Thank you for trying Sticky AMP!!

যৌন কেলেঙ্কারিতে ফেঁসেছেন ভারতের প্রধান বিচারপতি?

ভারতের সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ

ভারতের সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ যাতে পদত্যাগ করেন, সে জন্যই তাঁর বিরুদ্ধে যৌন হেনস্তার সাজানো অভিযোগ আনা হয়েছে। সেই ষড়যন্ত্রে দেশের প্রভাবশালী কিছু ব্যক্তি জড়িত। উৎসব সিং বাইন্স নামের এক আইনজীবী এই গুরুতর অভিযোগ এনেছেন। গতকাল সোমবার সুপ্রিম কোর্টে এক হলফনামায় তিনি এই অভিযোগ করেন। আজ মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্ট ওই আইনজীবীকে নোটিশ পাঠিয়ে বলেছে, তিনি যেন তাঁর দাবির সমর্থনে প্রমাণ দাখিল করেন। উৎসবকে কাল বুধবার আদালতে প্রমাণসহ ব্যক্তিগতভাবে হাজিরা দিতে বলা হয়েছে।

সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি অরুণ মিশ্র, বিচারপতি আর এফ নরিম্যান ও বিচারপতি দীপক গুপ্ত এই নির্দেশ দিয়ে বলেন, বিচার বিভাগের স্বাধীনতাসংক্রান্ত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ জনস্বার্থ বিষয় এটা। মামলাটি ফেলে না রেখে বুধবার সকালেই তাই উৎসবকে প্রমাণসহ হাজির হতে বলা হয়েছে।

প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে সম্প্রতি এক নারী যৌন হেনস্তার অভিযোগ আনেন। ৩৫ বছর বয়সী ওই নারী সুপ্রিম কোর্টের এক সাবেক কর্মী। তিনি প্রধান বিচারপতির বাড়ির অফিসে জুনিয়র কোর্ট অ্যাসিস্ট্যান্ট ছিলেন। তাঁর অভিযোগ, ২০১৮ সালের অক্টোবর মাসে গগৈ তাঁকে যৌন হেনস্তা করেন। প্রতিবাদ করায় তাঁকে প্রথমে ওই অফিস থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়, পরে চাকরি থেকেও। এই অভিযোগ জানিয়ে ওই নারী সুপ্রিম কোর্টের ২২ জন বিচারপতির কাছে হলফনামা পেশ করেন।

এই অভিযোগ শোরগোল ফেলে দেয়। প্রধান বিচারপতি সঙ্গে সঙ্গেই সব অভিযোগ অস্বীকার করেন। বিচারপতি গগৈ বলেছেন, দেশের বিচার ব্যবস্থাকে পঙ্গু করে কাজ হাসিলের উদ্দেশ্যেই বড় কোনো শক্তি এই চক্রান্ত করেছে। সর্বোচ্চ আদালতের মোট ২৭ জন বিচারপতির সমর্থনই তিনি পেয়েছেন। তাঁর সমর্থনে ব্লগ লিখেছেন কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী অরুণ জেটলি। তিনি লিখেছেন, প্রাতিষ্ঠানিক স্থিতাবস্থা নষ্ট করাই এই ধরনের অভিযোগের উদ্দেশ্য। অভিযোগের শুনানির জন্য সুপ্রিম কোর্ট বিশেষ বেঞ্চ গঠন করেছেন। স্বয়ং প্রধান বিচারপতি রয়েছেন ওই বিশেষ বেঞ্চে। আর আছেন বিচারপতি অরুণ মিশ্র ও সঞ্জীব খান্না। অভিযোগের তদন্তে উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠনের দাবি জানিয়েছে নাগরিক সমাজ।

এই অবস্থাতেই চাঞ্চল্য ফেলে দিয়েছেন আইনজীবী উৎসব সিং বাইন্স। তাঁর দাবি, প্রধান বিচারপতিকে পদত্যাগ করাতেই এই অভিযোগ আনা হয়েছে। যৌন হেনস্তার মিথ্যা মামলা সাজাতে অজয় নামের এক ব্যক্তি তাঁকে দেড় কোটি টাকা দিতে চেয়েছিলেন। এই অভিযোগ জানাতে একটা সাংবাদিক বৈঠকের আয়োজন করার কথাও তাঁকে বলা হয়েছিল।
উৎসব ওখানেই থেমে থাকেননি। সুপ্রিম কোর্টে জমা দেওয়া নিজের হলফনামায় তাঁর দাবি, জেট এয়ারওয়েজের প্রতিষ্ঠাতা নরেশ গয়াল ও দাউদ ইব্রাহিমের মতো দাগি অপরাধীরা এই ষড়যন্ত্রের সঙ্গে যুক্ত। যুক্ত আছেন রমেশ শর্মা নামের এক ব্যক্তি, যিনি দাউদ ইব্রাহিমের লোক এবং ‘টাকার বিনিময়ে মামলার রায় প্রভাবিত’ করে থাকেন। তাঁর দাবি, জেট এয়ারওয়েজে দাউদের লগ্নি রয়েছে। এই বেসরকারি বিমান সংস্থাটি সম্প্রতি বন্ধ হয়ে গেছে।
উৎসব বাইন্স তাঁর হলফনামায় বেশ কিছু প্রমাণ থাকার কথা জানিয়েছেন। সেই সব প্রমাণ তাঁকে দাখিল করতে বলা হয়েছে। কর্পোরেট দুনিয়ার বড় বড় ব্যক্তি ও দাউদ ইব্রাহিমের মতো অপরাধীর নাম প্রকাশ করে দেওয়ায় উৎসব প্রাণহানির আশঙ্কা করছেন। হলফনামায় বলেছেন, তাঁকে হত্যা করা হতে পারে।