Thank you for trying Sticky AMP!!

মোদিকে চ্যালেঞ্জ কোহলি-রাহুলের!

আমূল বদলে গেছেন রাহুল গান্ধী। কর্ণাটক জয় তাঁকে করে তুলেছে আরও আক্রমণাত্মক। আরও আগ্রাসী এবং অবশ্যই তৎপর। যার অভাবে রাহুল গোয়া, মণিপুর ও মেঘালয় হারিয়েছিলেন, সেই তৎপরতাই তাঁকে জয়ী করেছে কর্ণাটকে বিজেপির মুখের গ্রাস কেড়ে নিতে। এবারও সেই তৎপরতায় তিনি অভিনব চ্যালেঞ্জ জানালেন নরেন্দ্র মোদিকে। তাঁরই অস্ত্রে তাঁকেই ঘায়েল করতে নেমে পড়লেন।

সৌজন্যে অবশ্যই ভারতীয় ক্রিকেট অধিনায়ক বিরাট কোহলি। সংক্ষেপে ঘটনাটা এ রকম—মোদি সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী রাজ্য বর্ধন রাঠোর প্রধানমন্ত্রীর ফিটনেস মন্ত্র ছড়িয়ে দিতে দিন কয়েক আগে এক টুইটের সঙ্গে ছোট্ট একটি ভিডিও ক্লিপ সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেন। তাতে দেখা যাচ্ছে, জামা-প্যান্ট-জুতা পরে নিজের অফিসেই তিনি ডন-বৈঠক করছেন। টুইটের সঙ্গে সেই ছবি জুড়ে তিনজনের উদ্দেশে শুটিংয়ে অলিম্পিকে রুপাজয়ী লেখেন, ‘আমার ফিটনেসের ছবি পাঠালাম। আপনারা কীভাবে নিজেদের ফিট রাখেন, সেই ছবি পাঠান।’ যে তিনজনকে রাঠোর চ্যালেঞ্জ জানান, তাঁরা হলেন অভিনেতা হৃতিক রোশন, ক্রিকেটার বিরাট কোহলি ও ব্যাডমিন্টন চ্যাম্পিয়ন সাইনা নেহওয়াল।

এই চ্যালেঞ্জ পাওয়ামাত্রই এর জবাব দেন বিরাট কোহলি। মোহাম্মদ আজহারউদ্দিনের মতো তিনিও ‘ফিটনেস ফ্রিক’। নেট না জিম, একজন ক্রিকেটারের কোথায় বেশি সময় কাটানো দরকার, একটা সময় সেই বিতর্কও তাঁকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছিল। রাঠোরের টুইটের জবাবে বিরাট কোহলি শুধু নিজের ফিটনেস ক্লিপিংই পোস্ট করলেন না, চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলেন সরাসরি প্রধানমন্ত্রী মোদিকে। বাদ দিলেন না নিজের স্ত্রী অভিনেত্রী আনুশকা শর্মা ও অগ্রজ ক্রিকেটার মহেন্দ্র সিং ধোনিকেও।

পত্রপাঠ চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেন প্রধানমন্ত্রী। জানিয়েছেন, ‘বিরাট, চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করলাম। শিগগিরই আমিও আমার ভিডিও পোস্ট করব।’ রাঠোর নিছক ডন-বৈঠকের ভিডিও দিয়েছিলেন, কোহলি যা দিলেন, জিম-অ্যাডিক্টদের কাছে তার পোশাকি নাম ‘স্পাইডার প্লাঙ্ক’। কনুই ও পায়ের পাতার ওপর শরীরের ভার রেখে একবার করে একটা পা মুড়ে তা ওপরে ওঠাতে হয়। এটা কোহলি মোট ২০ বার করেন।

খবরটা এখান থেকেই অন্যদিকে ঘুরিয়ে দিলেন রাহুল গান্ধী। ভারতে দিন দিন বেড়ে চলেছে পেট্রল-ডিজেলের দাম। জনরোষ বাড়ছে। লিটারপ্রতি পেট্রলের দাম মুম্বাইয়ে ৮৫ রুপি। কলকাতা, চেন্নাইয়েও ৮০ রুপির বেশি। ডিজেলও তথৈবচ। ইউপিএ আমলে আন্তর্জাতিক বাজারে অশোধিত তেলের দাম যখন ১২০ ডলারে উঠে গিয়েছিল, তখনো ভারতে লিটারপ্রতি এত টাকা কাউকে দিতে হয়নি। অথচ এখন হচ্ছে। কংগ্রেস আমলে বিজেপির নেতারা সে সময় যেসব কথা বলেছিলেন, আজ সেসব তুলে ধরে সোশ্যাল মিডিয়ায় সরকারের সমালোচনা শুরু হয়েছে। রাহুলও হাতিয়ার করেছেন এই সামাজিক মাধ্যম। প্রধানমন্ত্রীকে টুইট করে বলেছেন, ‘বিরাট কোহলির চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছেন দেখে খুশি হলাম। একটা চ্যালেঞ্জ আমিও ছুড়লাম। তেলের দাম কমান। না হলে কংগ্রেস দেশজোড়া আন্দোলন শুরু করে দেবে। দাম কমাতে বাধ্য করবে আপনাকে। আপনার জবাবের অপেক্ষায় থাকলাম।’

পেট্রল-ডিজেলের দাম নিয়ে সরকার বিব্রত। কর্ণাটক ভোটের জন্য তেল কোম্পানিগুলোকে সরকার দাম বাড়াতে দেয়নি। ভোটের পর টানা ১১ দিন ধরে দাম বেড়েই চলেছে। ব্যারেলপ্রতি ডলার যেমন ঊর্ধ্বমুখী, তেমনই কমেছে ডলারের তুলনায় রুপির বিনিময় মূল্য। ফলে জোড়া ধাক্কা। প্রধানমন্ত্রী নিজে নীরব। যদিও বিজেপির সভাপতি অমিত শাহ বলেছেন, সরকার শিগগিরই কিছু একটা করবে। করতেই হবে। কিন্তু তৎপর রাহুল বিষয়টিকে রাজনৈতিক করে তুললেন। ছয় মাসের মধ্যে রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ ও ছত্তিশগড়ের ভোট। চনমনে কংগ্রেসকে টগবগে রাখাটা তাঁর কাছে জরুরি।