Thank you for trying Sticky AMP!!

মোদিকে রাহুলের ‘পত্রবোমা’

নরেন্দ্র মোদি ও রাহুল গান্ধী

ভারতে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) মোকাবিলায় নাজেহাল প্রধানমন্ত্রীকে কাঠগড়ায় তুলে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী বলেছেন, চলমান পরিস্থিতিতে সরকারের চূড়ান্ত ব্যর্থতা আরও একবার গোটা দেশে বিপর্যয়কর লকডাউন অবশ্যম্ভাবী করে তুলছে। শুক্রবার তিন পৃষ্ঠার এক চিঠিতে কোভিড পরিস্থিতিকে ‘সুনামির’ সঙ্গে তুলনা করে রাহুল লিখেছেন, অগ্রপশ্চাৎ বিবেচনা না করে কোভিডের বিরুদ্ধে আগেভাগে জয় ঘোষণার ঔদ্ধত্যের দরুন গোটা দেশ আজ বিপর্যয়ের মুখে দাঁড়িয়ে।

রাহুলের এই ‘পত্রবোমা’ ঠিক সেই সময় এল, যখন বাস্তবিকই কেন্দ্রীয় সরকার নাজেহাল। প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন রাজ্য সংক্রমণের নতুন রেকর্ড তৈরি করছে। দিনে চার লাখের বেশি মানুষ নতুনভাবে সংক্রমিত হচ্ছেন। রাজ্যে রাজ্যে হাহাকার অক্সিজেনের, হাসপাতালের বিছানার। প্রয়োজনীয় অক্সিজেনের জোগান পেতে দিল্লি সরকারকে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হতে হয়েছে। একদিকে নিদারুণ প্রশাসনিক ব্যর্থতা, অন্যদিকে রাজনৈতিক দূরদর্শিতার অভাব ও সরকারের একগুঁয়ে মনোভাবের জন্য দেশে-বিদেশে প্রবল সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে মোদি সরকারকে। এই পরিস্থিতিতে রাহুল প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, ‘সংকটের এই মুহূর্তে ওয়াকিবহাল সব মহলের সঙ্গে কথা বলুন। সবাইকে আস্থায় নিন, যাতে একসঙ্গে আমরা দেশকে রক্ষা করতে পারি।’

ভারতের বৈচিত্র্যপূর্ণ চরিত্রের কারণে করোনাভাইরাস বারবার রূপ বদল করছে জানিয়ে রাহুল চার দফা ইতিকর্তব্যের কথা প্রধানমন্ত্রীকে মনে করিয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ভাইরাস কীভাবে রূপ বদলাচ্ছে, তার বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়, যাতে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া যায়। নতুন নতুন যেসব রূপের উদ্ভব ঘটছে, সেগুলোর বিরুদ্ধে প্রচলিত সব টিকার কার্যকারিতা খতিয়ে দেখা দরকার। দেশের সব মানুষকে দ্রুত টিকার আওতায় নিয়ে আসা উচিত এবং সচ্ছতার সঙ্গে গোটা পৃথিবীকে জানানো উচিত যে আমরা কীভাবে পরিস্থিতির মোকাবিলা করছি। প্রধানমন্ত্রীকে রাহুল স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেছেন, বৈচিত্র্যময় ভারত কোভিডের স্বচ্ছন্দ বিচরণভূমিই শুধু নয়, রূপ পরিবর্তনেরও সহায়ক। লাগামছাড়া সংক্রমণ শুধু ভারত নয়, গোটা বিশ্বের পক্ষেই বিপজ্জনক।

সংক্রমণের মোকাবিলা কেন্দ্রীয় সরকার ঠিক কীভাবে করতে চলেছে, তার স্পষ্ট কোনো হদিস কারও কাছে নেই। প্রথম ঢেউয়ের সময় কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে দৈনন্দিন ব্রিফিংয়ের একটা ব্যবস্থা ছিল। তাতে মোকাবিলার রূপরেখা জানা যেত।

ইদানীং তা উঠে গেছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আজকাল যা বলছে সব সূত্রের বরাতে। এদিকে তৃতীয় ঢেউয়ের আগাম সতর্কবার্তা বিশেষজ্ঞরা দিয়ে রেখেছেন। গত বৃহস্পতিবার এক মামলায় সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি ধনঞ্জয় চন্দ্রচূড় কেন্দ্রের কাছে জানতে চান, তৃতীয় ঢেউ এলে সরকার তার মোকাবিলা কীভাবে করবে। জবাবে সলিসিটার জেনারেল তুষার মেহতা বলেন, এখনো তা ঠিক হয়নি। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে শুক্রবার বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ৪ লাখ ১৪ হাজার নতুন সংক্রমিতের অর্ধেক হয়েছে পাঁচটি রাজ্যে। মহারাষ্ট্র, কর্ণাটক, তামিলনাড়ু, কেরালা ও উত্তর প্রদেশে। গত বৃহস্পতিবার যদিও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্তারা জানিয়েছিলেন, সংক্রমণের নতুন এলাকা হিসেবে করোনা বেছে নিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, বিহার, ওডিশা ও ঝাড়খন্ডকে। ঝাড়খন্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সরেন শুক্রবার বিরক্তের সঙ্গে সংবাদ সংস্থাকে বলেন, কোভিড পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করলেও নির্বিকার প্রধানমন্ত্রী শুধু নিজের কথাই বলে গেছেন। তাঁর কোনো কিছুতেই কর্ণপাত করেননি।