Thank you for trying Sticky AMP!!

পশ্চিমবঙ্গে করোনা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে বিশেষজ্ঞ দল

কলকাতার বেলগাছিয়ায় আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে এই র‌্যাপিড অ্যান্টিবডি টেস্ট। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি

পপশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকার করোনায় আক্রান্ত মানুষের সঠিক সংখ্যা লুকাচ্ছেন, এমন অভিযোগ তুলেছে বিজেপিসহ অনেক মহল। এর পরিপ্রেক্ষিতে তদন্তে নেমেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। গতকাল সোমবার দুটি বিশেষজ্ঞ দল পাঠানো হয়েছে পশ্চিমবঙ্গে। রাজ্য সরকারের হিসাব অনুযায়ী, পশ্চিমবঙ্গে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ২৪৫ জন। মারা গেছেন ১২ জন। 

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই রাজ্যের ২৩টি জেলার মধ্যে ৭টি জেলাকে সংক্রমিত বলে চিহ্নিত করেছে । এই ৭টি জেলা হলো কলকাতা, হাওড়া, উত্তর ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর, জলপাইগুড়ি, দার্জিলিং ও কালিম্পং জেলা। এখানকার পরিস্থিতি সরেজমিনে দখতে এসেছে বিশেষজ্ঞ দল। একটি দল গেছে উত্তরবঙ্গের জেলাগুলোতে। অন্যটি গেছে কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গের জেলা সমূহ পরিদর্শনে। গতকাল সোমবারই এই দুটি দল পৌঁছে গেছে কলকাতা ও জলপাইগুড়িতে। করোনার মৃত্যু ও আক্রান্ত সংখ্যা, লকডাউন ভাঙার নানা অভিযোগও খতিয়ে দেখবে এই বিশেষজ্ঞ দল।

করোনার প্রাদুর্ভাবের শুরু থেকেই রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠে তথ্য লুকানোর। সেই সঙ্গে সারাদেশে লকডাউন জারির পর তা সামাল দিতে পারছে না রাজ্য সরকার এমন অভিযোগও ওঠে। বহু এলাকায় লকডাউন ভাঙছে মানুষ। ব্যাংকের মাধ্যমে গরীবদের দেওয়া অর্থ, রেশনে দেওয়া চাল-গম তুলতে গিয়ে বিভিন্ন স্থানে অমান্য হচ্ছে লকডাউন। সেই সঙ্গে কাঁচা বাজার , মাছের বাজারে যাওয়ার জন্য ব্যাপকহারে অমান্য করা হচ্ছে লকডাউন। লকডাউন ভাঙার জন্য যে এই রাজ্যে ব্যাপকহারে করোনার সক্রমণ ছড়িয়ে পরতে পারে সে অভিযোগ পৌঁছে যায় কেন্দ্রীয় স্বরাস্ট্র মন্ত্রণালয়ে। রাজ্য সরকার শক্তহাতে লকডাউনকে কার্যকর করার চেষ্টা করলেও অনেক জায়গায় লকডাউন মানা হচ্ছে না। রাজ্যের বিজেপি নেতৃত্বও বারবার অভিযোগ তুলছে। একই সঙ্গে করোনায় মৃত্যু ও আক্রান্ত মানুষের সঠিক সংখ্যা লুকানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করছে তারা।
গতকাল রাজ্যের মুখ্য সচিব জানান, পশ্চিমবঙ্গে গত ২৪ ঘন্টায় সংক্রমিত হয়েছে ৫৪ জন। তবে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়েনি। এ পর্যন্ত ১২ জন মারা গেছেন। তবে কলকাতার সংবাদ মাধ্যমে আজ মঙ্গলবার বলা হয়েছে, এই রাজ্যে গত ২৪ ঘন্টায় মারা গেছে আরও ২ জন। সবমিলিয়ে এখন মৃত্যুর সংখ্যা দাড়িয়েছে ৩৯ জন। আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ৩৯২ জন। তবে সংবাদ মাধ্যমের এই হিসাব মানতে পারছে না রাজ্য সরকার। তাদের হিসাবে আজও বলা হচ্ছে, মৃত মানুষের সংখ্যা ১২ এবং আক্রান্ত ২৪৫ জন। এদিকে গতকাল সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র বলেছেন, ভারতে নতুন করে ১১টি সক্রমিত জেলার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের রয়েছে ৭টি জেলা।

পশ্চিমবঙ্গ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্ধোপাধ্যায় বলেন, 'এটা আমাদের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় হস্তক্ষেপের শামিল। কীসের ভিত্তিতে তাঁদের পাঠানো হলো?'
রাজ্য সরকারের এক কর্মকর্তা বলেন, 'অমরা ওই প্রতিনিধি দলকে ঘুরতে দেব না।'

তবে এই প্রতিনিদি দল আসায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা রাহুল সিনহা। তিনি বলেন, 'সঠিক পদক্ষেপ নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। এখানে মানা হয় পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার। ওদের নীতির জন্যই মানুষ লকডাউন ভাঙতে বাধ্য হচ্ছেন। রেশন বিতরণ আর গরীবদের টাকা প্রদান আর হাটবাজারে ভাঙা হচ্ছে লকডাউন। এড়িয়ে যাওয়া হচ্ছে লকডাউন। সঠিক চিকিৎসা হচ্ছে না করোনা আক্রান্তদের।'

তবে সিপিএম নেতা ও রাজ্য বিধানসভার সিপিএম পরিষদীয় দলের নেতা সিপিএম বিধায়ক সুজন চক্রবর্তী এর বিরোধিতা করে বলেন, 'লকডাউন তো ভেঙেছে কেন্দ্র।'

গতকাল থেকে পশ্চিমবঙ্গে শুরু করা হয়েছে করোনার দ্রুত পরীক্ষার জন্য র‌্যাপিড অ্যান্টিবডি টেস্ট। যারা ৭দিন ধরে জ্বর, কাশি এবং গলা ব্যাথায় ভুগছে তাঁদেরই করা হচ্ছে এই টেস্ট। গতকাল কলকাতার বেলগাছিয়ায় আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে এই র‌্যাপিড অ্যান্টিবডি টেস্ট।