Thank you for trying Sticky AMP!!

পশ্চিমবঙ্গে বাম-কংগ্রেস জোট কি ভেস্তে গেল?

বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু ও কংগ্রেসের রাজ্য সভাপতি সোমেন মিত্র

ভারতের লোকসভা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর পশ্চিমবঙ্গে বামদল ও কংগ্রেসের মধ্যে নতুন মেরুকরণ তৈরি হয়। আসন নিয়ে এক রফা হয়। বলা হয়, পশ্চিমবঙ্গের লোকসভার ৪২ আসনের মধ্যে বাম দল লড়বে ২৭টি আসনে এবং কংগ্রেস লড়বে ১৫টি আসনে।

গত লোকসভা নির্বাচনে বাম দল পশ্চিমবঙ্গের উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ এবং মুর্শিদাবাদ আসন দুটি জেতে । এই দুটি আসনে জিতেছিল বাম দলের শরিক সিপিএমের নেতা মহম্মদ সেলিম এবং বদরুদ্দোজা খান। অন্যদিকে কংগ্রেস জিতেছিল ৪টি আসনে। তাঁরা হলেন, মালদা উত্তরে মৌসুম বেনজির নূর, মালদা দক্ষিণে আবু হাসেম খান চৌধুরী, জঙ্গিপুরে অভিজিৎ মুখার্জি এবং বহরমপুরে অধির চৌধুরী। এর মধ্যে মৌসুম বেনজির নূর সম্প্রতি কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। তিনি ওই আসনে এবার তৃণমূলের টিকিটে লড়বেন।

এমন অবস্থায় পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি এবং তৃণমূলকে হারানোর লক্ষ্যে কংগ্রেস এবং বাম দল আসন রফা করে নির্বাচনে লড়ার উদ্যোগ নেয়। কথা হয় যে চারটি আসনে কংগ্রেস জিতেছিল সেই আসনে বামফ্রন্ট প্রার্থী দেবে না। আবার যে দুটি আসনে বাম দল জিতেছিল সেই দুটি আসনে প্রার্থী দেবে না কংগ্রেস। এই সূত্র নিয়ে এগোনোর পথে কংগ্রেস থেকে দাবি ওঠে রায়গঞ্জে তাঁরা প্রার্থী দেবেন তাঁদেরই প্রয়াত নেতা প্রিয় রঞ্জন দাসমুন্সীর স্ত্রী দীপা দাসমুন্সীকে। এই নিয়ে শুরু হয় জটিলতা। এরপরেই বিষয়টি চলে যায় কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে। পরবর্তীতে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধির নির্দেশে ঘোষণা দেওয়া হয়, যে আসনে কংগ্রেস ও বাম দল জিতেছে সেই সব আসনে তাঁরাই প্রার্থী দেবেন।

এরপরেই বাম দল হঠাৎ করে ঘোষণা দেয়, তাঁরা রায়গঞ্জে মহম্মদ সেলিম এবং মুর্শিদাবাদে বদরুদ্দোজা খানকে প্রার্থী করছেন। পরে বাম দলের চেয়ারম্যান বিমান বসু ১৫ মার্চ পূর্বে ঘোষিত ২ আসনের সঙ্গে আরও ২৩ আসন যুক্ত করে তাঁরা ২৫ আসনের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেন। এ ঘটনার পর ক্ষুব্ধ হন কংগ্রেস নেতারা। তাঁরা নতুন করে দাবি তোলেন, রায়গঞ্জে দীপা দাসমুন্সীকে প্রার্থী করতেই হবে। শুরু হয় দুই দলের মধ্যে দ্বন্দ্ব।

এর মধ্যে গতকাল সোমবার গভীর রাতে ১১ জন কংগ্রেস প্রার্থীর নাম ঘোষণা করে কংগ্রেস নেতৃত্ব। এর মধ্যে রয়েছে, রায়গঞ্জে দীপা দাসমুন্সী এবং মুর্শিদাবাদে আবু হেনা । কংগ্রেস জানিয়ে দিয়েছে, বাকি ৩১ আসনেরও তাঁরা প্রার্থী তালিকা শিগগিরই প্রকাশ করবে। এর ফলে কার্যত ভেঙে গেল কংগ্রেস বাম দলের নির্বাচনী জোট। ফলে এবার লড়াই হবে চতুর্মুখী— তৃণমূল, বিজেপি, বামফ্রন্ট এবং কংগ্রেস প্রার্থীদের মধ্যে।

এই ঘটনার পর বামফ্রন্টও আজ মঙ্গলবার ঘোষণা দিয়েছে, তাঁরাও বাকি আসনে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করবে।