Thank you for trying Sticky AMP!!

ভারতীয় বংশোদ্ভূত সাংবাদিকের নাগরিকত্ব বাতিল করল মোদি সরকার

ভারতীয় বংশোদ্ভূত সাংবাদিক আতিশ তাসির। ছবি: টুইটার থেকে সংগৃহীত

ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ সাংবাদিক আতিশ তাসিরের ভারতীয় নাগরিকত্ব বাতিল করেছে মোদি সরকার। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সমালোচক আতিশ তাসির। এ ঘটনাকে গণমাধ্যমের ওপর ভারত সরকারের আঘাত হিসেবে দেখছে আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলো।

বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গতকাল বৃহস্পতিবার আতিশের নাগরিকত্ব বাতিলের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। আতিশ তাসিরের নাগরিকত্ব বাতিলের কারণ হিসেবে ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘আতিশ তাসিরের বাবা পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত ছিলেন, এই তথ্যটি তিনি আমাদের কাছে গোপন করেছিলেন। এ কারণে তাঁর ভারতীয় নাগরিকত্ব বাতিল করা হয়েছে।’

আতিশ তাসিরের বাবা সালমান তাসির পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের গভর্নর ছিলেন। ২০১১ সালে দেশটির ব্ল্যাসফেমি আইনের (ধর্ম অবমাননা আইন) বিরোধিতা করায় দুর্বৃত্তদের হাতে নিহত হন তিনি।

তবে যুক্তরাজ্যে জন্ম নেওয়া আতিশ তাসির বলেছেন, বাবার সঙ্গে দীর্ঘদিন যাবৎ তাঁর কোনো সম্পর্ক ছিল না। ‘টাইম’ ম্যাগাজিনে তিনি লিখেছেন, দুই বছর বয়স থেকে তাঁর ভারতীয় বংশোদ্ভূত মায়ের সঙ্গে তিনি ভারতে থাকেন। ২১ বছর বয়স থেকে বাবার সঙ্গে তাঁর কোনো সম্পর্ক নেই। মা-ই তাঁর একমাত্র আইনগত অভিভাবক বলেও জানিয়েছেন তিনি।

আতিশ লিখেছেন, ‘আমার নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার জন্য সরকারের কাছে খুব কম কারণ ছিল। কিন্তু তাও তারা আমার নাগরিকত্ব কেড়ে নিয়েছে। এটা বুঝতে কষ্ট হওয়ার কথা না, আমার লেখার জন্যই আমাকে এই শাস্তি দেওয়া হয়েছে।’ গত মে মাসে ‘টাইম’ ম্যাগাজিনের আন্তর্জাতিক সংস্করণে মোদির সমালোচনা করে একটি প্রবন্ধ লিখেছিলেন আতিশ।

আতিশ তাসিরের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার পর সাংবাদিকদের সুরক্ষা নিয়ে কাজ করা সংগঠন কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টস (সিপিজে) এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘এ ঘটনাই প্রমাণ করে দেয়, মোদি সরকার নিজেদের সমালোচনা সহ্য করতে পারে না।’ মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিয়ে কাজ করা সংগঠন পেন আমেরিকা বলেছে, ‘গুরুতর বিষয় নিয়ে লেখালেখি করা সাংবাদিকদের হয়রানি করার ঘটনা শুধু ভারতেই নয়, পুরো বিশ্বেই ঘটছে। তবে এ ঘটনা ভারতের গণতন্ত্রকেই প্রশ্নবিদ্ধ করে দিল।’

ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র টুইটারে লিখেছেন, ‘আতিশ তাসিরকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তিনি তা নেননি।’ তবে এমন দাবি অস্বীকার করেছেন আতিশ। টুইটারে একটি ছবি শেয়ার করে তিনি লিখেছেন, ‘এমন দাবি পুরোপুরি অসত্য। আমাকে ২১ দিন নয়, বরং মাত্র ২৪ ঘণ্টা সময় দেওয়া হয়েছিল। এরপর আমার সঙ্গে আর কোনো যোগাযোগ করা হয়নি।’

২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদি প্রথমবার ক্ষমতায় আসার পর থেকে ওয়ার্ল্ড প্রেস ফ্রিডম ইনডেক্সে ভারতের অবস্থান অনেকটাই নিচে নেমেছে। ১৮০টি দেশের মধ্যে বর্তমানে ভারতের অবস্থান ১৪০তম। বিশ্বের কোন দেশে গণমাধ্যমকর্মীরা কতটা স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারেন, সেটির ওপর ভিত্তি করে এই সূচক তৈরি করা হয়। সূচকটি তৈরি করে রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারস (আরএসএফ)। আরএসএফের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮ সালে নিজেদের কাজের জন্য ছয়জন ভারতীয় সাংবাদিক প্রাণ হারিয়েছেন।