে ভারত ছাড়ার নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে অমর্ত্য সেন সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘এ নিয়ে কাগজে যা পড়লাম, তাতে বোঝা যাচ্ছে, তিনি প্রতিবাদী মিছিলের কোনো ছবি ইন্টারনেটে দিয়েছিলেন, যার জন্য তাঁকে দেশ থেকে দূর করে দেওয়ার নির্দেশের কতটা শক্তিশালী যুক্তি রয়েছে, সেটা বিচার করা কঠিন। এখন পর্যন্ত আমি যতটুকু দেখেছি, তাতে আমি খুঁজে পাইনি, কী কারণ থাকতে পারে, যার জন্য ওই ছাত্রীকে দেশ থেকে বিতাড়ন করা হবে’। তিনি আরও বলেন, ‘তবে কোনো কারণ নেই, এটা আমি বলছি না। কিন্তু সেই কারণগুলো কী, তা আমি জানতে আগ্রহী।’

অমর্ত্য সেন ভারতের গণতন্ত্র প্রসঙ্গে বলেন, ‘ভারতের গণতন্ত্র নিয়ে উদ্বেগের কারণ তো আছেই। গণতন্ত্রে মানুষের খোলাখুলি আলোচনার সুযোগ থাকে, যেটাকে জন স্টুয়ার্ট মিল বলেছেন, “ডেমোক্রেসি ইজ গভর্নমেন্ট বাই ডিসকাশন”, তাই বলছি, কাউকে যদি “রাজদ্রোহ” বলে চাপিয়ে দেওয়া হয়, তাহলে নিশ্চয়ই ডেমোক্রেসির ঘাটতি পড়ছে বলে মনে করার কারণ রয়েছে। তাই আমি এমন বলছি না, ভারতে গণতন্ত্র যায় যায় করছে। বলছি না এই গণতন্ত্রের সপক্ষে যুদ্ধ করে জেতার সম্ভাবনা নেই। সম্ভাবনা খুবই আছে।’