Thank you for trying Sticky AMP!!

সিবিআইয়ের জেরার আগেই ভাইপোর বাড়িতে মমতা

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

কলকাতা শহর আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে একের পর এক ঘটনার সাক্ষী থাকল। রাজনৈতিক নেতা, তাঁদের পরিবার, আদালত, রাজ্য পুলিশ থেকে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা—সবাই এই রাজনৈতিক নাটকের কুশীলব। আপাতদৃষ্টে একটি ঘটনার সঙ্গে অপর ঘটনার কোনো যোগ না থাকলেও সবই যে ২০২১-এর নির্বাচনের সঙ্গে এক তারে বাঁধা, তা নিয়ে সন্দেহ নেই।

প্রথমে বেলা ১১টা নাগাদ ভাইপো ও তৃণমূল কংগ্রেসের এমপি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দক্ষিণ কলকাতার বাড়ি শান্তিনিকেতনে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি মিনিট দশেক থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর সেখানে ঢোকেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সেন্ট্রাল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (সিবিআই) কর্মকর্তারা। তাঁরা প্রায় দেড় ঘণ্টা জেরা করেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রী রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়কে।

গতকাল সোমবার জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সিবিআইকে বাড়িতে আসার অনুমতি দিয়েছিলেন রুজিরা। বিদেশের অ্যাকাউন্টে বেআইনি টাকা রাখার অভিযোগে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সিবিআই অভিষেকের কলকাতার বাড়িতে যায়। তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের যাওয়া বা সিবিআইয়ের জেরা করা নিয়ে কেউই এদিন মুখ খোলেননি।

এ নিয়ে বিজেপির পশ্চিমবঙ্গের সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেছেন, নিশ্চয়ই কোনো গন্ডগোল আছে। তা না হলে সিবিআই যাওয়ার আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন যাবেন?
তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র কুনাল ঘোষ বলেছেন, অভিষেক সাহসিকতার সঙ্গে এই তদন্তের মোকাবিলা করছেন, কিন্তু বারবার তাঁকে আক্রমণ করা হচ্ছে। আইনি প্রক্রিয়ার বাইরে গিয়ে শুভেন্দু অধিকারী (যিনি গত ডিসেম্বরে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন) অভিষেককে ব্যক্তিগত আক্রমণ করছেন। অথচ মুকুল রায় (বিজেপির সর্বভারতীয় সহসভাপতি), শুভেন্দু—সবার নামে মামলা রয়েছে। তাঁরা ভয়ে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন, কিন্তু তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে না।

অন্যদিকে বিজেপি নেত্রী পামেলা গোস্বামীর কোকেন মামলার তদন্ত এগিয়ে চলেছে। গ্রেপ্তার হওয়ার পর গোস্বামী বলেছিলেন, তাঁকে ষড়যন্ত্র করে ফাঁসিয়েছেন সর্বভারতীয় বিজেপি নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়র ঘনিষ্ঠ আরেক বিজেপি নেতা রাকেশ সিং। আজ বিকেল চারটার মধ্যে মধ্য কলকাতায় কলকাতা পুলিশের সদর দপ্তর লালবাজারে রাকেশ সিংকে হাজিরা দিতে বলে রাজ্য সরকারের অধীন থাকা কলকাতা পুলিশ।
পুলিশের নির্দেশ চ্যালেঞ্জ করে স্থগিতাদেশ চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টে যান রাকেশ সিং।

হাইকোর্ট আবেদনটি খারিজ করে দেন। এরপর আজ বিকেলে পুলিশ বাহিনী রাকেশ সিংয়ের পশ্চিম কলকাতার বাড়িতে যায় তল্লাশি করতে। প্রথমে বাড়ির লোক পুলিশকে ঢুকতে না দিলেও পরে দেন। পুলিশ জানায়, বাড়িতে রাকেশ সিং বা অন্য কোনো বেআইনি জিনিসপত্র আছে কি না, তা দেখতেই তারা গিয়েছিল। রাকেশ সিং অবশ্য বাড়িতে ছিলেন না। এই তল্লাশি প্রসঙ্গে বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, বিষয়টিকে একটি বড়সড় নাটকে পরিণত করেছে তৃণমূল কংগ্রেস।

এর পাশাপাশি কলকাতার সাবেক পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারকে জেরা করার অনুমতি চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের কাছে আবেদন করে সিবিআই। আর্থিক কেলেঙ্কারিসংক্রান্ত মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য এ অনুমতি চায় সিবিআই। বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের অফিসার রাজীব কুমারকে ২০১৯-এ জেরা করেছিল কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা।

তবে সুপ্রিম কোর্ট আজ রাজীব কুমারকে জেরা করার অনুমতি দেননি। কিছু তথ্য ও নথি জটিলতার কারণে এ বিষয়ে শুনানি দুই সপ্তাহ পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। এই পরিস্থিতিতে কাল বুধবার হুগলি যাচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গত সোমবার যেখানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী সভা করেছিলেন, ঠিক সেখানেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জনসভা করবেন বলে জানা গেছে।