Thank you for trying Sticky AMP!!

ভারতে লকডাউনের ভাগ্য ঠিক হবে শনিবার

‘জনতা কারফিউ’ চলাকালে ভারতের বেঙ্গালুরুতে জনশূন্য সড়কের দৃশ্য। ছবি: এএফপি

২১ দিনের মেয়াদ শেষে লকডাউন আরও বাড়বে কি না, সেই জল্পনার মধ্যে করোনায় আক্রান্তের রেকর্ড ভেঙে গেল আজ শুক্রবার। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে নতুন করে সংক্রামিত হয়েছেন ৮৯৬ জন। মৃত্যু হলো ৩৭ জনের। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রাত্যহিক সান্ধ্য ব্রিফিংয়ে শুক্রবার এই খবর জানায়। এই নিয়ে দেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হলো ৬ হাজার ৭৬১। মোট মৃত্যুর সংখ্যা ২০৬।

করোনা-আক্রান্ত রাজ্যগুলোর মধ্যে মহারাষ্ট্র এখনো শীর্ষে। ওই রাজ্যে মোট আক্রান্ত ১ হাজার ৩৬৪ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় ২২৯ জন নতুনভাবে আক্রান্ত হয়েছেন। দিল্লিতেও নতুনভাবে সংক্রমিত হয়েছেন ২২৯ জন। রাজধানী রাজ্য দিল্লিতে মোট আক্রান্ত ৮৯৮ জন। দিল্লি রয়েছে দ্বিতীয় স্থানে। তৃতীয় স্থানে তামিলনাড়ু (৮৩৪)।

এক দিনে সংক্রমণ রেকর্ড সংখ্যায় পৌঁছে যাওয়ায় দেশব্যাপী লকডাউনের মেয়াদ বাড়ানো নিয়ে জল্পনা তীব্র হয়েছে। আগামীকাল শনিবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দেশের বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে ভিডিও কনফারেন্স করবেন। তার পর মেয়াদ বাড়ানো হবে কি না, কিংবা হলেও কী ধরনের ও কত দিনের জন্য—প্রধানমন্ত্রী সেই সিদ্ধান্ত নেবেন।

আগামী ১৪ এপ্রিল মাঝরাতে দেশজুড়ে লকডাউন শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু এর মধ্যেই বিভিন্ন রাজ্য অবরুদ্ধতার মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে। ওডিশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়ক নিজে থেকেই তাঁর রাজ্যে নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়িয়ে দিয়েছেন। একই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী অমরিন্দর সিং। তেলেঙ্গানা, উত্তর প্রদেশ, কর্ণাটকও মেয়াদ বাড়ানোর পক্ষে। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, লকডাউন বাড়ানো হলে তিনি সমর্থন করবেন। বহু বিশেষজ্ঞের ধারণা, এখনই জীবনযাত্রা স্বাভাবিক করে দেওয়া হলে হিতে বিপরীত হবে। করোনার বিস্তার ঠেকানো অসম্ভব হয়ে দাঁড়াবে।

প্রশ্ন হলো, এখন যেমন সবকিছু স্তব্ধ, আগামী বুধবার থেকে আরও কিছুদিন, অন্তত আরও দুই সপ্তাহ তেমনই রাখা হবে কি না। একটা প্রস্তাব হলো, গোটা দেশে লকডাউন না করে যেসব এলাকায় করোনা বেশি ছড়িয়েছে, সেই এলাকাগুলো সিল করে দেওয়া হোক। উত্তর প্রদেশ সরকার ইতিমধ্যেই রাজ্যের ১৫টি জেলাকে করোনা উপদ্রুত বলে ঘোষণা করেছে। ওই জেলাগুলোর যেসব এলাকায় করোনার প্রভাব সবচেয়ে বেশি, সেসব এলাকা সবার জন্য সিল করে দেওয়া হয়েছে। দিল্লিতে বেছে নেওয়া হয়েছে এমন মোট ২০টি এলাকা। ওই এলাকাগুলো থেকে কেউ ঢুকতে বা বেরোতে পারছে না। নিত্যপ্রয়োজনীয় সব জিনিস বাড়ি বাড়ি সরবরাহ করা হচ্ছে। প্রতিটি অঞ্চলের দায়িত্বে রাখা হয়েছে তিন-চারজন করে পদাধিকারী। তাঁদের ফোন নম্বর সবাইকে দিয়ে দেওয়া হয়েছে। যেকোনো প্রয়োজনে ওই এলাকার মানুষজন তাঁদের ফোন করবেন। সমস্যার সমাধান তাঁরাই করবেন।

এর মধ্যেই বিভিন্ন রাজ্য তাদের মতো করেও কিছু কিছু ব্যবস্থাও নিচ্ছে। যেমন পাঞ্জাব। এখন ফসল কাটার সময়। খেতে গম পেকে গেছে। কাটার অপেক্ষায় কৃষক। মুখ্যমন্ত্রী অমরিন্দর সিং শুক্রবার জানিয়েছেন, ১৫ এপ্রিল থেকে ফসল কাটার জন্য চাষিদের ছাড় দেওয়া হবে। গত তিন বছরের মতো এবারও পাঞ্জাবে গমের বাম্পার ফলন হয়েছে।

সংক্রমণ রেকর্ড করার দিনই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) ভারত সম্পর্কে তাদের ভুল শুধরে জানায়, ওই দেশে করোনা এখনো সামাজিক বা গোষ্ঠী সংক্রমণ ঘটায়নি। সংবাদমাধ্যম এনডিটিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে হু-র এক পদাধিকারী এই কথা জানিয়েছেন। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ও এক বিবৃতিতে জানায়, আতঙ্কগ্রস্ত হওয়ার কারণ নেই। কেননা, গোষ্ঠী সংক্রমণ ঘটেনি। যদিও পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রীর আশঙ্কা, তাঁর রাজ্যে গোষ্ঠী সংক্রমণ শুরু হয়ে গেছে। তিনি বলেন, গত বৃহস্পতিবার রাজ্যে যে ২৭ জন সংক্রমিত হয়েছেন, তাঁদের কারও বিদেশের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই। কেউই বিদেশ থেকে ফেরেননি। বিদেশফেরত কারও সঙ্গে দেখাও করেননি।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার দেশে ১৬ হাজার ২ জনের শরীরে করোনার নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। শুধু শূন্য দশমিক ২ শতাংশের সংক্রমণ ধরা পড়েছে।