Thank you for trying Sticky AMP!!

হামলা এবার বিশ্বভারতীতে

বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদ্যাভবন ছাত্র হোস্টেলে বামপন্থী ছাত্রসংগঠন এসএফআইয়ের নেতা-কর্মীদের ওপর বিজেপির ছাত্রসংগঠন এবিভিপি হামলা চালায় বলে অভিযোগ উঠেছে। ছবি: টুইটার

রাজধানী দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের (জেএনইউ) ছায়া পড়ল এবার পশ্চিমবঙ্গের কবিগুরুর স্মৃতিবাহী শান্তিনিকেতনের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে। গত বুধবার গভীর রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদ্যাভবন ছাত্র হোস্টেলে বামপন্থী ছাত্রসংগঠন এসএফআইয়ের নেতা-কর্মীদের ওপর বিজেপির ছাত্রসংগঠন এবিভিপি হামলা চালায় বলে অভিযোগ উঠেছে। বুধবার রাত থেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে এই মারধরের ছবি ও ভিডিও। এ ঘটনায় ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন বিশ্বভারতীর শিক্ষার্থীরা। যদিও এবিভিপি দাবি করেছে, তারা এই হামলার সঙ্গে যুক্ত নয়, হামলার সঙ্গে যুক্ত তৃণমূল ছাত্র পরিষদ।

বিজেপির ছাত্রসংগঠন অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ বা এবিভিপির নেতারা হামলা করেছেন বলে অভিযোগ করে সিপিএমের ছাত্রসংগঠন এসএফআই বলেছে, বুধবার রাতে রাস্তা এবং হোস্টেলে তাদের সমর্থকদের ওপর রড, বাঁশ, লাঠি, হকিস্টিক নিয়ে হামলা চালানো হয়। এতে গুরুতর আহত হন অর্থনীতি বিভাগের ছাত্র ও এসএফআইয়ের কর্মী স্বপ্ননীল মুখোপাধ্যায়, শুভ নাথ ও ফাল্গুনী। তাঁদের বিশ্বভারতীর পিয়ারসন হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানে গিয়েও হামলাকারীরা হামলা চালায়। এ সময় হাসপাতালের নিরাপত্তাকর্মীরা এগিয়ে এসে হাসপাতালের গেট বন্ধ করে ওই হামলা প্রতিরোধ করেন।

এসএফআই হামলার সঙ্গে যুক্ত গেরুয়া শিবিরের তিন নেতার নামও বলেছে। তাঁরা হলেন অচিন্ত্য বাগদি, সাবির আলি ও সুলভ কর্মকার। শান্তিনিকেতন থানার পুলিশ অচিন্ত্য বাগদি এবং সাবির আলিকে ইতিমধ্যে গ্রেপ্তার করেছে।

বিশ্বভারতীর সাধারণ শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছেন, হামলাকারীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচিত মুখ এবং উপাচার্যের কাছের মানুষ। তাঁরা একসময় তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সঙ্গে যুক্ত থাকলেও এখন তাঁরা এবিভিপিতে যোগ দিয়েছেন।

এদিকে গোটা ঘটনার কথা অস্বীকার করেছে এবিভিপি। দলের নেতা সুবীর হালদার বলেন, ‘এটা বামপন্থীদের একটা কালচার। ওরা নিজেরাই মারধর করে অন্যদের ওপর দায় চাপায়। তৃণমূল এবং বামপন্থীদের মধ্যে ঝামেলা হয়েছে। কিন্তু দায় চাপানো হয়েছে বিদ্যার্থী পরিষদের ওপর। দায় চাপানো অনেক সহজ, কিন্তু প্রমাণ করা কঠিন। বামপন্থীরা যে কাজ করতে চাইছে, তাতে তারা সফল হতে পারবে না।’

>

ছাত্র হোস্টেলে হামলা। এবিভিপির হাতে মার খেলেন এসএফআইয়ের তিন কর্মী। হামলার কথা অস্বীকার এবিভিপির।

বিশ্বভারতীতে বেশ কিছুদিন ধরেই নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বিরুদ্ধে দফায় দফায় বিক্ষোভ মিছিল হয়। সেই আবহেই বিজেপির সাংসদ স্বপন দাশগুপ্ত বিশ্বভারতীতে নাগরিকত্ব আইন নিয়ে একটি আলোচনা সভায় যোগ দিতে গেলে তাঁকে ক্যাম্পাসেই ঘেরাও করে রেখে বিক্ষোভ দেখায় এসএফআই। সেই ঘটনারই ‘পাল্টা’ এই আক্রমণ, এমনটা মনে করছেন অনেকে।

বুধবারের হামলার পর বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান গেটের সামনে গতকাল দুপুরে এক প্রতিবাদ সমাবেশ করেন। প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে অবিলম্বে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পদত্যাগের দাবি করা হয়।

প্রসঙ্গত, ৫ জানুয়ারি দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবাসে বিজেপির ছাত্রসংগঠন এবিভিপির সমর্থকেরা মুখোশ পরে ছাত্রছাত্রী এবং শিক্ষকদের ওপর হামলা চালান। সেই হামলায় অনেক ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষক আহতও হন। তাঁদের মধ্যে ছিলেন জেএনইউর ছাত্রসংসদের সভাপতি ঐশী ঘোষ।

বিজেপির রাজ্য সভাপতি হলেন দিলীপ ঘোষ

দ্বিতীয়বারের জন্য পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিজেপির সভাপতি হলেন দিলীপ ঘোষ। সভাপতি পদে একজনই মনোনয়নপত্র জমা দেন। বুধবার রাতেই নিশ্চিত হয়ে যায় দিলীপ ঘোষই ফের রাজ্য সভাপতি হচ্ছেন। পরে গতকাল কলকাতার কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার মিলনায়তনে আয়োজিত এক সভায় ঘোষণা করা হয় বিজেপির নতুন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের নাম।