Thank you for trying Sticky AMP!!

বাংলাদেশ ও বাংলা নিয়ে বিভ্রান্তি হতে পারে, ভাবনা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের

পশ্চিমবঙ্গ

ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের নাম বদলে ‘বাংলা’ করার ক্ষেত্রে বাগড়া দিয়েছে দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। প্রতিবেশী রাষ্ট্রের নাম বাংলাদেশ হওয়ায় ভবিষ্যতে দুই নাম নিয়ে কোনো বিভ্রান্তি সৃষ্টি হতে পারে কি না, তা জানতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে চিঠি দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এর ফলে দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে কোনো প্রভাব পড়ে কি না, তা নিয়েও জানতে চেয়েছে তারা।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নাম বদলের ছাড়পত্র পাওয়া গেলে এ নিয়ে মন্ত্রিসভা একটি নামবদলের প্রস্তাবের নোট তৈরি করবে। তারপরে নাম বদলের সিদ্ধান্ত কার্যকর করার লক্ষ্যে সংবিধান সংশোধন বিল পেশ করা হবে ভারতীয় সংসদে। সংসদ অনুমোদন দিলে তা সর্বশেষ অনুমোদনের জন্য চলে যাবে ভারতের রাষ্ট্রপতির কাছে। রাষ্ট্রপতি অনুমোদন দিলেই নাম বদলের প্রস্তাব আইনে পরিণত হবে। পশ্চিমবঙ্গের নাম হয়ে যাবে ‘বাংলা’। কিন্তু সেটি হতে কত দিন লাগবে তা নিয়ে সংশয় রয়েছে রাজনৈতিক মহল। কারণ, কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে এখন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতার রয়েছে প্রচণ্ড রাজনৈতিক বিরোধ।
এ বছরের ২৬ জুলাই পশ্চিমবঙ্গের নাম তিন ভাষাতেই (বাংলা, হিন্দি ও ইংরেজি) ‘বাংলা’ করার প্রস্তাব গৃহীত হয় পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিধানসভায় সর্বসম্মতভাবে। এরপরে সেই প্রস্তাবসহ বিভিন্ন আনুষঙ্গিক কাগজপত্র পশ্চিমবঙ্গ সরকার পাঠিয়ে দিয়েছিল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অনুমোদনের জন্য। কিন্তু সেই প্রস্তাব পাঠানোর পর আজ প্রায় তিন মাস হয়ে গেলেও নাম বদলের প্রস্তাব অনুমোদের কোনো সাড়া নেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের। এ নিয়ে রাজ্য সরকারের তরফে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে চিঠি দেওয়া হলেও উত্তর মেলেনি এখনো।

যদিও নাম বদলের এই প্রস্তাব পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় গৃহীত হওয়ার পর বলা হয়েছে, এই রাজ্যের নতুন নাম হচ্ছে বাংলা। এর আগে গত বছরের ২৯ আগস্ট রাজ্য বিধানসভায় পশ্চিমবঙ্গের নাম পরিবর্তন করে বাংলা করার প্রস্তাব পাস হলেও সেখানে বলা হয়েছিল ইংরেজিতে এই নাম হবে বেঙ্গল আর হিন্দিতে হবে বাঙ্গাল। গত বছরের ২৯ আগস্ট পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিধানসভায় নাম পরিবর্তনের এই প্রস্তাব বিপুল ভোটের ব্যবধানে পাস হয়ে যায়। প্রস্তাবের পক্ষে পড়ে ১৮৯ ভোট আর বিপক্ষে পড়ে ৩১ ভোট। কিন্তু সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকার এক চিঠিতে জানায়, যে নামই হোক না কেন তা একটি নামই হতে হবে। বিভিন্ন ভাষায়ও ওই একই নাম রাখতে হবে। ফলে রাজ্য সরকার তিন ভাষায়ই ‘বাংলা’ করার সিদ্ধান্ত নেয়।
এর আগেও ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের নাম পরিবর্তন হয়েছে। সংযুক্ত প্রদেশের নাম পরিবর্তন হয়ে হয়েছে উত্তর প্রদেশ, হায়দরাবাদের পরিবর্তে হয়েছে অন্ধ্রপ্রদেশ, মধ্য ভারতের নাম হয়েছে মধ্যপ্রদেশ, উত্তরাঞ্চলের পরিবর্তে হয়েছে উত্তরাখন্ড, উড়িষ্যার পরিবর্তে হয়েছে ওডিশা, ত্রিবাঙ্কুর-কোচিনের পরিবর্তে কেরালা, মাদ্রাজের পরিবর্তে তামিলনাড়ু এবং মহীশূরের পরিবর্তে হয়েছে কর্ণাটক রাজ্য।
এদিকে অবশ্য এই নাম পরিবর্তনের প্রস্তাবের পক্ষে ২৬ জুলাই সায় দিয়েছে কংগ্রেস ও বামদলও। ফলে সর্বসম্মতিতে গৃহীত হয় এই প্রস্তাব। যদিও ২০১৬ সালে বিরোধিতা করেছিল কংগ্রেস, বামদল ও বিজেপি। এই নাম পরিবর্তনের প্রস্তাব পাস হওয়ায় বিধানসভায় সন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।