Thank you for trying Sticky AMP!!

ভারতের হোম থেকে ফিরতে চায় চট্টগ্রামের শিশু সাকিব

ভারতের হোমে রয়েছে চট্টগ্রামের শিশু সাকিব। ছবি: সংগৃহীত

১১ বছরের শিশু সাকিব মায়ের সঙ্গে ঝগড়া করে চট্টগ্রাম থেকে পালিয়ে গিয়েছিল পশ্চিমবঙ্গে। ৯ মাস ধরে কলকাতার শিয়ালদহের একটি দোকানে কাজ করছিল। কিন্তু করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে চলা লকডাউনে সেটাও বন্ধ হয়ে যায়। ভুল বুঝতে পেরে দেশে ফেরার জন্য এখন উতলা সে।

সাকিব চট্টগ্রামের আকবর শাহ থানা এলাকার একটি ভাড়া বড়িতে থাকত মা ও বাবার সঙ্গে। তার বাবা কাসেম শেখ আর মা ফিরোজা খাতুন। বাবা পিকআপ ভ্যানের চালক ছিলেন। সাকিবের আদি বাড়ি নোয়াখালীর সুবর্ণচর থানার চরক্লার্ক ইউনিয়নে। একদিন হঠাৎ মায়ের সঙ্গে ঝগড়া করে বাড়ি ছেড়ে চলে যায় সাকিব। তারপর হেঁটে, ট্রেনে ও বাসে করে চট্টগ্রাম থেকে চলে যায় বেনাপোল সীমান্তে। সেখান থেকে ভারতের পেট্রাপোল সীমান্ত পার হয়ে পৌঁছে যায় বনগাঁ সীমান্তে। তারপর ট্রেনে করে চলে আসে শিয়ালদহ রেলস্টেশনে। এখানে এসে একটি মুদিদোকানে কাজ জুটিয়ে নেয় সাকিব। বেতন ছাড়া। কাজ করবে আর খাবে। এভাবেই চলতে থাকে সাকিবের জীবন।

করোনার কারণে ভারতে শুরু হয়ে যায় লকডাউন। বন্ধ হয়ে যায় শিয়ালদহের দোকান। কী করবে সাকিব? শুরু করে আবার পথ চলতে। একসময় ট্রেনে আর বাসে করে চলে আসে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার ভাঙর থানার চণ্ডীপুর এলাকায়। পেটে ক্ষুধার জ্বালা। এ সময় চণ্ডীপুরের একটি মিষ্টির দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে কাঁদছিল সাকিব। তখন ওই দোকানের সামনে এক নারীকে দেখে মনে পড়ে যায় মায়ের কথা। ওই নারীর চেহারা অনেকটাই তার মায়ের মতো। অগত্যা ওই নারীর কাছে সাকিব কেঁদে খাবার চায়। শোনায় তার কষ্টের কথা। ওই নারী ও তাঁর স্বামী হাসেম বৈদ্য সাকিবকে বাড়িতে আশ্রয় দেন। হাসেম আলী বৈদ্য গ্রামের বাড়ি বাড়জুলিতে সাকিবকে নিয়ে যান। জামাকাপড় দেন। ওখানেই থাকতে শুরু করে সাকিব।

এরপর এলাকার মানুষ কেউ কেউ ভাঙ্গর থানায় জানায় বাংলাদেশি কিশোর সাকিবের হাসেম বৈদ্যের বাড়িতে আশ্রয় নেওয়ার কথা। পুলিশ এসে বিদেশি, তাই তাকে নিয়ে তুলে দেয় রাজ্য পুলিশের চাইল্ড লাইনের হাতে। চাইল্ড লাইন আদালতে সাকিবকে পেশ করে তাকে হোমে রাখার অনুরোধ জানায়। এরপরেই চাইল্ড লাইনের পুলিশ আদালতের নির্দেশে সাকিবকে নিয়ে যায় দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার লক্ষ্মীকান্তপুরের নূর আলি মেমোরিয়াল সোসাইটির হোমে। গত ২৯ এপ্রিল থেকে সাকিব এই নূর আলি হোমে রয়েছে।

হোমের সম্পাদক শেখ আসিফ ইকবাল প্রথম আলোকে বলেছেন, ‘গত ২৯ এপ্রিল সাকিব আমাদের এই হোমে আসে। আমরাও সাকিবকে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য চেষ্টা চালাচ্ছি। বিষয়টি আমরা পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে জানিয়েছি। অনুরোধ করেছি রাজ্য সরকার ওকে বাড়িতে পাঠানোর ব্যবস্থা করুক। কলকাতার বাংলাদেশ উপহাইকমিশনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে অনুরোধ করেছি।’